লোক ভাড়া করে জামাইকে খুন করান শাশুড়ি, দাবি র‌্যাবের

ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৫৬ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম মজুমদারকে তার শাশুড়ি লোক ‘ভাড়া’ করে খুন করেন বলে দাবি করেছে র‌্যাব।

বুধবার ঢাকায় র‌্যাবের হেড কোয়ার্টারে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজনকে হাজির করে র‌্যাব
এ দাবি করে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম মজুমদার খুনের সাত মাস পর তার শাশুড়িসহ চারজনকে মঙ্গলবার রাতে ঢাকা ও গাজীপুরে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কেটিএম হাবিবুর রহমান বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে ঢাকা ও গাজীপুরে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।’

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- রফিকুলের শাশুড়ি লিপি আক্তার, মো. আলী মোহাব্বত (৩৬), ফজলুর রহমান (৫৩) ও মিজানুর রহমান মন্টু (৪১)।

তবে সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তারকৃতদের কেউ কথা বলেননি।

হাবিবুর রহমান বলেন, ‘লিপি আক্তার জিজ্ঞাসাবাদে লোক ভাড়া করে রফিকুলকে খুন করানোর বিষয়টি স্বীকার করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে লিপি বলেছেন- তার ছোট মেয়ের স্বামী রফিকুল অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোরপুর্বক অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন তার সঙ্গে। এ কারণে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটান তিনি।’

মূলত মহব্বতের সঙ্গেই এই অর্থ লেনদেন হয় বলে র‌্যাবকে জানিয়েছেন লিপি।

র‌্যাব কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে ফজলুর রহমান একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য। তিনি র‌্যাবেও ছিলেন। এ কারণে রফিকুল অপহৃত হলে গুজব ছড়ানো হয় যে র‌্যাবই তাকে তুলে নিয়ে গেছে।’

অবশ্য গ্রেপ্তারের পর বুধবার সকালে বিএনপি নেতা রফিকের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর থেকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা ঝরা আরটিএনএন- কে বলেন, ‘দুই মাস আগে গত ৩০ মে আমার মাকে স্থানীয় শেখপাড়া বাজার থেকে র‌্যাবের পরিচয়ে অপহরণ করা হয়। কিন্তু এরপর আমরা তার আর কোনো খোঁজ পায়নি।’

তিনি বলেন, ‘স্বামী খুনের পর আমার মানসিক অবস্থা খুবই খারাপ। এর ওপর আমার মাকে অপহরণ করা হয়। আর আজ তাকে সেই খুনের দায়ে গ্রেপ্তার দেখানো হলো। এটা খুবই বিস্ময়কর। কিছু বলার ভাষা আমার নেই। সব কিছু আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছি।’

উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৭টার দিকে র‌্যাবের পরিচয়ে কালো পোশাকধারী ৭/৮ জন লোক রফিকুলকে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার আনন্দনগর গ্রামের শ্বশুরবাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাতে হ্যান্ডক্যাপ অবস্থায় তার লাশ পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার বাগুনহাট ইউনিয়নের আদাবাড়িয়া গ্রামের জিকে ক্যানেলের পাশে পিঁয়াজের ক্ষেত থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

এ হত্যাকাণ্ডের পর ১৩ জানুয়ারি নিহতের ছোট ভাই মফিজুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৬/৭ জনের নামে শৈলকুপা থানায় হাজির হয়ে মামলা (মামলা নং-১০) দায়ের করেন।

আর মামলার পাঁচ মাস পর গত ৩০ মে নিহত বিএনপি নেতা ও বঙ্গবাজার মার্কেটের সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম মজুমদারের শাশুড়ি লিপি বেগমকে (৫৭) অপহৃত হন। লিপি খাতুন আনন্দনগর গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী।

,
Powered by Blogger.