ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট হারুন-অর-রশীদের দুই মাসের জামিন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট


আদালতের অনুমতি ছাড়া বিদেশ না যাওয়া, ডেসটিনির সঙ্গে যোগাযোগ না রাখাসহ বেশ কয়েকটি শর্তে ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট হারুন-অর-রশীদের দুই মাসের জামিন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট। আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি ফরিদ আহমদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে তাঁর পক্ষে আইনজীবী আবদুল মতিন খসরু, রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও
দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান শুনানি করেন।
এই দুই মামলায় জামিন আবেদন খারিজ করে নিম্ন আদালতের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে ১৪ অক্টোবর হারুন-অর-রশিদ হাইকোর্টে আপিল করেন। এতে তাঁর জামিনের আরজিও জানানো হয়। এ বিষয়ে গতকাল বুধবার শুনানি শেষে আদালত আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।
পরে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা বলেন, হারুন-অর-রশীদ মামলার ব্যাপারে কোনো বিবৃতি এবং কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন না বলে শর্তে বলা হয়েছে।
খুরশীদ আলম খান বলেন, স্বাস্থ্যগত দিক, সাবেক সেনাপ্রধান ও মুক্তিযোদ্ধা—এসব দিক বিবেচনা করে আদালত শর্তসাপেক্ষে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছেন। শর্তগুলোর মধ্যে ডেসটিনির যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, তাঁদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ না করতে বলা হয়েছে। যদি তিনি শর্ত ভঙ্গ করেন, তাহলে জামিন স্বয়ংক্রিয়ভাবে অকার্যকর হয়ে যাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত ৩১ জুলাই ডেসটিনি গ্রুপের এমডি রফিকুল আমীন ও গ্রুপের প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর কলাবাগান থানায় দুটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আসামিদের মধ্যে ১০ পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রয়েছেন।
সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ থেকে তিন হাজার ২৮৫ কোটি ২৫ লাখ ৮৮ হাজার ৫২৪ টাকা অন্যত্র স্থানান্তরের অভিযোগে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়।
গত ৬ আগস্ট ডেসটিনি গ্রুপের রফিকুল আমীন, হারুন-অর-রশিদ, ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইন, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক গোফরানুল হক ও পরিচালক সাঈদ-উর রহমানকে জামিন দেন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত।
১৩ আগস্ট দুদক এই আদেশের বিরুদ্ধে জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে রিভিশন আবেদন করে। ১২ সেপ্টেম্বর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. আখতারুজ্জামান রিভিশন মঞ্জুর করে জামিন বাতিল করেন। পরদিন আসামিপক্ষে ভারপ্রাপ্ত বিচারকের ক্ষমতা চ্যালেঞ্জ করলে বিচারক জহুরুল হক ওই আদেশ বাতিল করে পুনরায় শুনানির আদেশ দেন। ৫ সেপ্টেম্বর ১৬ জন ও ৯ সেপ্টেম্বর একজন জামিন পান। এর মধ্য দিয়ে ওই দিন মামলার ২২ আসামির সবাই জামিনে মুক্তি পান। ওই আদেশের বিরুদ্ধে দুদক রিভিশন করে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জহুরুল হক সব আসামির জামিন বাতিল করে দেন।
গতকাল ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমীন ও ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইনকে নয় দিন করে ১৮ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

Powered by Blogger.