টয়লেটের চেয়েও দূষিত মেয়েদের হাতব্যাগ…!

বিশ্বজুড়ে পার্স বা হাতব্যাগ নারীর নিত্যসঙ্গী। রূপচর্চার উপকরণ, প্রয়োজনীয় অর্থ, চাবি, চিরুনি, মোবাইল ফোন, বই থেকে শুরু করে আত্মরক্ষার পিপার স্প্রে পর্যন্ত বহন করা হয় এই হাতব্যাগে। হাতব্যাগ যে বোঝা বহনের জন্য তা নয়, বরং এটি আধুনিক নারীর ফ্যাশন উপকরণও বটে।
আর সেই হাতব্যাগকেই কিনা টয়লেটের চেয়ে বেশি ব্যাক্টেরিয়াপূর্ণ বলে ঘোষণা করলেন গবেষকরা!
‘ইনিশিয়াল ওয়াশরুম হাইজিন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, নারীর দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার্য হাতব্যাগে যে পরিমাণ ব্যাক্টেরিয়া থাকে, তার পরিমাণ একটি সাধারণ মানের টয়লেটের চেয়ে বেশি। পরীক্ষায় দেখা যায়, প্রতি ৫টি হাতব্যাগের মধ্যে একটিতে যে পরিমাণ ব্যাক্টেরিয়া থাকে, তা একজন মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। গবেষণায় আরো বলা হয়, হাতের ক্রিম বা লোশন মেয়েদের হাতব্যাগের সবচেয়ে নোংরা বস্তু। এসব ক্রিমের মোড়কের গায়ে যে ব্যাক্টেরিয়া থাকে, তা সাধারণ মানের একটি টয়লেটেও থাকে না।
তবে মেয়েদের হাতব্যাগের নিয়মিত অনুসঙ্গ লিপস্টিক বা মাশকারার প্যাকেটে তেমন পরিমাণ ব্যাক্টেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। ইনিশিয়াল ওয়াশরুম হাইজিন পরিচালিত গবেষণায় আরো বলা হয়েছে, যত ধরনের ব্যাগ আছে, তারমধ্যে চামড়ার তৈরি যেগুলো- সেগুলোই বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ চামড়ার তৈরি হাতব্যাগগুলোর দেহ ছিদ্রবহুল, যা ব্যাক্টেরিয়ার উৎপত্তি ও বিকাশের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে। তাই ব্যাক্টেরিয়ার ক্ষতি এড়াতে গবেষকরা নারীদের অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল টিস্যু বা জেল দিয়ে নিয়মিত ব্যাগ ও হাত পরিষ্কার করার পরামর্শ দিয়েছেন।
ইনিশিয়াল হাইজিনের টেকনিক্যাল ম্যানেজার পিটার ব্যারেট বলেন, ‘হাতব্যাগগুলো নিয়মিত আমাদের হাত ও বিভিন্ন বস্তুর সংস্পর্শে আসে, তাই বিভিন্ন জীবাণু স্থানান্তর হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। বিশেষ করে, হাতব্যাগগুলো খুব কমই পরিষ্কার করা হয়। যখন এই জীবাণুগুলো ব্যাগের ভেতরে বিস্তার লাভ করতে থাকে, সেখান থেকে হাতে হাতে অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে। নিয়মিত হাত পরিষ্কারের মাধ্যমে প্রাথমিক অবস্থায় এই ব্যাক্টেরিয়া রোধ করা যায় এবং ব্যাগ পরিষ্কারের মাধ্যমে ব্যাক্টেরিয়ার বিস্তার রোধ করা যায়।’
এক পরীক্ষায় দেখা গেছে অফিসের রান্নাঘর টয়লেটের চেয়ে বেশি অপরিচ্ছন্ন, যা বিভিন্ন রোগ ছড়াতে পারে। ইনিশিয়াল ওয়াশরুম হাইজিনের সেই গবেষণায় প্রকাশ করা হয়, অফিসের রান্নাঘরের অর্ধেকের বেশি জায়গাই ভয়াবহ রকম দূষিত। এ জায়গাগুলোতে তারা কলিফর্ম ব্যাক্টেরিয়া নামক একধরনের ব্যাক্টেরিয়ার উপস্থিতি পেয়েছেন, যা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটাতে সক্ষম। গবেষণায় আরো দেখা গেছে, যৌথভাবে ব্যবহার করা ফ্রিজ ও রেফ্রিজারেটরগুলোতেও প্রচুর ব্যাক্টেরিয়া থাকতে পারে। এছাড়া ৩০ শতাংশ যৌথভাবে ব্যবহার করা মাইক্রোওয়েভের হ্যান্ডেল ও বোতাম দূষিত থাকে। তাই নিয়মিত ব্যবহার্য জিনিস পরিষ্কার করা ও সর্বপরি স্বাস্থ্য সচেতনতাই দিতে পারে রোগ-জীবাণুমুক্ত সুস্বাস্থ্যের নিশ্চয়তা। তথ্যসূত্র : ডেইলি মেইল

,
Powered by Blogger.