সিলেটের তিন্নি-মুন্নির নতুন বেসামাল কাহিনি

মদ-বিয়ার ছাড়া জমে না আড্ডা। নেশা না হলেও হয় না ফুর্তি। নেশায় বুঁদ হয়ে সঙ্গী নিয়ে বেসামাল রাজ্যে হারিয়ে যাওয়া পছন্দ সিলেটের বহুল আলোচিত তিন্নি ও মুন্নির। সিলেটের চায়ের বাগানে সুরম্য বাংলা, এয়ারপোর্ট এলাকার কটেজ কিংবা হোটেল-মোটেলের নিরিবিলি স্থান- সব জায়গায় তাদের পাওয়া যায় নেশাতুর অবস্থায়। সঙ্গী নিয়ে মত্ত থাকা তিন্নি ও মুন্নির বেসামাল অবস্থার নানা চিত্র এখন ইন্টারনেটে স্থান করে নিয়েছে। আর ইন্টারনেটের কারণে সিলেটের যুবকদের কাছে তিন্নি ও মুন্নি বহুল পরিচিত। এ নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে তাদের পরিবার। বেসামাল সাম্রাজ্যের এখন পরিচিত মুখ সিলেটের আলোচিত তিন্নি ও মুন্নি। টাকাওয়ালা পুরুষ পটানোই তাদের একমাত্র পেশা। পুরুষ নিয়ে অভিসারে যাওয়া, পুরুষের সঙ্গে আমোদ-ফুর্তি করা, সবই তাদের কাজ। এই ফাঁদে পা দিয়ে বেশির ভাগ......
প্রবাসীই হয়েছেন প্রতারিত। এখন সিলেটের মানুষের মুখে মুখে রটছে তাদের প্রতারণার নানা কাহিনী।
দুই মাস আগের ঘটনা। সিলেটের জিন্দাবাজার, জগন্নাথপুরের লন্ডন প্রবাসী এক যুবক রেস্টুরেন্ট থেকে বের হন। রেস্টুরেন্টের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল তিন্নি ও মুন্নি। লন্ডন প্রবাসী ওই যুবকের চোখে চোখ পড়তেই হ্যালো বলে সম্বোধন করে তারা। কেমন আছেন জানতে চায়। বলে, আমাদের চিনেন না! গেলো বার আপনার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। এভাবে ওই যুবকের সঙ্গে তাদের কথাবার্তা শুরু। এক পর্যায়ে তারা যুবকের মোবাইল ফোন নম্বর চেয়ে নেয়। এরপর শুরু হয় তাদের কাজ। রাতে কথা শুরু। কয়েক দিন এভাবে চলার পর সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারে একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে ওই যুবককে দাওয়াত দেয়া হয়। কথামতো সে চলে আসে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা। বেশ ঘনিষ্ঠভাব, আন্তরিকতা। এভাবে কয়েক দিন কাটে। একদিন তারা বায়না ধরে স্বর্ণের হার কিনে দিতে।
লন্ডন প্রবাসী ওই যুবক প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ করে একটি হার কিনে দেয়। এরপর থেকে কোন খোঁজ নেই দুজনের। মোবাইল ফোন বন্ধ। এক পর্যায়ে ওই যুবক তাদের পিছু ছেড়ে লন্ডন পাড়ি জমায়। এভাবেই তারা দুজন জিন্দাবাজারে ফাঁদ পেতে রাখে। জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, নয়াসড়কের কয়েকটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টকে তারা প্রবাসী ধরার ফাঁদ হিসাবে বেছে নেয়। তার সঙ্গে সিলেটের ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে। মুন্নির