ঢাকায় সমকামীরা সঙ্গী খুঁজতে আশ্রয় নিচ্ছে ওয়েবসাইট-এর
ঢাকায় সমকামীরা সঙ্গী খুঁজতে আশ্রয় নিচ্ছে ওয়েবসাইট-এর। নিজস্ব
ওয়েবসাইটে তারা ছবি, নাম, ঠিকানা, পেশা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, ফিগারের ধরন
উল্লেখ করে বিজ্ঞাপনও প্রচার করছে। ওই বিজ্ঞাপন থেকে সমকামীরা পছন্দমতো
বেছে নিচ্ছে সঙ্গী। কেউ কেউ একাধিক সঙ্গী খুঁজে নিচ্ছে। পাশাপাশি সমকামীরা
দল ভারি করার জন্য গড়ে তুলেছে এসোসিয়েশন, ওয়েবসাইট ও ম্যাচমেকার
প্রতিষ্ঠান
। ম্যাচমেকার প্রতিষ্ঠান সমকামীদের সঙ্গী খুঁজে দেয়ারও কাজ করছে। এই ধরনের অসংখ্য সাইট গড়ে উঠেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সমকামীদের বেশির ভাগের বয়স ১৮ থেকে ২৫-এর মধ্যে। পেশায় বেশির ভাগই ছাত্রছাত্রী। পাশাপাশি এয়ারলাইন্সের কর্মী, কম্পিউটার রিলেটেড পেশার সমকামীও রয়েছে। নেটে সমকামী নারী ও পুরুষ তাদের নাম, বয়স, পেশা, ই-মেইলের ঠিকানা ছাড়াও রয়েছে তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ও নানা ভঙ্গির ছবি। তিনি কি চান, কেমন সঙ্গী চান তা-ও বলা আছে। ঢাকায় আগের চেয়ে সমকামীদের মত প্রকাশের সংখ্যা বাড়ছে। আগে সমকামীরা অনেকটা গোপনেই তাদের চাহিদা পূরণ করতো। নিজেদের গণ্ডির মধেই সঙ্গী খুঁজতো। এতে তাদের অনেকটা বেগ পেতে হতো। এখন তারা অনেকটাই উদার। নিজের ছবি দিয়েও সঙ্গী চাইছেন। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সমকামীরা এক সঙ্গে বসে আড্ডা দিচ্ছে। ভেতরে ভেতরে তাদের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ইংল্যান্ডে সমকামিতাকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। তারাও মনে করে এই দেশে সমকামীরা বৈধতা পাবে। তার পছন্দের সঙ্গীকে নিয়ে সারাজীবন পার করে দেবে।
ইন্টারনেটে ঢাকা লেসবিয়ান নামের একটি সাইটে সিমি তামান্না নামের একজন তার পরিচয় দিয়ে বলেছেন, হাই লেসবিয়ান সেক্সি হট গার্ল। অনলি ফর গার্লস নো মেল এলাউড। তিলোরা নামে আরেকজন লিখেছেন, আই অ্যাম উওম্যান। এইটিন ইয়ারস ওল্ড। সিকিং এ উওম্যান ফ্রম টুয়েন্টি টু ফোরটি ইয়ারস ওল্ড। আর একজন লিখেছেন তার বয়স ১৮। তিনি খুঁজেছেন ১৮ থেকে ৯৯ বছরের কোন নারী সঙ্গীকে। ঢাকা গার্লস সাইটে অরুণা নামের একজন লিখেছেন আই অ্যাম হট গার্ল। আই অ্যাম লুকিং ফর এ হট গার্ল ফর মাই লাভলি রিলেশন। আর একজন লিখেছেন, আই ওয়ান্ট টু মিট লেসবিয়ান। আই অ্যাম আন ইউএসএ এডুকেটেড ডিসেন্ট পারসন। উড ইউ লাইক টু এক্সপ্লেন লেসবিয়ান উইথ কাপল অব মোর গার্লস। ফর ফান। অ্যান্ড নো কমপ্লিকেশন বাট পিওর ফান। সাম হক নামের এক ছাত্রী নারী সঙ্গী খুঁজছেন। বায়না নামের এক এয়ারলাইন্স কর্মী তার বয়স ২০ উল্লেখ করে দাবি করেছেন তিনি স্লিম ফিগারের অধিকারী। তিনিও নারী সঙ্গী খুঁজছেন। দেখা গেছে, কোন কোন সমকামী নারী আবার নিজের পেশা বলতে চান না। তারা দু’-একজন ছাড়া সবাই লিখেছেন তাদের ফিগার এভারেজ। কেউ কেউ লিখেছেন স্লিম। কেউ কেউ নিজের চাহিদার কথা ও ই-মেইল ঠিকানার পাশাপাশি ছবি দিয়েছেন। কেউ কেউ সব দিলেও নিজের ছবি দেননি। আবার এমনও দেখা গেছে মেয়েদের সাইটে ছেলেরাও ছবি ও প্রোফাইল সেট করেছেন। ঢাকা গে