'দেব-এর গায়ে বমি করে দিল পাইথনটা'


বিনোদন ডেস্ক: একটা চাপ কাটতে না কাটতেই তো আরেকটা চাপ চলে এল!

কমলেশ্বর : এটা কেন বলছেন?
বিনোদন ডেস্ক : 'চাঁদের পাহাড়' শুটিং করে ফিরলেন আর এদিকে 'মেঘে ঢাকা
তারা' মুক্তির প্রস্তুতি শুরু

কমলেশ্বর : তা ঠিক। তবে আফ্রিকায় বিশাল
অংশ শুটিং হয়ে গিয়েছে, এমনটা নয়। ওখানে শীতকাল পড়ে গিয়েছে, বেলা ছোট। তাই আমরা প্রথম পর্বের শুটিং গুটিয়ে চলে


এলাম। অগাস্ট-সেপ্টেম্বর নাগাদ ওখানে বসন্তকাল পাব আশা করছি, তখন আমরা টিম নিয়ে আবার যাব।
বিনোদন ডেস্ক : এই প্রথম পর্যায়ে কেমন শুটিং হল?

কমলেশ্বর : ভালই। রেকি করার সময় ভাগ্যিস শুটিং স্পট বাছাই করে এসেছিলাম মাসখানেক আগেই, নাহলে কী হত কে জানে! একটাই ঠিকঠাক হোটেল। সেখান থেকে দেড়শো কিলোমিটার ড্রাইভ করে যেতে হত। আমরা সঙ্গে রাখতাম প্রচুর খাবার আর পানীয়। শুটিংয়ের শুরুতেই তিরিশ-পঁয়ত্রিশ ফুট নিচে নামতে হত লটবহর নিয়ে। দেব-সহ ভারী ক্যামেরা এবং প্রত্যেক ইউনিট-মেম্বার নিয়ে নামতাম আমরা। ফের প্যাক আপ-এর আবার দড়ি বেয়ে ওপরে ওঠা।
বিনোদন ডেস্ক : কোথায় কোথায় শুটিং করলেন?

কমলেশ্বর : ১৭দিন ছিলাম আমরা। দিন-রাতের আবহাওয়ার মারাত্মক পার্থক্য। মূলত, সাডওয়ালা কেভস, কালাহারি, পট লাক, ব্লাইড রিভার, পুমালাঙ্গা, সারাগোসা -- এরকম বিভিন্ন জায়গায় শুটিং করেছি। আফ্রিকা একই সঙ্গে ভয়ংকর এবং সুন্দর।
বিনোদন ডেস্ক : ভয়ংকর কী ঘটল?

কমলেশ্বর : ব্লাইড রিভার ক্যানিয়ন- শুটিং করার সময় আমরা 'জন ছিলাম র্যাফট-এ। এমনি সব ঠিকই ছিল। হঠাৎ দেখা গেল, জলে বুদবুদ উঠছে। কিছুক্ষণ পরেই বোঝা গেল, জলে থিকথিক করছে কুমির একটা যদি ধাক্কা মারত, কী হত জানি না। একদিন আমরা জঙ্গলে রাস্তাও হারিয়ে ফেলেছি। আর পাইথনের সঙ্গে স্পটটাও মনে রাখার মতো! দেব প্রথমে একটু ভয় পাচ্ছিল। সেটা দেখে আমিই প্রথমে গলায় নিলাম পাইথনটাকে। তারপর দেব। পাইথন একটুক্ষণ দেবের গলায় থাকার পরই বমি করে ফ্যালে। দেখা গেল দেব-এর গায়ে পড়ল আস্ত ইঁদুর!
বিনোদন ডেস্ক: কী কাণ্ড! শুনছিলাম দেব নাকি পড়ে গিয়েছিলেন?

কমলেশ্বর : সবাই পড়ে গিয়েছিল কখনও না কখনও। দেব ঘোড়ায় চড়তে গিয়ে পড়েছিল। হঠাৎই বেগড়বাঁই করে ঘোড়াটা।

বিনোদন ডেস্ক : ফিরে আসি 'মেঘে ঢাকা তারা' কথায়। হাইপ তৈরি হয়েছে বেশ। সেটা বাড়তি প্রেশার নয়?