বাড়ি সিলেটের বাইরে। কুমিল্লায়। চার বছর আগে মুন্নি সিলেটে আসে। একটি দুধ কোম্পানির সেলসম্যান হিসেবে সিলেটে তার প্রবেশ। সেলসম্যান হিসেবে কাজ করলেও ফাঁকে ফাঁকে চলে গোপন অভিসার। এ কারণে খুব অল্পদিনে পরিচিতি পায় মুন্নি। সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারের একটি মার্কেটের ওপর বাসায় আরও একটি পরিবারের সঙ্গে থাকে সে। মাসে ১৮ হাজার টাকা ভাড়া ওই ফ্ল্যাটের। এই বাসায় থেকে মুন্নি সিলেটে তার নেটওয়ার্ক বাড়ায়। পরে বিউটি পার্লারে যোগ দেয়। পার্লারের আড়ালে চালিয়ে যায় অনৈতিক কর্মকাণ্ড। আর তিন্নি সিলেটেরই মেয়ে। বাড়ি সিলেট শহরে। কয়েক বছর আগে তিন্নি সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় নির্মিত নাটক ও মডেলিংয়ের জগতে পা বাড়ায়। ‘ধর চোর’ নামে এক নাটকে তিন্নি এক্সট্রা নায়িকা হিসেবে অভিনয় করে। নাটক ও মডেলিংয়ের পথে পা বাড়ানো তিন্নি এক সময় নাটক পরিচালক ও প্রযোজকদের খপ্পরে পড়ে অচেনা জগতে পা বাড়ায়। আর এখান থেকেই তিন্নির ভিন্ন জগতে যাত্রা শুরু। এখন সিলেটের উঠতি তরুণদের কাছে তিন্নি বেশ পরিচিত নাম। মুন্নির সঙ্গে জোট বেঁধে তিন্নিও ঘুরে বেড়ায় সিলেটের ডেটিং স্পট, হোটেল, মোটেল ও বাংলোতে। আর এসব স্থানে বড় বড় পার্টিতে তাদের কদর বেশি। মদ-বিয়ার নেই যে পার্টিতে সেখানে তাদের আনাগোনা কম। জানা গেছে, সিলেটের বিমানবন্দর এলাকার লাখাউড়ার একটি বাংলোতে কয়েক দিন আগে রাত কাটিয়েছে তারা। নগরীর সুবিদবাজার এলাকার এক যুবক মদ, বিয়ার নিয়ে তাদের সঙ্গে আমোদ-প্রমোদে মত্ত হয়ে ওঠে। পরে ওই যুবকের কয়েকজন সহপাঠী বিষয়টি জানার পর ওই বাংলো ছেড়ে চলে আসে। তিন্নি ও মুন্নির বেসামাল সাম্রাজ্যে তারা একা নয়।
সিলেটের আরও কয়েকজন ললনা তাদের সঙ্গে রয়েছে। সিলেটের উঠতি বয়সী যুবকদের ফাঁদে ফেলে সর্বস্বান্ত করার পর পিছু ছাড়ে। এর মধ্যে রয়েছে মনি, টিনা, তিষা, মৌ, শ্যামা, হামিদা, তারিনসহ আরও অনেকে। টিনা ও তিশা দুই বোন। তাদের বাড়ি সিলেট নগরীর শাহী ঈদগাহ এলাকায়। এর মধ্যে টিনার সম্রাজ্য বেশ বড়। সে সিলেট নগরীর বিভিন্ন হোটেল ও মোটেলে অবাধে যাতায়াত করে। কয়েক মাস আগে নগরীর তালতলার এক হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। আর তিশা, মনি ও তারিনসহ আরও কয়েকজন তরুণী সিলেটে ডিজে পার্টির পরিচিত মুখ। পহেলা বৈশাখসহ নানা আনন্দ আয়োজনে তাদের ‘ডিজে পার্টি’ সিলেটে বেশ ‘হট ডিজে’ হিসেবে পরিচিতি পায়। অভিজাত হোটেল ও মোটেলে মদ-বিয়ারের আড্ডায় মেতে বেসামাল রাজ্যে পাড়ি জমানো এই তরুণীরা সিলেটের উঠতি যুবকদের জন্য অশনি সঙ্কেট বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

Powered by Blogger.