অ্যান্ড ঢাকা গে পারসন নামের সাইটে রয়েছে অসংখ্য সমকামীদের ছবি। এছাড়াও ঢাকা লেসবিয়ান পারসোনাল সাইট ফর ইওর লোকাল এরিয়া নামের সাইটে সমকামীদের ছবি ছাড়াও রয়েছে তাদের সম্পর্কে নানা তথ্য। ঢাকা লেসবিয়ান ইন বাংলাদেশ নামেরও সাইট রয়েছে। এসব সাইটে সমকামীদের অসংখ্য ছবি, নাম, ঠিকানাসহ তথ্য রয়েছে। এছাড়াও অন লাইনে সমকামীদের সঙ্গে ডেটিং করার সুযোগ ও সমকামীদের খুঁজে দেয়ার জন্য পারসোনাল ম্যাচমেকারের ওয়েবসাইট রয়েছে। গে ম্যাচমেকার ডট কম নামেও রয়েছে ওয়েবসাইট। সেখানে গে পারসন বাংলাদেশ ঢাকাতে রয়েছে বাংলাদেশী সমকামীদের ছবি। সমকামী নারীদের ছবিও রয়েছে। এছাড়া রয়েছে ঢাকা ব্যাড বয় ইন বাংলাদেশ নামের ওয়েবসাইট লেস। ঢাকা হোমোসেক্সুুয়ালস ইন বাংলাদেশ, ঢাকা গে পারসন নামেও রয়েছে নানা ওয়েবসাইট। নারী সমকামীদের পাশাপাশি পুরষ সমকামীরাও তাদের ছবি, নাম, পরিচয় ও ই-মেল ঠিকানা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা ও তার ফিগারের ধরন উল্লেখ করে বিভিন্ন পোজের ছবি দিয়েছেন। অফার করছেন তার সঙ্গী হওয়ার। তিনি যেন তার সঙ্গী পান সে জন্য আকৃষ্ট করার মতো কথাও লিখেছেন। এজন্য অফার করছেআমাকে পছন্দ হলে আজই মেইল করো। ডেট করো। আজই দেখা হবে। ঢাকা হোমো সেক্সুয়াল ইন বাংলাদেশ ওয়েবসাইটে ইমন নামের একজন লিখেছেন, আই লাইক এ গুড রিলেশনস। এভরিবডি লাইক মি। সাম ইন্টারেস্টিং স্টোরি মাই লাইফ। সো ইফ এনি বডি ইন্টারেস্টিং অ্যাবাউট দিস প্লিজ আক্সড মি। রানা মুজিব নামে ২৫ বছর বয়সের কম্পিউটার রিলেটেড পেশার সঙ্গে জড়িত একজন লিখেছেন, লাইফ ইন হট ফর এভার। আই লাইক টু মেক ফ্রেন্ডশিপ উইথ এ স্মার্ট বয়। ঢাকা গে পারসন এ নাইস এ্যাঞ্জেল নামের ২৫ বছরের একজন লিখেছেন, আই উড লাইক টু লাভ অ্যান্ড হেভি ফান। প্লিজ কাম অন। ঢাকা ব্যাড বয় ইন বাংলাদেশ নামের একটি সাইটে একজন লিখেছেন, ফিল লোনলি। আই অ্যাম অলওয়েজ লোনলি। প্লিজ এসকেপ মি ফ্রম হেয়ার ইন বাংলাদেশ। মেইল মি।
সংগ্রাম নামের ২২ বছরের একজন তার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য দু’টি ফোন নম্বর দিয়েছেন। লিখেছেন, আই অ্যাম এ সিঙ্গল গাই। লুকিং ফর এ সিরিয়াস রিলেশনশিপ। আই অ্যাম ইন সার্চ অব মাই লাইফ পার্টনার। ইটস ইজি টু গেট। সাম ওয়ান ইন ইউর বেড। বাট ইটস রিয়েল হার্ড টু গেট। ইন্টারনেটে যারা সঙ্গী হওয়ার অফার করছেন তারা কেবল দেশী সঙ্গী চান না। বিদেশী হলেও তাদের আপত্তি নেই এমন কথা রয়েছে। অনেকেই ভুল ইংরেজি লিখেই তার সঙ্গী খুঁজছেন।
এছাড়াও মিট হট ঢাকা লেসবিয়ান সাইটেও নানা রকম অফার দিয়েছেন। তারা সমকামীদের সঙ্গী খুঁজে দেয়। ম্যাচমেকারের ওই সাইটে বলা হয়েছেআমাদের সাইটে হাজারের বেশি লেসবিয়ান, গে, (কোয়ারিজম), উওম্যান, বাই সেক্সুয়াল অ্যান্ড ট্রান্স সেক্সুয়াল মেম্বার, হোমো সেক্সুয়াল সদস্য আছে। লুকিং ফর এ সেইম সেক্স রিলেশন শিপ। আজই প্রোফাইল খুলন। সেক্সি বাংলা গার্ল লেসবিয়ান নামে ভিডিও চিত্র দিয়ে আকর্ষণ করার চেষ্টা করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ইন্টারনেটে সমকামীদের জমজমাট ও সঙ্গী খোঁজার আকর্ষণীয় সব অফার থেকে অনেকেই তাদের বন্ধু খুঁজে নিচ্ছেন। তারা যে যাকে পছন্দ করেন এরপর তাদের মধ্যে যোগাযোগ হয়। যোগাযোগের সূত্র ধরেই আস্তে আস্তে ফোন নম্বর বিনিময়, পরে দেখা করা। এরপর তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ইন্টারনেট ছাড়াও সমাজের বিভিন্ন স্তরে রয়েছে সমকামীরা। