লালমনিরহাটে যুবতীর পর্ণোভিডিও

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের ইউএসডিও- এর টেকনিক্যাল অফিসার পদে চাকুরীরত এক যুবতিকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফারুক হোসেন কর্তৃক আপত্তিকর অশ্লীল ভিডিও ফুটেজ তৈরি সহ বাজারে ছাড়ার অপরাধে ইয়াছিন রিজু(২১)নামের এক
যুবককে গত মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ।
এসময় প্রকৃতি কম্পিউটার ও বিলাস স্টুডিও’তে হানা দিয়ে পর্নগ্রাফি’র ব্যবহৃত কম্পিউটার সামগ্রী, সিপিও সহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ৫জনকে আসামী করে কালীগঞ্জ থানায় ‘নারী নির্যাতন ও পর্নগ্রাফি আইনে’একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার মদাতি ইউনিয়নের মৌজাশাখাতি গ্রামের মতিউর রহমান ওরফে বাবু মাষ্টারের লম্পট পুত্র ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফারুক হোসেন(৪৭) এর চাচাতো ভাই মফিজুল ইসলাম মিজুর সাথে প্রায় ৭ বছর আগে বিয়ে হয় চন্দ্রপুর ইউনিয়নের জনৈক কলি (ছদ্মনাম) নামের এক ষোড়শীর। বিয়ের পরপরই লম্পট ফারুকের সাথে ওই মেয়েটির অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বছর তিনেক আগে মিজুর রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু ঘটে। স্বামীর অবর্তমানে তাদের সম্পর্ক আরও গভীর হতে থাকে। বছর দুয়েক আগে সাবেক ওই ছাত্রলীগ নেতার বদৌলতে চন্দ্রপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের ইউএসডিও-এর টেকনিক্যাল অফিসার পদে চাকরি নেয় কলি। চাকুরী করার সুবাদে উপজেলা সদরে, অফিসে যাতায়াতের অজুহাতে ফারুক কলিকে নিয়ে বেড়িয়েছে বিভিন্ন স্থানে। হোটেলে রাত্রি যাপন করেছে স্ত্রীর পরিচয়ে। ছবি তোলার নাম করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দিয়েছে স্টুডিও’র ‘ডাকরোমে।’ লিপ্ত হয়েছে দৈহিক মনোরঞ্জনের আপত্তিকর রোমান্টিক ঘটনায়। কলির অজান্তেই হয়তো আপত্তিকর মূহুর্তের দৃশ্যগুলো ধারণ করেছে ভিডিও ক্যামেরায়।
কলির বাবা কফিল উদ্দিন দাবি করেছেন,‘ফারুক কলিকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হয়ে ব্লাকমেইল করার জন্যই মেয়েকে নেশা জাতীয় কোনকিছু খাদ্যের সাথে খাওয়ায়ে এসব জঘন্য দৃশ্যপটের অবতারণার মাধ্যমে ভিডিও ধারণ করে বাজারে ছেড়েছে। আর, এসব ‘ভিডিও ফুটেজ’ তৈরিতে সহায়তা করেছে তুষভান্ডারের বিলাস ডিজিটাল স্টুডিওর মালিক বাদল চন্দ্র রায় এবং প্রকৃতি ডিজিটাল স্টুডিওর মালিক লিটন সরকার।’
ঘটনার মূল হোতা ফারুক ও স্টুডিওর মালিক সহ ৫ জনকে আসামী করে ‘নারী নির্যাতন ও পর্নগ্রাফি’ আইনে কলির বাবা কফিল উদ্দিন বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার রাতে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা রুজু করেন। ওই রাতেই পুলিশ তুষভান্ডার বাজারস্থ প্রকৃতি ডিজিটাল স্টুডিও থেকে মালিকের ছোট ভাই এবং মামলার ৩নং আসামী ইয়াছিন রিজু(১৬) কে গ্রেফতার করে।
এদিকে বিলাস ডিজিটাল স্টুডিওর মালিক বাদল চন্দ্র রায় ও বাজারজাত করনের মূল হোতা মোকছুদার রহমান পুলিশের আগমন টের পেয়ে পালিয়ে যায়। উভয় স্টুডিও’র কম্পিউটার সামগ্রী, সিপিও সহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি পুলিশ জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ওসি আমিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,অপরাধের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চলছে। তবে, ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহের জন্য একটি কুচক্রিমহল থানায় জোর চেষ্টা চালাচ্ছে বলে দাবি করেছে মামলার বাদী। ন্যাক্কারজনক এ ঘটনায় এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে এবং এর সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন তারা।

,
Powered by Blogger.