ফেসবুকে হ্যাকিংয়ের শিকার স্বয়ং জুকারবার্গ

খোদ ফেসবুকের সিইও-র ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার ঘটনা সামনে এল।
এমনিতে কোনও অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারী বা তাঁর বন্ধুর পোস্ট করা কন্টেন্টই ফেসবুক ওয়ালে দেখা যায়। আপনার চেনা-পরিচিত নয়, এমন কোনও ব্যক্তি কনটেন্ট পাঠালেও, তা দেখা যাওয়ার কথা নয়। কিন্তু প্যালেস্তিনীয় সিকিউরিটি রিসার্চার খলিল শ্রেতা, কয়েক দিন আগে এমন
একটি বাগ (যান্ত্রিক ত্রুটি) পান যার সাহায্যে অন্য কারও ওয়ালে পোস্ট করা যায়। এ ব্যাপারে তিনি ফেসবুককেও জানান। কিন্তু ফেসবুকের সিকিউরিটি টিমের তরফে কোনও পদক্ষেপই করা হয় না। এর পরই সেই বাগের সাহায্যে খলিল ফেসবুকের সিইও মার্ক জুকারবার্গের ওয়ালে তাঁর অভিযোগ সংক্রান্ত মেসেজ পোস্ট করেন। যা সাধারণত করা যায় না।
খলিল প্রথমে জুকারবার্গের বন্ধু সারাহ গুডউইনের ওয়ালে কয়েকটি মেসেজ পোস্ট করেন। উদ্দেশ্য, প্রমাণ করা যে, এই বাগের সাহায্যে যে কোনও ব্যক্তি অন্য যে কোনও ব্যক্তির ওয়ালে মেসেজ পোস্ট করতে পারেন। এর পর সেই প্রমাণটিকে ফেসবুক সিকিউরিটি টিমের কাছে কনটেন্ট করে পাঠান তিনি। ফেসবুকে বাস্তবে এমন একটি বাগ আছে, তা প্রমাণ করাই তাঁর অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল। একটি লম্বা ব্লগ পোস্ট করে এই ব্যাপারটিকে সিকিউরিটির টিমের নজরে আনেন খলিল।
উল্লেখ্য, ফেসবুকে একটি বাউন্টি প্রোগ্রাম চলছে, যেখানে ওই বাগ রিপোর্ট করা হলে, বেশ কিছু অর্থ পুরস্কার স্বরূপ দেওয়া হয়। এর উদ্দেশ্য, বাগের ব্যবহার অথবা কালোবাজারে তার বিক্রি রোধ করা। কিন্তু খলিলের মামলায় ৫০০ ডলারের বেশি পুরস্কার দেওয়ার পরিবর্তে সিকিউরিটি টিম সেই বাগের অস্তিত্বই মানতে রাজি হয়নি।
একটি ই-মেলে খলিল জানান, তিনি দ্বিতীয়বারও ফেসবুকে সেই বাগের ব্যাপারে জানান। কিন্তু কোনও প্রতিক্রিয়া না-পেয়ে শেষে জুকারবার্গের ওয়ালেই সেই বাগের সাহায্যে মেসেজ পোস্ট করেন। সেই মেসেজে তিনি প্রাইভেসি ভাঙার জন্য ক্ষমা চান। তার পর জানান, তিনি ফেসবুকে বাগ খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু সিকিউরিটি টিম তাঁর কথায় গুরুত্ব দিচ্ছে না।
কিন্তু জুকারবার্গের ওয়ালে মেসেজ পোস্ট করার পরই সিকিউরিটি টিম তত্‍‌পর হয়ে ওঠে। এর পর খলিলের কাছ থেকে এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ তথ্য নেয়। হ্যাকার নিউজে ফেসবুক সিকিউরিটির সদস্য ন্যাট জোন্স একটি পোস্টে জানান, বাগের ব্যাপারে দ্রুতগতিতে কাজ হয়েছে। বৃহস্পতিবারই তা ফিক্স করে দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি সাময়িক কালের জন্য খলিলের অ্যাকাউন্টও সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়েছে। সিকিউরিটি টিমের তরফে জানানো হয়েছে, জুকারবার্গের অ্যাকাউন্টে পোস্ট করায় তিনি নিয়ম ও শর্তাবলি উপেক্ষা করেছেন, তাই তিনি বাউন্টি ফিস পাবেন না। ফেসবুকের দাবি, খলিল যখন বাগের ব্যাপারে রিপোর্ট করেন, তখন তাতে প্রয়োজনীয় তথ্য ছিল না। শুধু বাগটি দেখালেই চলবে না। বরং তা কী ভাবে কাজ করবে, তা-ও দেখাতে হবে। তবে ফেসবুক টিম ভবিষ্যতে তাঁর কাছ থেকে সাহায্য চেয়েছে বলে খলিল জানিয়েছেন।

,
Powered by Blogger.