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবাসিক হোটেল, ডরমিটরি, মেস, জেলখানায়ও রয়েছে সমকামী। সূত্র জানায়, এমন অনেক আবাসিক ছাত্র হল আছে যেখানে টিভি দেখতে দেয়া হয় না। একটি পেপার পড়তে দেয়া হয় না। তারা লেখাপড়া করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না। এমনকি খেলাধুলাও করতে পারে না। ওই সব আবাসিক হোস্টেলে অনেকেই কোন কাজ না থাকায় তাদের জৈবিক চাহিদা পূরণের জন্য সম্পর্ক করে। সূত্র জানায়, শারীরিক ভাবেই সমকামীরা সমলিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে। আর ওই আকর্ষণ থেকেই তারা সম্পর্ক গড়ে। সামাজিকভাবে বাংলাদেশে সমকামিতা নিষিদ্ধ। আইনেও এর বৈধতা নেই। ধর্মেও নিষেধ করা আছে। সমকামীদের সমাজে কেউ দেখতে পারে না। এ কারণে তাদের জৈবিক চাহিদাকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিবৃত্ত করে রাখতে হতো। গত আট-দশ বছরে ঢাকায় তা আস্তে আস্তে প্রকাশ করার সুযোগ বাড়তে থাকে। আগে যারা সমকামী ছিল তারা তাদের গণ্ডির মধ্যেই খুঁজতো মনের মতো সঙ্গী। এখন আর তাদের সেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না। তারা একাধিক সঙ্গী খুঁজে নিতে পারছে। সমকামীরা অত্যন্ত গোপনেই সম্পর্কগুলো বজায় রাখে। এ কারণে তাদেরকে সহজে চেনা সম্ভব হয় না। নারী সমকামীদের বেলায় দেখা যায় তারা এক সময়ে সমকামিতায় অভ্যস্ত হলে পরে পরিবারের চাপে একজন পুরম্নষকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়। কিন্তু ওই পুরম্নষ সঙ্গী তাকে বিন্দুমাত্র আকর্ষণ করে না। তারপরও সে ওই সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটায়। সারাজীবনই তার জৈবিক চাহিদা পূরণে বঞ্চিত হয়। সূত্র জানায়, সমকামীরা একসঙ্গে সব সময় থাকতে পারে না। ঢাকায় এখন সমকামীদের জন্য কিছুটা সুবিধা হয়েছে। তারা সহজেই বাসা ভাড়া নিতে পারছে। তারা পরিচয় দিচ্ছে বন্ধু কিংবা ভাই হিসেবে। মেয়েরা পরিচয় দিচ্ছে বান্ধবী কিংবা বোন হিসেবে। তারা হোস্টেলে থাকবে না বলেই একটু ভাল পরিবেশে থাকতে চায়। এ কারণে বাড়ি ভাড়া নিচ্ছে। বাড়িওয়ালাও তাদের ভাই বন্ধু কিংবা বান্ধবী ও বোন পরিচয় দেয়ার বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখে বাড়ি ভাড়া দিচ্ছে। তাদের অনেকেই যে সমকামী এটা বোঝা সম্ভব হয় না। বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হোস্টেলেও রয়েছে সমকামী। কিন্তু তারা ধরা পড়লে তাদের হল থেকে বের করে দেয়া হয়। কয়েক বছর আগে এক বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রী সমকামী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ধরা পড়ে। পরে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে তাকে হল ত্যাগে বাধ্য করা হয়। ওই নারী এরপর আর কখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়নি। সূত্র জানায়, ওই