দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বড় যৌনপল্লী, ‘কুল মেন ডোন্ট বাই সেক্স৷’

যৌন ব্যবসা বন্ধ হলেই কি নারী-পাচার বন্ধ হয়ে যাবে? জরুরি এই প্রশ্নটির সামনে দাঁড় করিয়ে দিল একটি কর্মসূচি, যার স্লোগান হল - ‘কুল মেন ডোন্ট বাই সেক্স৷’
‘কুল মেন ডোন্ট বাই সেক্স’৷ এই স্লোগান চালু করেছে পুনের একটি কলেজ এবং একটি এনজিও এই স্লোগানকে জনপ্রিয় করতে চাইছে সেই পুরুষদের মধ্যে, যারা
বিনোদনের খোঁজে যৌনপল্লীতে যায়৷ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির বক্তব্য, যৌন বেচা-কেনা তখনই বন্ধ হবে, যখন খদ্দেররা নিরুৎসাহিত হবেন৷ এবং যৌন ব্যবসা বন্ধ হলে নারী-পাচারও বন্ধ হবে, যেটা ভারতীয় উপমহাদেশ-সহ সারা পৃথিবীরই এক বড় সমস্যা৷
কিন্তু কলকাতার সোনাগাছি, যা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বড় যৌনপল্লী, সেখানকার যৌনকর্মীদের সংগঠন দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি এই প্রচারের বিরোধিতা করছে৷ দুর্বার সংগঠনের এইডস ও যৌনরোগ বিরোধী প্রচার ও প্রতিরোধ কর্মসূচি সোনাগাছি প্রোজেক্ট, মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় সচল যে সামাজিক প্রকল্প আজ সারা বিশ্বেই এক অনুসরণযোগ্য নজির হয়ে উঠেছে, সেই প্রকল্পের নির্দেশক ডঃ স্মরজিৎ জানা বললেন, কেন দুর্বারের এই বিরোধিতা৷ তাঁর কথায়, ‘‘আসলে দুর্বার বহুদিন ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছে, যাতে যৌনপেশাকেও আর পাঁচটা পেশার মতো স্বীকৃতি দেওয়া হয়৷ সেখানে ‘কুল মেন ডোন্ট বাই সেক্স’ কর্মসূচি প্রকারান্তরে সেই পেশাকে বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলছে৷ এক্ষেত্রে সার্বিকভাবে সমাজের যে দৃষ্টিভঙ্গীর পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে যৌনকর্মীদের প্রতি, সেটাতেই আপত্তি দুর্বারের৷
কিন্তু যৌনপেশা যদি বন্ধ না হয়, তা হলে নারী পাচারও তো বন্ধ হবে না কোনোদিন৷ তা হলে কোনটা সঠিক পথ৷ ডঃ স্মরজিৎ জানা দাবি করলেন, দুর্বার সেই পথ দেখাচ্ছে৷ যৌন পেশা চালু রেখেই নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা, যাতে পাচার আটকানো যায়৷
তবে একটা ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই যে, পথ যেটাই হোক না কেন, আজকে সবাই সচেষ্ট নারী-পাচার, বিশেষত বালিকা এবং কিশোরীদের চোরাপাচার রুখতে৷ সে যৌন পেশার জন্যে হোক, বা ঘরের পরিচারিকা কী চাষের ক্ষেতের মজুরের কাজে৷

,
Powered by Blogger.