প্রবাসী তরুণীর অজানা কাহিনী
সংগ্রামী জীবনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বাংলাদেশী বংশোদভূত লামিয়া অ্যান হক। ১৯ বছর বয়সী
এই তরুণী জন্মের পর থেকেই শিখেছে সংগ্রাম করতে। যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিদেশ-বিভূঁইয়ে পুরো সংসারের দায়িত্ব নিয়েছে সে। দুই ভাইবোনকে স্কুলে নেয়া-আনার দায়িত্ব
তার। মা ম্যাকডোনাল্ডের দোকানে পার্ট টাইম কাজ করেন। পিতা সড়ক দুর্ঘটনায় শয্যাশায়ী। এমন অবস্থায় পুরো সংসার চালানোর দায়িত্ব পড়ে এতটুকু একটি মেয়ের ওপর। এর ভিতর দিয়েই নিজের পড়াশোনা চালিয়ে নিয়েছে ও। একটি-দু’টি করে ডলার জমা করেছে। সেই অর্থে কয়েকটি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির দরখাস্ত করেছে। শেষে খুলে গেছে ওর কপাল। পেয়েছে অভিজাত প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ। শুধু তা-ই নয়, পুরো স্কলারশিপ নিয়েই পড়ার সুযোগ মিলেছে এর। এ খবর যখন জানতে পারে তখন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেঝেতেই আনন্দে বেহুঁশ হয়ে পড়ে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জ্যাকসনভিল। এতে আরও বলা হয়, লামিয়া অ্যান হকের জন্ম বাংলাদেশে। তার পিতার নাম আয়নুল হক। তিনি উন্নত ভবিষ্যতের আশায় মেয়ে, স্ত্রীকে নিয়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু ভাগ্য প্রসন্ন হয় নি। সেখানে যাওয়ার পর আয়নুল হকের দু’বার বাইপাস সার্জারি করাতে হয়। তখন তাকে রাখা হয় একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে)। তার নাকে ঢুকিয়ে দেয়া হয় নল। পিতা যখন জীবনের সঙ্গে এভাবে লড়ছেন তখন কাচের জানালা দিয়ে তার দিকে তাকিয়ে করিডোরে দাঁড়ানো লামিয়া চোখের পানি ফেলেছে নীরবে। পিতার ওই অবস্থা কোনভাবেই মানতে পারেনি ও। বার বার চিকিৎসকের কাছে ছুটে গিয়ে ফলোআপ জানতে প্রশ্ন করেছে। কিন্তু তারা কোন উত্তর দেয়নি। এতে তার ভয় আরও বেড়ে যায়। তখন তার বয়স মাত্র ৬ বছর। আয়নুল হকের অপারেশন অবশেষে সফলতার সঙ্গে শেষ হয়। সেই থেকে লামিয়া প্রতিজ্ঞা করে পড়াশোনা শিখে কার্ডিয়াক সার্জন হবে। অস্ট্রেলিয়ায় তার পরিবার নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে পার করছিল। এভাবে কেটে যায় ১০ বছর। অস্ট্রেলিয়ায় কাজের সুযোগ সীমিত হয়ে আসে। তখন আয়নুল হক সপরিবারে সেখান থেকে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে কাজের সন্ধানে। যান বিজনেস ভিসায়। ফলে আয়নুল হক শুধু ফুলটাইম কাজের সুযোগ পেলেন। কিন্তু অল্প কয়েক দিনের মধ্যে তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় পড়েন। হাঁটুতে ভীষণ চোট লাগে তার। এজন্য অপারেশন করাতে হয়। তারপর থেকে তিনি বেকার। কোন কাজ করতে পারেন না। ডাটা এনালিস্ট হিসেবে কিছু কাজের সুযোগ আছে। কিন্তু বিজনেস ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কারণে এ কাজে আবেদন করতে পারেন না। এ কাজ করতে হলে তাকে গ্রিন কার্ডধারী অথবা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হতে হবে। এ অবস্থায় সংসারের আয়ের পথ ফের সংকুচিত হয়ে আসে। এ সময় লামিয়া সিদ্ধান্ত নেয় সংসার সে-ই চালাবে। তাই একটি ভারতীয় রেস্টুরেন্টে পার্ট টাইম কাজ নেয়। দিনের বাকি সময় স্কুলের পড়াশোনায় মন দেয়। গত বেশ কয়েক মাস ধরে সংসারের বলা চলে একমাত্র চালিকাশক্তি লামিয়া-ই। সকালে ঘুম থেকে উঠে ভাই আমিনুল জেম ও শারিয়াহ অপাল’কে নিয়ে ছুটে যায় স্কুলে। সেখানে দিনের প্রায় অর্ধেকটা সময় কাটে। দুপুরের খাবার সময় বাসায় ফিরে যায়। গাড়িতে করে মাকে সেখানে দিয়ে আসে এরপর। কোন কোন দিন পিতা আয়নুল হককে নিয়ে যায় ডাক্তারের কাছে চেকআপ করাতে। এভাবে প্রতিদিন সংসারের দায়িত্ব পালনের ফাঁকে ফাঁকে লামিয়া অল্প স্বল্প করে অর্থ জমাতে থাকে। তা দিয়ে কয়েকটি কলেজে ভর্তির আবেদন করে। বেশির ভাগ কলেজ থেকে আসে নেতিবাচক জবাব। অবশেষে ফুল স্কলারশিপে পড়ার সুযোগ মেলে প্রিন্সটনে। নামিয়া বলে, ‘আমি বিশ্বাস করতে পারছি না আমার স্বপ্ন সার্থক হতে চলেছে।’ তার পরিবার বলেছে, গত দু’টি বছর এই লামিয়াই পুরো সংসারকে টেনে নিয়ে চলেছে। কখনও ও নিজের জীবনের কথা ভুলে যায় নি। ভুলে যায় নি পিতা-মাতার প্রতি, ভাইবোনের প্রতি কর্তব্যের কথা।