মেয়েটি পরবর্তী সময়ে একাকী জীবন যাপন করতে শুরু করেছিল। সমকামিতার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন, সমকামিতা অনেক জায়গাই আছে কিন্তু সেটা প্রকাশ হচ্ছে কম। আমি জানি তারা ঢাকায় এসোসিয়েশনও গড়ে তুলেছে। তারা সেখানে মাঝে মাঝেই মিলিত হয়। তারা তাদের দল ভারি করার জন্য তাদের সঙ্গী বাড়ানোর জন্য চিঠি দিচ্ছে। আমিও একটি চিঠি পেয়েছিলাম। আমাকে ডাকা হয়েছিল বৈঠকে। আমি যাইনি। মনে হয় না গিয়ে ভুল করেছি। মিস করেছি। তিনি বলেন, সমকামিতার আইনগত বৈধতা নেই। ধর্মও সমর্থন করে না। তারপরও বোঝা যায় এটা প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে এসেছে। এ জন্য সূরা লুতে সমকামিতার ভয়াবহতা সম্পর্কেও বলা হয়েছে। ওই সময়ে সমকামিতা ছিল বলেই তো ওই কথাটি সূরাতে এসেছে। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ কোয়ারিজম এসোসিয়েশন নামে সমকামীদের একটি এসোসিয়েশনও রয়েছে। ২০০৫ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। তারা ভেতরে ভেতরে সমকামীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তাদের অধিকার আধায়ের চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে সমকামীদের নানা সমস্যা ও তাদের অধিকার আদায়সহ তাদের নানা রকম সহযোগিতা করা ও সমকামীদের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করছে বয়েস অনলি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ফর গে, সিখায়েনি ও বাঁধন হিজড়া সংঘ নামের সংগঠনগুলো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ-যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, সমকামিতা আমাদের সমাজে আছে। বিভিন্ন স্তরে বিদ্যমান। সব সময় দেখা যায় না। অনেকেই তার সম লিঙ্গের সঙ্গে জৈবিক চাহিদা পূরণ করছে। আবার সামাজিক বাধ্যবাধকতার কারণে বিয়ে করছে। তবে সুখী হতে পারছে না। নানা ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবাসিক হলগুলোতে কিছু কিছু সমকামী রয়েছে। তিনি বলেন, সমকামীরা এখন এক হওয়ার চেষ্টা করছে। তারা তাদের অধিকার পেতে চায়। সমকামী নারী কিংবা পুরম্নষ যার কথাই বলি না কেন তাদের শারীরিক বৈশিষ্ট্যটাই এরকম যে তারা তাদের সম লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে। তিনি বলেন, সমকামীদের সমাজে নানা কষ্টের মধ্য দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে। তা ওপেনলি তাদের কথা সবাইকে বলতে পারে না। তাদের নিজস্ব গণ্ডির মধ্যে বলে। এছাড়া ইন্টারনেটের সুবাদে তারা এখন মত প্রকাশ করছে। সঙ্গী খুঁজছে। আমাদের এখানে যারা সমকামী তারা এক সঙ্গে দীর্ঘদিন থাকলেও তার সঙ্গী মারা গেলেও বলতে পারে না ওই সম্পত্তি তার পাবার অধিকার আছে। কারণ কেমন করে বলবে। কি সম্পর্ক তার সঙ্গে। তাদের মধ্যে যে সম্পর্ক ছিল এর কোন বৈধতা নেই। এ কারণে তারা বলতে পারে না। ফলে সম্পত্তি থেকেও বঞ্চিত হয়। তিনি বলেন, সমকামিতাকে বৈধতা দেয়ার ব্যাপারে আমাদের এখানেও আইন করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। সমকামিতাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। প্রকৃতির কারণেই এটা হচ্ছে। তিনি বলেন, সমকামীর সংখ্যা বাড়ছে বা কমছে এটা ওইভাবে বলা যাবে না। তবে এটা বলা যায়, এটা আগেও ছিল এখনও আছে। ভবিষ্যতেও থাকবে। এখন তারা একটু স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে পারছে। ভবিষ্যতে তা আরও বাড়বে।
