নিজের মৃত্যুর ভিডিও ধারণ করলেন সাংবাদিক আসিম!

নিজের মৃত্যুর ভিডিও চিত্র ধারণ করে গেলেন মিসরের ২৬ বছর বয়সী চিত্র সাংবাদিক আহমেদ সামির আসিম। সোমবার মিসরে সেনাবাহিনীর গুলিতে তিনি নিহত হন। এ সময় তিনি মুরসি-সমর্থকদের উপর
সেনাবাহিনীর গুলি চালানোর ভিডিওচিত্র ধারণ করছিলেন। তখন একটি বুলেট এসে তাকে গুলিবিদ্ধ করে। মুহূর্তেই নিস্তেজ হয়ে পড়েন তিনি। ওইদিন তিনিসহ ৫১ জন নিহত হয়।
সোমবারের ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে মিসরের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সশস্ত্র হানা থেকে প্রধান কার্যালয় বাঁচাতেই গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছিল সেনারা। অন্যদিকে মুসলিম ব্রাদারহুডের শীর্ষ নেতাদের দাবি, কোনো ধরনের প্ররোচনা ছাড়াই ওইদিন গুলি চালিয়েছিল সেনাবাহনী। ওইদিন ঠিক কী ঘটেছিল তার জলজ্যান্ত প্রমাণ আসিমের ধারণ করা শেষ ভিডিওচিত্রটিতেও রয়েছে। ওই সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন আসিম।
সহকর্মী, আত্মীয় ও বন্ধুদের ভাষ্যমতে, নিজের মৃত্যুর দৃশ্য নিজেই ধারণ করে গেছেন ‍আসিম! মুরসি সমর্থকদের অস্থায়ী ক্যাম্পের পাশে আসিমের রক্তাক্ত ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন পড়ে ছিল।
আসিমের পত্রিকার সাংস্কৃতিক সম্পাদক ‍আহমেদ আবু জেইদ বলেন, সেদিন ভোর ছ’টার দিকে এক ব্যক্তি একটি রক্তাক্ত ক্যামেরা নিয়ে মিডিয়া সেন্টারে এসে বলে আপনাদের একজন সহকর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। এর এক ঘণ্টা পরই আমি খবর পাই যে গোলাগুলির সময় দৃশ্যধারণ করতে গিয়ে আসিমের কপালে গুলি লাগে। ফজরের নামাজের সময় যখন গোলাগুলি শুরু হয় তখন থেকেই দৃশ্য ধারণ করেছিলেন আসিম। তার ক্যামেরার দৃশ্যে অন্তত ১০ জনকে গুলিবিদ্ধ হতে দেখা যায়।
অন্যদিকে মুসলিম ব্রাদারহুডের পক্ষ থেকে বলা হয়, যেহেতু সংঘর্ষ শুরুর প্রথম থেকেই আসিম দৃশ্যধারণ করেছেন। তাই তার ধারণ করা দৃশ্যগুলোই মুরসি-সমর্থকদের নির্দোষ প্রমাণের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
উল্লেখ্য, বিনা উস্কানিতে মুরসি সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে ব্রাদারহুডের পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও সেনাবাহিনীর দাবি, রিপাবলিকান গার্ড সদরদপ্তরে হামলা চালানোর চেষ্টা করা হলেই গুলি চালায় সেনাবাহিনী।
রমজান মাসের শুরুতে বুধবার তাহরির স্কোয়ার ছিল অনেকটাই জনশূন্য। তবু কড়া নিরাপত্তা দেশ জুড়ে। মিসরের ভবিষ্যত্ কোন পথে? সেদিকেই তাকিয়ে আছে সারা বিশ্ব।

,
Powered by Blogger.