বাবা-মা খুনের বর্ণনা দিলো ৮ম শ্রেণী থেকেই মাদকাসক্ত ঐশী

পিতা-মাতাকে হত্যার বর্ণনা দিলো ঐশী। গোয়েন্দাদের কাছে ১৭ বছর বয়সী এ কিশোরী বলেছে, কিভাবে সে তার পিতা-মাতাকে হত্যা করে। সাংবাদিকদের কাছে একথা জানিয়েছেন, ডিসি ডিবি মনিরুল ইসলাম।
অষ্টম শ্রেণী থেকেই মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে ঐশী। এমন তথ্যও দিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আত্মীয়স্বজন
ও পরিচিতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ডিবি পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
ডিবির যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘রিমান্ডের প্রথম দিন চলছে। এ ঘটনায় আমরা ওই তিনজনসহ আরও কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। এদের মধ্যে ঐশীর বন্ধু-বান্ধবী, নিকটাত্মীয়, বাসার দারোয়ান, বাবার কলিগদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।’
তিনি জানান, শুধু হত্যার পরিকল্পনাই নয়, এতে ঐশীর সম্পৃক্ততার প্রমাণও পাওয়া গেছে। তবে সে ছাড়া আরো কতোজন হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল তা এখনও জানা যায়নি। হত্যার আগে কফির সাথে দশটি ঘুমের টেবলেট মিশিয়ে খাইয়ে বাবা-মাকে অচেতন করে ঐশী। টেবলেটগুলো সে কোথা থেকে সংগ্রহ করেছে তাও উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।
মনিরুল ইসলাম আরো জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঐশী জানিয়েছে, ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর পর বাবা তার রুমেই ঘুমাচ্ছিলেন। আর মা ও ছোটভাই ওহী মাস্টার বেডরুমে ঘুমাচ্ছিল। মাকে মারার সময় বাবা জেগে ওঠেন। তবে তিনি ঘুমের ঘোরে থাকায় বুঝে উঠতে পারেননি। ওইসময় ওহী জেগে ওঠায় তাকে বাথরুমে আটকে রাখা হয়। হত্যার পর বাবা-মার মরদেহ কাঁধে করে বাথরুমে নিয়ে যায় ঐশী ও কাজের মেয়ে সুমি। হত্যায় খঞ্জরের (দুই দিকে ধারওয়ালা ছুরি) মতো একটি অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলে প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।
ঐশীর বন্ধু পারভেজকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানান মনিরুল। পারভেজ তদন্ত কর্মকর্তাদের জানিয়েছে, ঐশীর সঙ্গে তার দুই মাসের পরিচয়। ঐশী ড্রাগ অ্যাডিকটেড ছিল। এর মধ্যে ইয়াবা ও অন্যান্য ড্রাগও নিত সে। ঐশী মাঝেমধ্যেই আত্মহত্যার চেষ্টা করতো বলেও তথ্য পাওয়া গেছে।
তবে রাতে তার দুই বন্ধু গাড়ি নিয়ে বাসায় ঢোকে- ঐশীর এমন স্বীকারোক্তির কোনো রেকর্ড বাসার দারোয়ানদের কাছ থেকে পুলিশ পায়নি বলে জানান তিনি।
ঐশীকে রিমান্ডে নেয়ায় তার বয়স নিয়ে যে বিতর্ক শুরু হয়েছে সে প্রসঙ্গে যুগ্ম-কমিশনার বলেন, ‘তার জন্ম তারিখের কোনো রেকর্ড এখনও পাইনি। সেই সঙ্গে তার পাসপোর্টও আমাদের কাছে এখনও আসেনি। তবে পারিবারিকভাবে জানা যায়, ঐশীর জন্ম ১৯৯৫ সালে।’
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার চামেলীবাগের একটি ফ্ল্যাট থেকে মাহফুজ ও তার স্ত্রী স্বপ্নার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দুই সন্তান ঐশী ও ওহী এবং গৃহকর্মী সুমিকে নিয়ে ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন তারা।

,
Powered by Blogger.