প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সংবাদ সংগ্রহের জন্য সাংবাদিকদের ডাকা হচ্ছে না

দুই দিন ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সংবাদ সংগ্রহের জন্য আগের মতো সাংবাদিকদের ডাকা হচ্ছে না। শুধু সরকারি মালিকানাধীন বিটিভি ও বাসস এবং বেসরকারি সংবাদ সংস্থা ইউএনবি ও অনলাইন সংবাদপত্র বিডিনিউজ ২৪ ডটকম সংবাদ সংগ্রহের সুযোগ পাচ্ছে।
কয়েকটি টিভি চ্যানেলের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক প্রথম আলোর প্রশ্নের জবাবে বলেন, সাধারণভাবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস শাখা থেকে প্রতি রাতে প্রধানমন্ত্রীর পরদিনের অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানানো হতো। এর মধ্যে কোনো অনুষ্ঠানে টিভি চ্যানেলের প্রতিবেদক ও
ক্যামেরা ক্রু দুজনকেই এবং কোনো অনুষ্ঠানে শুধু ক্যামেরা ক্রুকে যাওয়ার জন্য বলা হতো।
তাঁরা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের সংবাদ সংগ্রহের জন্য প্রতিটি টিভি চ্যানেলের দুজন প্রতিবেদক ও দুজন ক্যামেরা ক্রু নির্ধারিত আছেন। তাঁদের প্রত্যেককে ছয় মাস মেয়াদে বিশেষ নিরাপত্তা পাস দেওয়া হয়। ছয় মাস পর আবার নতুন পাস দেওয়া হয়। এই নির্ধারিত সাংবাদিকেরাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস শাখা থেকে পাঠানো কর্মসূচি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সংবাদ সংগ্রহ করতেন।
কিন্তু গত সোমবার রাত থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস শাখা প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের কর্মসূচি পাঠানো বন্ধ রেখেছে। ফলে টিভি চ্যানেলগুলো মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত গাজীপুর ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সংবাদ সংগ্রহ করতে পারেনি। বিটিভিতে ওই অনুষ্ঠানের খবর দেখে তাঁরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ওই সংবাদ সংগ্রহ থেকে তাঁদের বাদ রাখা হয়েছে।
ওই দিন চ্যানেলগুলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর মতবিনিময় অনুষ্ঠানে সাংবাদিকেরা এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, এ ব্যাপারে সরকারের আনুষ্ঠানিক কোনো নির্দেশনা নেই। অনানুষ্ঠানিক নির্দেশনা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
টিভি সাংবাদিকেরা জানান, আগের দিনের মতো মঙ্গলবারও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস শাখা থেকে তাঁদের কাছে কোনো কর্মসূচি পাঠানো হয়নি। ফলে গতকাল বুধবারও তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর কোনো অনুষ্ঠানের সংবাদ সংগ্রহ করতে পারেননি। আজ বৃহস্পতিবার তাঁরা বিষয়টি সম্পর্কে তথ্যমন্ত্রীর কাছে আবারও জানতে চাইবেন।
গতকাল পত্রিকার সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে তথ্যমন্ত্রীর মতবিনিময় অনুষ্ঠানেও বিষয়টি আলোচনায় আসে। কিন্তু তথ্যমন্ত্রী স্পষ্ট কিছু বলেননি।
বিষয়টি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অবস্থান জানার জন্য রাতে যোগাযোগ করা হলে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ এবং অন্য কয়েকজন কর্মকর্তা এড়িয়ে যান।
তবে সরকারি সূত্রে জানা গেছে, গণমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সংবাদ প্রকাশের ব্যাপারে সরকার ক্ষুব্ধ। সরকার মনে করে, প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে অগ্রাধিকার নির্ণয় ও গুরুত্ব নির্ধারণ করা হয় না। প্রধানমন্ত্রী নিজেও এ ব্যাপারে নাখোশ বলে ওই সূত্র জানিয়েছে।
সূত্রগুলো জানায়, এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানানো আরও কিছুদিন বন্ধ রাখা হতে পারে।

Powered by Blogger.