। ম্যাচমেকার প্রতিষ্ঠান সমকামীদের সঙ্গী খুঁজে দেয়ারও কাজ করছে। এই ধরনের অসংখ্য সাইট গড়ে উঠেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সমকামীদের বেশির ভাগের বয়স ১৮ থেকে ২৫-এর মধ্যে। পেশায় বেশির ভাগই ছাত্রছাত্রী। পাশাপাশি এয়ারলাইন্সের কর্মী, কম্পিউটার রিলেটেড পেশার সমকামীও রয়েছে। নেটে সমকামী নারী ও পুরুষ তাদের নাম, বয়স, পেশা, ই-মেইলের ঠিকানা ছাড়াও রয়েছে তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ও নানা ভঙ্গির ছবি। তিনি কি চান, কেমন সঙ্গী চান তা-ও বলা আছে। ঢাকায় আগের চেয়ে সমকামীদের মত প্রকাশের সংখ্যা বাড়ছে। আগে সমকামীরা অনেকটা গোপনেই তাদের চাহিদা পূরণ করতো। নিজেদের গণ্ডির মধেই সঙ্গী খুঁজতো। এতে তাদের অনেকটা বেগ পেতে হতো। এখন তারা অনেকটাই উদার। নিজের ছবি দিয়েও সঙ্গী চাইছেন। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সমকামীরা এক সঙ্গে বসে আড্ডা দিচ্ছে। ভেতরে ভেতরে তাদের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ইংল্যান্ডে সমকামিতাকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। তারাও মনে করে এই দেশে সমকামীরা বৈধতা পাবে। তার পছন্দের সঙ্গীকে নিয়ে সারাজীবন পার করে দেবে।
ইন্টারনেটে ঢাকা লেসবিয়ান নামের একটি সাইটে সিমি তামান্না নামের একজন তার পরিচয় দিয়ে বলেছেন, হাই লেসবিয়ান সেক্সি হট গার্ল। অনলি ফর গার্লস নো মেল এলাউড। তিলোরা নামে আরেকজন লিখেছেন, আই অ্যাম উওম্যান। এইটিন ইয়ারস ওল্ড। সিকিং এ উওম্যান ফ্রম টুয়েন্টি টু ফোরটি ইয়ারস ওল্ড। আর একজন লিখেছেন তার বয়স ১৮। তিনি খুঁজেছেন ১৮ থেকে ৯৯ বছরের কোন নারী সঙ্গীকে। ঢাকা গার্লস সাইটে অরুণা নামের একজন লিখেছেন আই অ্যাম হট গার্ল। আই অ্যাম লুকিং ফর এ হট গার্ল ফর মাই লাভলি রিলেশন। আর একজন লিখেছেন, আই ওয়ান্ট টু মিট লেসবিয়ান। আই অ্যাম আন ইউএসএ এডুকেটেড ডিসেন্ট পারসন। উড ইউ লাইক টু এক্সপ্লেন লেসবিয়ান উইথ কাপল অব মোর গার্লস। ফর ফান। অ্যান্ড নো কমপ্লিকেশন বাট পিওর ফান। সাম হক নামের এক ছাত্রী নারী সঙ্গী খুঁজছেন। বায়না নামের এক এয়ারলাইন্স কর্মী তার বয়স ২০ উল্লেখ করে দাবি করেছেন তিনি স্লিম ফিগারের অধিকারী। তিনিও নারী সঙ্গী খুঁজছেন। দেখা গেছে, কোন কোন সমকামী নারী আবার নিজের পেশা বলতে চান না। তারা দু’-একজন ছাড়া সবাই লিখেছেন তাদের ফিগার এভারেজ। কেউ কেউ লিখেছেন স্লিম। কেউ কেউ নিজের চাহিদার কথা ও ই-মেইল ঠিকানার পাশাপাশি ছবি দিয়েছেন। কেউ কেউ সব দিলেও নিজের ছবি দেননি। আবার এমনও দেখা গেছে মেয়েদের সাইটে ছেলেরাও ছবি ও প্রোফাইল সেট করেছেন। ঢাকা গে অ্যান্ড ঢাকা গে পারসন নামের সাইটে রয়েছে অসংখ্য সমকামীদের ছবি। এছাড়াও ঢাকা লেসবিয়ান পারসোনাল সাইট ফর ইওর লোকাল এরিয়া নামের সাইটে সমকামীদের ছবি ছাড়াও রয়েছে তাদের সম্পর্কে নানা তথ্য। ঢাকা লেসবিয়ান ইন বাংলাদেশ নামেরও