চিত্রনায়ক আমিন খানের সেই গেটরেমিটেন্সের বিরুদ্ধে দিনাজপুরের বিরামপুরে ৮৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আদালতে মামলা-অনেক স্টুডেন্ট Hon’s 3rd year পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারেনি ডাউন লেভেলের অব্যাহত চাপের মুখে পালিয়ে বেড়াচ্ছে তারা



দিনাজপুরে অনলাইনে টাকা উপার্জনের ভুয়া কোম্পানি গেট রেমিট্যান্স আউটসোর্সিং লিমিটেড কোম্পানির নামে ৮৪ লাখ টাকা প্রতারণার অভিযোগে দিনাজপুর আদালতে গতকাল মামলা হয়েছে মামলার বাদি নবাবগঞ্জ উপজেলার মতিহারা গ্রামের মো. রাশেদ রেজা আদালত অভিযোগটি বিরামপুর থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গণ্য করতে আদেশ দেন আসামিরা হচ্ছেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার শরীফ মাহমুদ, শাহীন মাহমুদ রাজধানীর নাখালপাড়ার বাসিন্দা এনামুল হক সুজা
তিনজন নিজেদের গেট রেমিট্যান্স আউটসোর্সিং লিমিটেড ব্যবস্থাপনা পরিচালক মালিক হিসেবে পরিচয় দেন ‘গেট রেমিটেন্স আউট সোর্সিং লিঃ’ নামের এই প্রতিষ্ঠানটি ইন্টরনেটে বিজ্ঞাপন দেখে ডলার আয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রংপুর অঞ্চলের প্রায় ৩ হাজারেরও অধিক বেকার যুবক/যুবতীদের নিকট থেকে একাউন্ট প্রতি ১১ হাজার ২’শ টাকা নিয়ে কাজ শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটি এ অঞ্চলের বেকার যুবকদের অধিকহারে আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আমিন খানকে হেলিকপ্টারযোগে রংপুরে নিয়ে এসে স্থানীয় টাউন হলে একটি জাঁকজমর্কর্পূন অনুষ্ঠান করে। অনুষ্ঠানে চিত্রনায়ক আমিন খান কোম্পানীর কিছু একাউন্টধারীদের মাঝে কম্পিউটার ও ল্যাপটপ উপহার দিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেন এবং উক্ত কোম্পানীতে তিনি নিজেও এভাবে একাউন্ট করে প্রতি মাসে মোটা অংকের অর্থ উপার্জন করছেন বলে জানান। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন আমার কোম্পানী বা আমি  যদি আপনাদের একটি  আয়ের সহজ সরল পথ দেখাই তবে আপনারা কি সেই পথ ধরে হাটবেন না। তার এহেন বক্তব্য এবং উক্ত কোম্পানীতে সংশ্লিষ্টতার কথা জানতে পেরে অন্ধ বিশ্বাসে দিনাজপুর, রংপুর, লালমনিরহাট এবং রাজশাহী অঞ্চলের হাজার হাজার বেকার যুবক বাড়ির বিভিন্ন মালামাল বিক্রি করে এবং এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে কোম্পানীতে যোগদান করে। এভাবে কোম্পানীটি এ অঞ্চলে কয়েকবার চিত্র নায়ক আমিন খানকে নিয়ে এসে রংপুর ও লালমনিরহাটে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ অঞ্চলের হাজার হাজার বেকার যুবকদের আকৃষ্ট করে।

মোটা অংকের আয়ের লোভে অনেকে বাড়ির বিভিন্ন মালামাল বিক্রি করে কম্পিউটার ও মডেম কিনে কাজ চালাতে থাকেন। এভাবে কিছুদিন কাজ চালানোর এক পর্যায়ে হঠাৎ করে কোম্পানী তার সদস্যদের প্রতিশ্রুতিকৃত টাকা দেয়া বন্ধ করে দেয়। ফলশ্রুতিতে একউন্টধারীরা ঢাকায় গিয়ে ফার্মগেটের হেড অফিসে যোগাযোগ করলে কোম্পানীর সিও শরিফ মাহমুদ গা ঢাকা দেয়। এ অবস্থায় কোম্পানীর জিএম আলমগীর কবির তাদের পেমেন্ট দেয়ার মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিলেও একাউন্টধারীদের মনে সন্দেহের ‍সৃষ্টি হলে তারা গত মে মাসে তেজগাও থানায় একটি জিডি করেন। জিডির প্রেক্ষিতে তেজগাও থানা পুলিশ কোম্পানীর সিও শরীফ মাহমুদ ও জিএম আলমগীর কবিরকে ডেকে নিয়ে উভয় পক্ষের নিকট বিস্তারিত ঘটনা শুনে হিসেব নিকেশ শেষে নিয়মিত অফিস পরিচালনা এবং অনতিবিলম্বে গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধের মুচলেকা নিয়ে দু’জনকে ছেড়ে দেয়। কিন্ত এর কয়েকদিন পরেপ্রতারক শরীফ মাহমুদ হেড অফিসের আসবাবপত্র বিক্রি করে গা ঢাকা দেয়। ফলে বিপাকে পড়ে যায় কোম্পানীর ৩ হাজার একাউন্টধারী।
কোম্পানীর প্রতিশ্রুতিকৃত টাকা আয় করতে না পারায় ডাউন লেভেলের একাউন্টধারীরা চাপ দিতে থাকে তাদের আপ লেভেল এর লিডার তথা একাউন্টধারীদের উপর। ডাউন লেভেলের অব্যাহত চাপের মুখে এক পর্যায়ে আপ লেভেলের লিডাররা নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।অনেক স্টুডেন্ট Honours 3rd year পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারেনি ডাউন লেভেলের অব্যাহত চাপের মুখে পালিয়ে বেড়াচ্ছে তারা। এছাড়া অনেক চাকুরীজিবীও তাদের নিজ কর্মস্থলে যেতে পারছে না।
 
প্রতারিত গ্রাহকরা এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
 
ঈতিমধ্যে লালমনিরহাটের আদালতে একটি মামলা দায়ের হয়েছে।মামলায় চিত্র নায়ক আমিন খান, কোম্পানীর চেয়ারম্যান শাহীন মাহমুদ, সিও শরীফ মাহমুদ, জিএম আলমগীর কবির এবং তার স্ত্রী কোম্পানীর এমডি কামরুন্নাহার সবিতাকে আসামী করা হয়েছে। এছাড়া আরও অন্যান্য স্থানে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
                                      


Powered by Blogger.