ছলনার জালে অসংখ্য নারী, গড়েন শারীরিক সম্পর্ক, টার্গেট বিবাহিত!

নিজের পরিচয় দেন সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন। নামধাম গোপন করে ফোন করেন বিবাহিত নারীদের। উত্তরার একটি বাসার সিকিউরিটি গার্ড তিনি। তবে, যাদের বিপুল টাকা আছে শুধু তাদের। এরপর প্রেমের জালে ফেলে হাতিয়ে নেন ওই নারীদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা। গড়েন শারীরিক সম্পর্ক। এভাবে অসংখ্য নারীকে ফেলেছেন তিনি ছলনার জালে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি ওই ভুয়া ক্যাপ্টেনের। র্যাবের হাতে ধরা পড়েন তিনি। এই প্রতারকের নাম হারুন অর রশীদ।প্রতারণার শিকার বিভিন্ন নারীর কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে র্যাব অনেকদিন ধরে তাকে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছিল। অবশেষে গতকাল সোমবার র্যাব-১ এর সিনিয়র এএসপি জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে একটি দল উত্তরার আবদুল্লাহপুরে একটি ফিলিং স্টেশনের সামনে থেকে হারুনকে গ্রেফতার করে। র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম আনোয়ার পাশার কাছে প্রতারণার কথা অকপটে স্বীকার করে হারুন। র্যাবের মোবাইল কোর্ট প্রতারণার দায়ে তাকে এক বছর কারাদণ্ড দিয়েছে। র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে হারুন জানান, তার টার্গেট মূলত যাদের প্রচুর টাকা আছে সেই সব বিবাহিত নারী; যাদের স্বামী বিদেশ থাকেন। নানা কৌশলে তাদের নাম, ঠিকানা, মোবাইল ফোন নম্বর ও পরিচয় বের করে ফোন করেন। নিজের পরিচয় দেন র্যাব-১ এর ক্যাপ্টেন আরিফ।
হারুন জানান, কাউকে খুব সহজেই ফাঁদে আটকে ফেলি। আবার কাউকে পটাতে একটু সময় লাগে। লেগে থাকি, আস্তে আস্তে আমার বশে চলে আসে। প্রেমের সম্পর্ক গড়ে হাতিয়ে নেই তাদের কাছ থেকে টাকা পয়সা। গড়ি শারীরিক সম্পর্ক। এদের সঙ্গে সম্পর্ক থাকে এক কি দুই মাস। অবিবাহিত মেয়েদের তিনি শিকার করেন না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, অবিবাহিতা মেয়েরা বেশিরভাগই শিক্ষিত। তাদের সঙ্গে চালাকি করা কঠিন। ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকে। একবার এক
অবিবাহিতা মেয়েকে বশে আনতে গিয়ে ধরা পড়ার উপক্রম হয়েছিল। কোনরকমে ওই যাত্রায় রক্ষা পাই। এরপর থেকেই তিনি বিবাহিতা ও ধনী মহিলাদের টার্গেট করা শুরু করেন।
হারুন জানান, মেয়েরা ফোনে ফ্ল্যাক্সিলোড করতে গেলে তিনি পিছু নেন। কৌশলে সংগ্রহ করেন ফোন নম্বর। আবার বিভিন্ন শপিং কমপ্লেক্সের দোকান থেকেও মহিলাদের ফোন
নম্বর সংগ্রহ করেন।
এ পর্যন্ত কতজন নারী তার প্রতারণার শিকার হয়েছে জানতে চাইলে হারুন বলেন, সঠিক সংখ্যা মনে নেই। দীর্ঘদিন ধরেই অসংখ্য নারীর সঙ্গে এ ধরনের অপকর্ম করে আসছি।
র্যাবের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতারক হারুন তার সিকিউরিটি গার্ডের পোশাক পাল্টে র্যাব কিংবা সেনাবাহিনীর পোশাক পরে কোন নারীর সামনে হাজির হলে কেউ বিশ্বাস করবে না উত্তরার একটি বাসার সামান্য সিকিউরিটি গার্ড সে।
হারুনের গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার খামারবরধুল গ্রামে। ওই গ্রামের মৃত আবদুল্লাহ আল মামুনের ছেলে তিনি। গ্রামে তার এক স্ত্রী ও নয় বছরের একটি ছেলে আছে। টঙ্গীর আরিচপুরে থাকেন তিনি। তবে এখানেও রয়েছে তার একাধিক স্ত্রী।

,
Powered by Blogger.