মেয়ের অঙ্গে জিনস, তাই পাড়ায় রক্তগঙ্গায় খুন হল মা

কুড়ি বছরের তরুণী। কলেজ শেষে খুঁছে চাকরি। শখ করে পড়েছিল জিনস। তার জেরে বয়ে গেল রক্তগঙ্গা। আহত কুড়ি জন। নিহত ওই তরুণীর মা। এই ঘটনা উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের।

এই শহরের দিল্লি গেট থানা এলাকার জ্বালাজিপুরম এলাকার বাসিন্দা দুবে পরিবার। সংসারে বাবা মা এবং চার মেয়ে। তাদের মধ্যে একজন,গুঞ্জনের জিনস পরা নিয়ে এত কাণ্ড।

বরাবর গুঞ্জনের পোশাক নিয়ে টীকা টিপ্পনি করত প্রতিবেশী ফুলমতি। তাকে জিনস পরতে দেখে বেড়ে যায় তার মাত্রা। কথা শোনার হাত থেকে রেহাই পাননি গুঞ্জনের বাবা-মা'ও। সহ্য করতে না পেরে রাগ চড়ে যায় গুঞ্জনের। উল্টে ফুলমতিকে বলে,আমার পোশাক নিয়ে ভাবতে হবে না। আপনি নিজের চরকায় তেল দিন।

ব্যস! এতেই আগুনে যেন ঘি পড়ে। অভিযোগ,এর জেরে লোকজন জড়ো করে গুঞ্জনদের বাড়িতে চড়াও হয় ফুলমতি। সবার হাতে লাঠি সড়কির পাশে ছিল আগ্নেয়াস্ত্রও। দু পক্ষের মধ্যে প্রথমে হাতাহাতি পরে শুরু হয় মারপিট।

গুঞ্জনের বাবা পেশায় ড্রাইভার নেত্রপাল দুবে, মা কমলেশকে টেনে ঘর থেকে বের করে হামলাকারীরা। লাঠি,রড দিয়ে চলে বেধড়ক মারধর। বাদ যায়নি গুঞ্জন আর তাঁর বোনরাও। এই তাণ্ডবে দুবে পরিবারের পাশে দাঁড়ান বাকি প্রতিবেশী। ক্রমে জটিল হয় পরিস্থিতি।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। ততক্ষণে রক্তের সাগরে ভাসছেন গুঞ্জনের মা। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। ময়নাতদন্ত করে তাঁর মৃত্যুর আসল কারণ জানার চেষ্টা চলছে। তবে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে মাথায় ভারী আঘাতের জন্য তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।

আহত অবস্থায় গুঞ্জনকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। ঘটনার তদন্ত শুরু করে ফুলমতি এবং তার সঙ্গী দুই হামলাকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে ফুলমতির বিরুদ্ধে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বিভিন্ন প্রতিবেশীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে সে। দুর্মুখ বলে পুরনো অপবাদ রয়েছে তার।

প্রতিবেশীদের সহমর্মিতাও পেয়েছে গুঞ্জন এবং তার পরিবার।

কদিন আগেই মধ্যপ্রদেশের এক বিজেপি নেতা মন্তব্য করেছিলেন,মহিলারা জিনস পরলে সমাজে অপরাধ বাড়ে। আলিগড়ের এই ঘটনায় তো এবার এই ধরনের নারীবিদ্বেষী নেতারা এবার কলার তুলে ঘুরবেন!

,
Powered by Blogger.