যৌনতায় ভর করেই বাজার মাত

  পক্ষে: যৌনতায় ভর করে, যৌন সুড়সুড়ি দিয়ে, আদি রসাত্মক যৌন ইঙ্গিতবাহী সংলাপের মায়াজালে দর্শকদের উসকে দিয়ে, যৌন সঙ্গমের দৃশ্য বার বার দেখিয়ে, মিডিয়ায় প্রচার পেতে তা নিয়ে ঢাক পিটিয়ে মেকি বিতর্ক তৈরি করে বাজার গরম করছেন এক শ্রেণির পরিচালক, প্রযোজক ও পরিবেশক
। সমকামিতা, বহুগামীতা, সখের বেশ্যাবৃত্তি, এসকর্ট সার্ভিস, গ্রুপ সেক্স, যৌন বিকৃতি ইত্যাদি এখনকার বাংলা ছবির থিম। “শিল্পের প্রয়োজনে”, “শিল্পীর পেশার স্বার্থে”, “বাস্তব দেখাতে” এসব নাকি ছবিতে রাখতেই হয়-এমনই বাঁধা বুলি ছবির জগতের বড় সংখ্যার লোকজনের। যিনি তাঁদের কথায় সায় দেবেন তিনি খুব আলট্রামডার্ন এবং সাহসী। না দিলেই ভেড়ুয়া রক্ষণশীল দর্শক। আবার এক শ্রেণির পাপী মনের দর্শক এসব “স্মার্ট” ছবি দেখেন লুকিয়ে চুরিয়ে পর্ন ছবি দেখার মতো। আলোচনা করেন শুধু ঠেকে। তাছাড়া আজকালকার বেশিরভাগ বাংলা ছবি হয় তেলুগু, তামিল বা সাউথ কাটিং ছবির বাজে নকল। না হয় সাহসিকতা ও শিল্পের অজুহাতে গালাগাল, খিস্তির বন্যা ছুটিয়ে, অপ্রয়োজনীয় যৌন সঙ্গম দেখিয়ে পর্ন ছবির সমতুল। এই দুটো ট্রেন্ডই ব্যাপক বাড়ছে। তাই এতে ভর করেই বাজার মাত করতে চাইছে বাংলা ছবি।বিপক্ষে: বাংলা ছবির সবরকমের দর্শকের কথা মাথায় রেখেই নানা ধরনের ছবি ভাল ব্যবসা করছে। ছ-সাত বছর আগে পাতালঘর, একমুঠো ছবি, অন্তরমহল, দোসর, দি লাস্ট লিয়র, খেলা, সব চরিত্র কাল্পনিক, আবহমান, সানগ্লাস, নৌকাডুবি থেকে হাল আমলের অন্তরবাস, ছ-এ ছুটি, রহস্য, পা মা গা রে সা, তিনমূর্তি, নটবর নট আউট, সকালের রং, হিটলিস্ট, রয়েল বেঙ্গল রহস্য, ভোরের পাখি, গোঁসাইবাগানের ভূত, বেস্টফ্রেন্ড, মৌবনে আজ, বাইশে শ্রাবণ, এক টুকরো চাঁদ, গোরস্থানে সাবধান, মনের মানুষ, ল্যাবরেটরি, স্থানীয় সংবাদ, স্বয়ংসিদ্ধা, ভূতের ভবিষ্যৎ, ইচ্ছে, হেমলক সোসাইটি, গোড়ায় গণ্ডগোল এগুলো কি সবই যৌনতা নির্ভর সিনেমা? যদি হয়, ঠিক কোন ছবিটা তাহলে যৌনতা দোষে দুষ্ট? উপরের তালিকায় থাকা ৮০ শতাংশ সিনেমাই ভাল ব্যবসা করেছে। লাভের মুখ দেখেছে। তাহলে আজ ‘তিনকন্যা’ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর যৌনতা নিয়ে এত কথা উঠছে কেন? গত পাঁচ বছরের পরিসংখ্যান বলছে, যৌনতায় ভর করে নয়। মানুষ, সমাজ ও দেশের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বহু বাংলা ছবি রাজ্যে এবং বিদেশে ভাল ব্যবসা করেছে। তাই সেই সব ছবির একটা বছরভর বাজার, দর্শক ও চাহিদা তৈরি হয়েছে।

Powered by Blogger.