কমলেশ্বর : ঋত্বিক ঘটকের মতো শিল্পীর জীবন নিয়ে ছবি করা মানেই ভারী কাজে হাত দেওয়া। হাইপের জন্য আলাদা করে কিছু মনে হচ্ছে না, অন্তত এখনও। লোকজনের আগ্রহ তৈরি হওয়া তো ভাল। ছবির ট্রেলার প্রকাশ হওয়ার পরে আড়াই দিনে তিরিশ হাজার 'হিট' পড়ে। অর্থাৎ কৌতূহল জেগেছে।

বিনোদন ডেস্ক : ১৪ জুন ছবি রিলিজ। কোন সময়কালটা ধরেছেন?

কমলেশ্বর : ছবিটা ঋত্বিক ঘটকের বায়োপিক হলেও, সাধারণত আমরা যেমন বায়োপিক দেখি তেমন নয়। লিনিয়ার নয় ধরনটা, ফ্ল্যাশব্যাক-ফ্ল্যাশ ফরোয়ার্ড-এর মাধ্যমে 'নীলকণ্ঠ বাগচি' থটস্পেসকে ধরেছি। তাঁর জীবন, তাঁর কাজ, ভাবনার জগতের দিকে আলো ফেলার চেষ্টা করেছি।

বিনোদন ডেস্ক : ঋত্বিক-এর প্রথাবিরোধী মনোভাব, পাগলামি কতটা আছে ছবিতে?

কমলেশ্বর : ছবির প্রেজেন্ট টাইম ১৯৬৯, মেন্টাল হসপিটালে নীলকণ্ঠকে দেখি আমরা। ডাক্তার, স্ত্রী (সুরমা ঘটকের চরিত্রে অনন্যা এখানে 'দুর্গা'), বোনের সঙ্গে ওঁর কথোপকথন, বা অন্য পেশেন্টদের সঙ্গে কথাবার্তা এসবের মধ্য দিয়ে একটু একটু করে মানুষটা ধরতে পারি আমরা। ডাক্তারের চরিত্রে আবির।

বিনোদন ডেস্ক : নিরন্তর ব্যথার যে জার্নি সেটা ছবিতে আনা কতটা শক্ত ছিল?

কমলেশ্বর : শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় আর অনন্যার মতো অ্যাক্টরদের পাওয়ায় আমার সুবিধে হয়েছে অনেক। দে আর ব্রিলিয়ান্ট। অনেক সিন করতে গিয়ে আমিই না কেঁদে পারিনি!

বিনোদন ডেস্ক : জীবদ্দশায় যিনি যথাযোগ্য স্বীকৃতি পাননি... ট্র্যাজেডি জড়িয়ে জীবনের পাকে পাকে, তাঁকে নিয়ে ছবি করায় মেলোড্রামা এড়ানো শক্ত ছিল না?

কমলেশ্বর : ঋত্বিক ঘটক প্রচণ্ড অপটিমিস্টিক ছিলেন। কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতিতেই তাঁকে দমিয়ে রাখা যেত না। মনে হয় না, এই ট্র্যাজেডির কথা উনি মানতেন। আর জীবন যে রকম ছবিতে সেটাই আছে। মেলোড্রামা এড়াতে হবে, বা মেলোড্রামা মানেই খারাপ -- এভাবে ভাবি না। থিয়েটারে তো উচ্চ-গ্রামের ড্রামা থাকে, সেটা অস্বাভাবিক নয়। ঋত্বিক ঘটক থিয়েটারের ব্যাকগ্রাউন্ড থেকেই এসেছিলেন। 'মেঘে ঢাকা তারা' ছবিতে সেই মেজাজটা আছে। ড্রামা ওঁর নিজস্ব কন্টেন্টের অংশ। ঋত্বিক নিজেই বলেছেন একসময় -- 'মেলোড্রামা ইজ মাই বার্থ রাইট'

বিনোদন ডেস্ক : কতটা আশাবাদী ছবি নিয়ে?

কমলেশ্বর : ঋত্বিক ঘটককে নিয়ে মানুষ এখনও জানতে চায়, এটুকু বলব-সংগৃহীত পোষ্ট


,
Powered by Blogger.