পুত্রবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ সিলেটে শ্বশুর জেলহাজতে
সিলেট নগরীতে চাঞ্চল্যকর নারী নির্যাতন
ঘটনা ঘটেছে। শ্বশুর পুত্রবধূকে ধর্ষণ করেছে। এমন অভিযোগ এনে মামলা দায়ের
হয়েছে কোতোয়ালি মডেল থানায়। পুলিশ লম্পট শ্বশুরকে গ্রেফতার করে আদালতে
হাজির করলে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানো নির্দেশ দেন। ভিকটিম
পুত্রবধূকে
মেডিকেল পরীক্ষার জন্য রাখা হয়েছে পুলিশ হেফাজতে। মামলায়
শ্বশুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ছাড়াও যৌন নিপীড়ন, মাদক সেবনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহার ছাড়াও অভিযুক্ত ও ভিকটিম পুত্রবধূর স্বজনদের সঙ্গে আলাপ করে
জানা গেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ শ্বশুর ও পুত্রবধূর জবানবন্দি
গ্রহণের পর শ্বশুরের বাসা থেকে কয়েক বোতল মদ ও ফেনসিডিল উদ্ধার করে গতকাল।
সিলেট
নগরীর চন্দনটুলা চয়ন-১৬ বাসার বাসিন্দা শাহেদ আহমদ। বয়স আনুমানিক ৪২।
স্ত্রী ও ৬ পুত্র সন্তান নিয়ে তিনি ওই বাসায় থাকেন। বড় ছেলে কিশোর দেলোয়ার
হোসেন রাব্বীর বয়স ১৭। বিয়ের বয়স হয়নি তার। তারপরও নিজ আগ্রহেই পুত্রকে
বিয়ে দিতে উঠেপড়ে লাগেন শাহেদ। পুত্রের জন্য নিজে এবং ঘটক লাগিয়ে কনে
খোঁজেন হন্য হয়ে। শাহেদ এক পর্যায়ে কনের সন্ধান পেয়ে যান। কনে শহরতলির
খাদিমপাড়ার পীরেরচরের বাসিন্দা মোঃ চান মিয়ার বড় মেয়ে ফৌজিয়া খানম ইভা
(১৬)। কনে দেখা হলেও বিয়ে নিয়ে ঝামেলার সৃষ্টি হয় বর-কনে দু’জনই
অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায়। তবে এক পর্যায়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব হয় বর ও
কনেপক্ষ উৎসাহী থাকায়। অবশেষে গত জুলাইয়ে বিয়ে হয় রাব্বী ও ইভার। বিয়ের পর
থেকে শ্বশুর শাহেদ পিছু নেয় পুত্রবধূর। এতে ইভা ক্ষুব্ধ হলে তাকে ছলে-বলে
কৌশলে ম্যানেজ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে শ্বশুর।
উপঢৌকন,
নেশাদ্রব্য খাইয়ে বাগে আনে। এরপর থেকে মাদকাসক্ত শ্বশুর ও পুত্রবধূ
বিভিন্ন সময়ে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়। এমন পরিস্থিতিতে ইভা স্বামীর
বাড়িতে এক রকমের গৃহবন্দি হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন শ্বশুরের এ অত্যাচার ও নেশা
দ্রব্য সেবন সহ্য করতে না পেরে সে শারীরিকভাবে অসুস্থ হতে থাকে। অনেক
অনুনয়-বিনয়ের পর লম্পট শ্বশুরকে তার পিত্রালয়ে খাদিমপাড়ায় নিয়ে যেতে সক্ষম
হয়। মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ ও দেখাসাক্ষাৎ না থাকায় সম্পূর্ণ অন্ধকারে ছিল
মেয়ের পিতৃপরিবার। শ্বশুর তাকে মোটরসাইকেলযোগে রোববার রাতে বাসায় নিয়ে যায়।
সেখানে পৌঁছার পর মেয়েটির কাছ থেকে সব ঘটনা শুনে ঘটনাটি আশপাশের লোকজনকে
জানান। সবার সহযোগিতায় আটক করা হয় নরপশু শাহেদকে। উত্তম-মধ্যম দিয়ে থানায়
খবর দিলে পুলিশ তাকে আটক করে। এ ঘটনায় পুত্রবধূ ফৌজিয়া খানম ইভা সোমবার
কোতোয়ালি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা
নম্বর-৬৫(১০)০৮। এ ঘটনায় নগরজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে