আলোচনায় ডিসি ডিবি মোল্লা নজরুল

আলোচনায় এখন ডিসি ডিবি মোল্লা নজরুল ইসলাম। পুলিশ বিভাগ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে তিনিই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। অনেকেই বলেছেন, প্রভাবশালী এই পুলিশ কর্মকর্তা এবার হয়তো ফেঁসে যাচ্ছেন। অর্থ আদায়ে তার অভিনব কৌশলের বিষয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে
প্রকাশিত হওয়ার পরে অনেকেই হতবাক হয়েছেন। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এই বিষয়টি নিয়ে অনেকটাই হতভম্ব। কিভাবে একজন এসপি পদমর্যাদার কর্মকর্তা এতটা নিচে নামতে পারেন তা নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মোল্লা নজরুলের আরো অনেক কুকীর্তির কথা আস্তে আস্তে বের হতে শুরু করেছে। এর আগে লিবিয় নাগরিক এবং এক মডেল কন্যাকে গ্রেফতার নিয়েও রয়েছে নানা মুখরোচক কাহিনী।
সূত্র জানায়, কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠার পরে ওইসব ঘটনাও এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শীর্ষ একটি গোয়েন্দা সংস্থাও মোল্লা নজরুলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আবিদুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ীকে আটক করে তার কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ডিসি ডিবি মোল্লা নজরুলের বিরুদ্ধে। নড়াইল থেকে নির্বাচিত সরকারদলীয় সংসদ সদস্য কবিরুল হক এই অভিযোগ করেছেন। এই টাকা হাতিয়ে নেয়ার কাজে মোল্লা নজরুল ব্যবহার করেছেন এসআই হাসনাত নামে আরেক ডিবি কর্মকর্তাকে।
অভিযোগ করা হয়েছে গত ৬ এপ্রিল রাত ৩টায় ডিবির একটি দল আবিদুলের গুলশানের বাসায় প্রবেশ করে তার কাছে এসআই হাসনাত জানতে চান ১০ কোটি টাকার কালো ব্যাগটি কোথায়। হাসনাত জানায়, ডিসি ডিবি মোল্লা নজরুল তাকে অভিযানে পাঠিয়েছেন। তাকে ভয় দেখানো হয় টাকা না দিলে তাকে হিজবুত তাহরীর সাজিয়ে ক্রসফায়ার দেয়া হবে। পরে তাকে ডিবি অফিসে নিয়ে নির্যাতন করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। এমপি কবিরুল নিজে ফোন করে ডিসি ডিবি মোল্লা নজরুলকে অনুরোধ করেন ব্যবসায়ী আবিদুলকে হয়রানি না করার জন্য। কিন্তু তার কথাও শোনেননি এই পুলিশ কর্মকর্তা।
এ বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এবং টিভি চ্যানেলে ইতোমধ্যেই খবর প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে। মোল্লা নজরুলের বিরুদ্ধে খবর প্রকাশিত হলে বিষয়টি নিয়ে শুধু পুলিশ বিভাগেই নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। প্রভাবশালী এই পুলিশ কর্মকর্তা শুধু সাধারণ মানুষের কাছেই নন, খোদ পুলিশ বিভাগেও আতঙ্কের নাম।
বিভিন্ন সময় তার হাতে অসংখ্য রাজনৈতিক নেতা নিগৃহীত হয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। ভুক্তভোগী ওই মানুষ লিখিতভাবে কোথাও অভিযোগ করারও সাহস পাননি। অভিযোগ উঠেছে এই মোল্লা নজরুল অনেকের কাছ থেকেই এভাবে অর্থকড়ি হাতিয়ে নিয়েছেন। কিছুদিন আগে গুলশানের একটি হোটেল থেকে কয়েকজন লিবিয় নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়। সাথে বাংলাদেশী এক মডেল কন্যা প্রিয়ংকাকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। লিবিয় নাগরিকদের কক্ষ তল্লাশি করে বিপুল ডলার উদ্ধার করা হয়েছিল বলে জানা গেছে। কিন্তু যে পরিমাণ ডলার উদ্ধার করা হয়েছিল তার সব জমা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে গুলশান থানায় ৩৭টি রিক্রুটিং এজেন্সির নাম উল্লেখ করার এক দিন পরে তা ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়। তখন বেশ কিছু রিক্রুটিং এজেন্সির মালিককে ডেকে নিয়ে তাদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়া হয় বলে অভিযোগ আছে। মানবপাচার আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার ভয় দেখিয়ে এই অর্থ হাতিয়ে নেয়া হয় বলে অভিযোগ আছে। এ ছাড়া মডেল কন্যাকে ঘিরেও রয়েছে নানা মুখরোচক কাহিনী।
জানা গেছে, ইতোমধ্যেই মোল্লা নজরুলের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী আবিদুলের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে। আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার পুলিশ কমিশনারকে এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। একটি সূত্র বলেছে, একটি গোয়েন্দা সংস্থাও ডিসি ডিবি মোল্লা নজরুলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।
source: হ্যালো-টুডে

,
Powered by Blogger.