সাইট রয়েছে। এসব সাইটে সমকামীদের অসংখ্য ছবি, নাম, ঠিকানাসহ তথ্য রয়েছে। এছাড়াও অন লাইনে সমকামীদের সঙ্গে ডেটিং করার সুযোগ ও সমকামীদের খুঁজে দেয়ার জন্য পারসোনাল ম্যাচমেকারের ওয়েবসাইট রয়েছে। গে ম্যাচমেকার ডট কম নামেও রয়েছে ওয়েবসাইট। সেখানে গে পারসন বাংলাদেশ ঢাকাতে রয়েছে বাংলাদেশী সমকামীদের ছবি। সমকামী নারীদের ছবিও রয়েছে। এছাড়া রয়েছে ঢাকা ব্যাড বয় ইন বাংলাদেশ নামের ওয়েবসাইট লেস। ঢাকা হোমোসেক্সুুয়ালস ইন বাংলাদেশ, ঢাকা গে পারসন নামেও রয়েছে নানা ওয়েবসাইট। নারী সমকামীদের পাশাপাশি পুরষ সমকামীরাও তাদের ছবি, নাম, পরিচয় ও ই-মেল ঠিকানা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা ও তার ফিগারের ধরন উল্লেখ করে বিভিন্ন পোজের ছবি দিয়েছেন। অফার করছেন তার সঙ্গী হওয়ার। তিনি যেন তার সঙ্গী পান সে জন্য আকৃষ্ট করার মতো কথাও লিখেছেন। এজন্য অফার করছেআমাকে পছন্দ হলে আজই মেইল করো। ডেট করো। আজই দেখা হবে। ঢাকা হোমো সেক্সুয়াল ইন বাংলাদেশ ওয়েবসাইটে ইমন নামের একজন লিখেছেন, আই লাইক এ গুড রিলেশনস। এভরিবডি লাইক মি। সাম ইন্টারেস্টিং স্টোরি মাই লাইফ। সো ইফ এনি বডি ইন্টারেস্টিং অ্যাবাউট দিস প্লিজ আক্সড মি। রানা মুজিব নামে ২৫ বছর বয়সের কম্পিউটার রিলেটেড পেশার সঙ্গে জড়িত একজন লিখেছেন, লাইফ ইন হট ফর এভার। আই লাইক টু মেক ফ্রেন্ডশিপ উইথ এ স্মার্ট বয়। ঢাকা গে পারসন এ নাইস এ্যাঞ্জেল নামের ২৫ বছরের একজন লিখেছেন, আই উড লাইক টু লাভ অ্যান্ড হেভি ফান। প্লিজ কাম অন। ঢাকা ব্যাড বয় ইন বাংলাদেশ নামের একটি সাইটে একজন লিখেছেন, ফিল লোনলি। আই অ্যাম অলওয়েজ লোনলি। প্লিজ এসকেপ মি ফ্রম হেয়ার ইন বাংলাদেশ। মেইল মি।
সংগ্রাম নামের ২২ বছরের একজন তার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য দু’টি ফোন নম্বর দিয়েছেন। লিখেছেন, আই অ্যাম এ সিঙ্গল গাই। লুকিং ফর এ সিরিয়াস রিলেশনশিপ। আই অ্যাম ইন সার্চ অব মাই লাইফ পার্টনার। ইটস ইজি টু গেট। সাম ওয়ান ইন ইউর বেড। বাট ইটস রিয়েল হার্ড টু গেট। ইন্টারনেটে যারা সঙ্গী হওয়ার অফার করছেন তারা কেবল দেশী সঙ্গী চান না। বিদেশী হলেও তাদের আপত্তি নেই এমন কথা রয়েছে। অনেকেই ভুল ইংরেজি লিখেই তার সঙ্গী খুঁজছেন।
এছাড়াও মিট হট ঢাকা লেসবিয়ান সাইটেও নানা রকম অফার দিয়েছেন। তারা সমকামীদের সঙ্গী খুঁজে দেয়। ম্যাচমেকারের ওই সাইটে বলা হয়েছেআমাদের সাইটে হাজারের বেশি লেসবিয়ান, গে, (কোয়ারিজম), উওম্যান, বাই সেক্সুয়াল অ্যান্ড ট্রান্স সেক্সুয়াল মেম্বার, হোমো সেক্সুয়াল সদস্য আছে। লুকিং ফর এ সেইম সেক্স রিলেশন শিপ। আজই প্রোফাইল খুলন। সেক্সি বাংলা গার্ল লেসবিয়ান নামে ভিডিও চিত্র দিয়ে আকর্ষণ করার চেষ্টা করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ইন্টারনেটে সমকামীদের জমজমাট ও সঙ্গী খোঁজার আকর্ষণীয় সব অফার থেকে অনেকেই তাদের বন্ধু খুঁজে নিচ্ছেন। তারা যে যাকে পছন্দ করেন এরপর তাদের মধ্যে যোগাযোগ হয়। যোগাযোগের সূত্র ধরেই আস্তে আস্তে ফোন নম্বর বিনিময়, পরে দেখা করা। এরপর তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ইন্টারনেট ছাড়াও সমাজের বিভিন্ন স্তরে রয়েছে সমকামীরা। