২৪ ঘণ্টার মধ্যে পারভেজকে না পেলে আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে গুডবাই, এমপি হওয়াকে আমি থু থু দেই

নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা সাবেক এমপি শামীম ওসমান বলেছেন, ২৪ ঘন্টার মধ্যে যুবলীগ নেতা পারভেজকে না পেলে শেখ হাসিনার পা ছুঁয়ে সালাম করে আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে গুডবাই
জানাবো। সেই দিন আমার জন্য হবে অনেক কষ্টের। কারণ আমি আমার মা-বাবা, স্ত্রী সন্তানের চেয়ে নেত্রীকে সময় বেশি দিয়েছি। নেত্রীর কথায় অনেক ধৈর্য্য ধরেছি। কিন্তু সন্তানতুল্য নিজের দলের কর্মী-সমর্থকদের গুম করে পরে লাশ ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। নেতা-কর্মীদের জানাজা দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে গেছি। আর পারছি না। নেতা-কর্মীদের লাশের ওপর রাজনীতি করে এমপি হওয়াকে আমি থু থু দেই।মঙ্গলবার বিকালে সরকারি তোলারাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে জেলা যুবলীগের সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম ভুঁইয়া পারভেজের গুমের ঘটনায় এক কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিনিয়র নেতাদের উদ্দেশ্যে শামীম ওসমান আরো বলেন, এতদিন আপনারা আমার কথায় চলেছেন। এখন থেকে আমি আপনাদের কথায় চলবো। এ জেলায় নিষ্পাপ ত্বকি হত্যা নিয়ে অনেক নাটক হয়েছে। কোন প্রমাণ ছাড়া বার বার আস্তিক নাস্তিকের দল আমাদের খুনী বলেছে। তারা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমাদের বাপ- দাদাকে গালাগাল করেন। ওরা মনে করেছে আমরা ভয় পেয়েছি। ভয় পাইনি। নেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে চুপ রয়েছি। আর চুপ থাকবো না। কারণ মাকসুদকে গুম করে হত্যা করা হয়েছে। তাও আমাদের দল ক্ষমতায় থাকতে। বিএনপি আমলে আমাদের মারে, আওয়ামী লীগ এলেও আমাদের মারে। যেহেতু সব আমলেই মরছি। আর ঘরে বসে থাকবো না। এবার বীরের মত মরবো। এসময় তিনি আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে যদি মায়ের দুধ খেয়ে থাকিস তাহলে রাস্তায় নামিস। আর থানায় যাবো না। আদালতেও যাবো না। তিনি শতভাগ নিশ্চিত হয়ে বলেন, পারভেজকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে চুক্তির মাধ্যমে খুনের উদ্দেশ্যে গুম করা হয়েছে। ত্বকি হত্যার বিষয়ে তিনি বলেন, বলা হচ্ছে, আমরা ত্বকিকে হত্যা করেছি। কোথায় হত্যা করেছি একটা প্রমাণ দেক। তাহলে আমরা স্বেচ্ছায় কারাবরণ করবো।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান। বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি চন্দন শীল, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফ উল্লাহ বাদল, সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াসিন, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, সোনারগাঁও থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সামসুল ইসলাম ভুঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই, রূপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান ভুঁইয়া, বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রশীদ, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত বাদল, যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, শহর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি নাজমুল আলম সজলসহ মূল ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
প্রসঙ্গত শনিবার বিকাল ৪টায় ঢাকার গুলশান থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কয়েকজন অস্ত্রধারী পারভেজকে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ তার পরিবারের। এরপর থেকেই পারভেজ নিখোঁজ রয়েছে।

,
Powered by Blogger.