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবাসিক হোটেল, ডরমিটরি, মেস, জেলখানায়ও রয়েছে সমকামী। সূত্র জানায়, এমন অনেক আবাসিক ছাত্র হল আছে যেখানে টিভি দেখতে দেয়া হয় না। একটি পেপার পড়তে দেয়া হয় না। তারা লেখাপড়া করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না। এমনকি খেলাধুলাও করতে পারে না। ওই সব আবাসিক হোস্টেলে অনেকেই কোন কাজ না থাকায় তাদের জৈবিক চাহিদা পূরণের জন্য সম্পর্ক করে। সূত্র জানায়, শারীরিক ভাবেই সমকামীরা সমলিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে। আর ওই আকর্ষণ থেকেই তারা সম্পর্ক গড়ে। সামাজিকভাবে বাংলাদেশে সমকামিতা নিষিদ্ধ। আইনেও এর বৈধতা নেই। ধর্মেও নিষেধ করা আছে। সমকামীদের সমাজে কেউ দেখতে পারে না। এ কারণে তাদের জৈবিক চাহিদাকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিবৃত্ত করে রাখতে হতো। গত আট-দশ বছরে ঢাকায় তা আস্তে আস্তে প্রকাশ করার সুযোগ বাড়তে থাকে। আগে যারা সমকামী ছিল তারা তাদের গণ্ডির মধ্যেই খুঁজতো মনের মতো সঙ্গী। এখন আর তাদের সেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না। তারা একাধিক সঙ্গী খুঁজে নিতে পারছে। সমকামীরা অত্যন্ত গোপনেই সম্পর্কগুলো বজায় রাখে। এ কারণে তাদেরকে সহজে চেনা সম্ভব হয় না। নারী সমকামীদের বেলায় দেখা যায় তারা এক সময়ে সমকামিতায় অভ্যস্ত হলে পরে পরিবারের চাপে একজন পুরম্নষকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়। কিন্তু ওই পুরম্নষ সঙ্গী তাকে বিন্দুমাত্র আকর্ষণ করে না। তারপরও সে ওই সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটায়। সারাজীবনই তার জৈবিক চাহিদা পূরণে বঞ্চিত হয়। সূত্র জানায়, সমকামীরা একসঙ্গে সব সময় থাকতে পারে না। ঢাকায় এখন সমকামীদের জন্য কিছুটা সুবিধা হয়েছে। তারা সহজেই বাসা ভাড়া নিতে পারছে। তারা পরিচয় দিচ্ছে বন্ধু কিংবা ভাই হিসেবে। মেয়েরা পরিচয় দিচ্ছে বান্ধবী কিংবা বোন হিসেবে। তারা হোস্টেলে থাকবে না বলেই একটু ভাল পরিবেশে থাকতে চায়। এ কারণে বাড়ি ভাড়া নিচ্ছে। বাড়িওয়ালাও তাদের ভাই বন্ধু কিংবা বান্ধবী ও বোন পরিচয় দেয়ার বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখে বাড়ি ভাড়া দিচ্ছে। তাদের অনেকেই যে সমকামী এটা বোঝা সম্ভব হয় না। বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হোস্টেলেও রয়েছে সমকামী। কিন্তু তারা ধরা পড়লে তাদের হল থেকে বের করে দেয়া হয়। কয়েক বছর আগে এক বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রী সমকামী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ধরা পড়ে। পরে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে তাকে হল ত্যাগে বাধ্য করা হয়। ওই নারী এরপর আর কখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়নি। সূত্র জানায়, ওই মেয়েটি পরবর্তী সময়ে একাকী জীবন যাপন করতে শুরু করেছিল। সমকামিতার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন, সমকামিতা অনেক জায়গাই আছে কিন্তু সেটা প্রকাশ হচ্ছে কম। আমি জানি তারা ঢাকায় এসোসিয়েশনও গড়ে তুলেছে। তারা সেখানে মাঝে মাঝেই মিলিত হয়। তারা তাদের দল ভারি করার জন্য তাদের সঙ্গী বাড়ানোর জন্য চিঠি দিচ্ছে। আমিও একটি চিঠি পেয়েছিলাম। আমাকে ডাকা হয়েছিল বৈঠকে। আমি যাইনি। মনে হয় না গিয়ে ভুল করেছি। মিস করেছি। তিনি বলেন, সমকামিতার আইনগত বৈধতা নেই। ধর্মও সমর্থন করে না। তারপরও বোঝা যায় এটা প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে এসেছে। এ জন্য সূরা লুতে সমকামিতার ভয়াবহতা সম্পর্কেও বলা হয়েছে। ওই সময়ে সমকামিতা ছিল বলেই তো ওই কথাটি সূরাতে এসেছে। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ কোয়ারিজম এসোসিয়েশন নামে সমকামীদের একটি এসোসিয়েশনও রয়েছে। ২০০৫ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। তারা ভেতরে ভেতরে সমকামীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তাদের অধিকার আধায়ের চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে সমকামীদের নানা সমস্যা ও তাদের অধিকার আদায়সহ তাদের নানা রকম সহযোগিতা করা ও সমকামীদের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করছে বয়েস অনলি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ফর গে, সিখায়েনি ও বাঁধন হিজড়া সংঘ নামের সংগঠনগুলো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ-যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, সমকামিতা আমাদের সমাজে আছে। বিভিন্ন স্তরে বিদ্যমান। সব সময় দেখা যায় না। অনেকেই তার সম লিঙ্গের সঙ্গে জৈবিক চাহিদা পূরণ করছে। আবার সামাজিক বাধ্যবাধকতার কারণে বিয়ে করছে। তবে সুখী হতে পারছে না। নানা ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবাসিক হলগুলোতে কিছু কিছু সমকামী রয়েছে। তিনি বলেন, সমকামীরা এখন এক হওয়ার চেষ্টা করছে। তারা তাদের অধিকার পেতে চায়। সমকামী নারী কিংবা পুরম্নষ যার কথাই বলি না কেন তাদের শারীরিক বৈশিষ্ট্যটাই এরকম যে তারা তাদের সম লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে। তিনি বলেন, সমকামীদের সমাজে নানা কষ্টের মধ্য দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে। তা ওপেনলি তাদের কথা সবাইকে বলতে পারে না। তাদের নিজস্ব গণ্ডির মধ্যে বলে। এছাড়া ইন্টারনেটের সুবাদে তারা এখন মত প্রকাশ করছে। সঙ্গী খুঁজছে। আমাদের এখানে যারা সমকামী তারা এক সঙ্গে দীর্ঘদিন থাকলেও তার সঙ্গী মারা গেলেও বলতে পারে না ওই সম্পত্তি তার পাবার অধিকার আছে। কারণ কেমন করে বলবে। কি সম্পর্ক তার সঙ্গে। তাদের মধ্যে যে সম্পর্ক ছিল এর কোন বৈধতা নেই। এ কারণে তারা বলতে পারে না। ফলে সম্পত্তি থেকেও বঞ্চিত হয়। তিনি বলেন, সমকামিতাকে বৈধতা দেয়ার ব্যাপারে আমাদের এখানেও আইন করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। সমকামিতাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। প্রকৃতির কারণেই এটা হচ্ছে। তিনি বলেন, সমকামীর সংখ্যা বাড়ছে বা কমছে এটা ওইভাবে বলা যাবে না। তবে এটা বলা যায়, এটা আগেও ছিল এখনও আছে। ভবিষ্যতেও থাকবে। এখন তারা একটু স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে পারছে। ভবিষ্যতে তা আরও বাড়বে।