এই তরুণী জন্মের পর থেকেই শিখেছে সংগ্রাম করতে। যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিদেশ-বিভূঁইয়ে পুরো সংসারের দায়িত্ব নিয়েছে সে। দুই ভাইবোনকে স্কুলে নেয়া-আনার দায়িত্ব
তার। মা ম্যাকডোনাল্ডের দোকানে পার্ট টাইম কাজ করেন। পিতা সড়ক দুর্ঘটনায় শয্যাশায়ী। এমন অবস্থায় পুরো সংসার চালানোর দায়িত্ব পড়ে এতটুকু একটি মেয়ের ওপর। এর ভিতর দিয়েই নিজের পড়াশোনা চালিয়ে নিয়েছে ও। একটি-দু’টি করে ডলার জমা করেছে। সেই অর্থে কয়েকটি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির দরখাস্ত করেছে। শেষে খুলে গেছে ওর কপাল। পেয়েছে অভিজাত প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ। শুধু তা-ই নয়, পুরো স্কলারশিপ নিয়েই পড়ার সুযোগ মিলেছে এর। এ খবর যখন জানতে পারে তখন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেঝেতেই আনন্দে বেহুঁশ হয়ে পড়ে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জ্যাকসনভিল। এতে আরও বলা হয়, লামিয়া অ্যান হকের জন্ম বাংলাদেশে। তার পিতার নাম আয়নুল হক। তিনি উন্নত ভবিষ্যতের আশায় মেয়ে, স্ত্রীকে নিয়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু ভাগ্য প্রসন্ন হয় নি। সেখানে যাওয়ার পর আয়নুল হকের দু’বার বাইপাস সার্জারি করাতে হয়। তখন তাকে রাখা হয় একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে)। তার নাকে ঢুকিয়ে দেয়া হয় নল। পিতা যখন জীবনের সঙ্গে এভাবে লড়ছেন তখন কাচের জানালা দিয়ে তার দিকে তাকিয়ে করিডোরে দাঁড়ানো লামিয়া চোখের পানি ফেলেছে নীরবে। পিতার ওই অবস্থা কোনভাবেই মানতে পারেনি ও। বার বার চিকিৎসকের কাছে ছুটে গিয়ে ফলোআপ জানতে প্রশ্ন করেছে। কিন্তু তারা কোন উত্তর দেয়নি। এতে তার ভয় আরও বেড়ে যায়। তখন তার বয়স মাত্র ৬ বছর। আয়নুল হকের অপারেশন অবশেষে সফলতার সঙ্গে শেষ হয়। সেই থেকে লামিয়া প্রতিজ্ঞা করে পড়াশোনা শিখে কার্ডিয়াক সার্জন হবে। অস্ট্রেলিয়ায় তার পরিবার নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে পার করছিল। এভাবে কেটে যায় ১০ বছর। অস্ট্রেলিয়ায় কাজের সুযোগ সীমিত হয়ে আসে। তখন আয়নুল হক সপরিবারে সেখান থেকে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে কাজের সন্ধানে। যান বিজনেস ভিসায়। ফলে আয়নুল হক শুধু ফুলটাইম কাজের সুযোগ পেলেন। কিন্তু অল্প কয়েক দিনের মধ্যে তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় পড়েন। হাঁটুতে ভীষণ চোট লাগে তার। এজন্য অপারেশন করাতে হয়। তারপর থেকে তিনি বেকার। কোন কাজ করতে পারেন না। ডাটা এনালিস্ট হিসেবে কিছু কাজের সুযোগ আছে। কিন্তু বিজনেস ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কারণে এ কাজে আবেদন করতে পারেন না। এ কাজ করতে হলে তাকে গ্রিন কার্ডধারী অথবা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হতে হবে। এ অবস্থায় সংসারের আয়ের পথ ফের সংকুচিত হয়ে আসে। এ সময় লামিয়া সিদ্ধান্ত নেয় সংসার সে-ই চালাবে। তাই একটি ভারতীয় রেস্টুরেন্টে পার্ট টাইম কাজ নেয়। দিনের বাকি সময় স্কুলের পড়াশোনায় মন দেয়। গত বেশ কয়েক মাস ধরে সংসারের বলা চলে একমাত্র চালিকাশক্তি লামিয়া-ই। সকালে ঘুম থেকে উঠে ভাই আমিনুল জেম ও শারিয়াহ অপাল’কে নিয়ে ছুটে যায় স্কুলে। সেখানে দিনের প্রায় অর্ধেকটা সময় কাটে। দুপুরের খাবার সময় বাসায় ফিরে যায়। গাড়িতে করে মাকে সেখানে দিয়ে আসে এরপর। কোন কোন দিন পিতা আয়নুল হককে নিয়ে যায় ডাক্তারের কাছে চেকআপ করাতে। এভাবে প্রতিদিন সংসারের দায়িত্ব পালনের ফাঁকে ফাঁকে লামিয়া অল্প স্বল্প করে অর্থ জমাতে থাকে। তা দিয়ে কয়েকটি কলেজে ভর্তির আবেদন করে। বেশির ভাগ কলেজ থেকে আসে নেতিবাচক জবাব। অবশেষে ফুল স্কলারশিপে পড়ার সুযোগ মেলে প্রিন্সটনে। নামিয়া বলে, ‘আমি বিশ্বাস করতে পারছি না আমার স্বপ্ন সার্থক হতে চলেছে।’ তার পরিবার বলেছে, গত দু’টি বছর এই লামিয়াই পুরো সংসারকে টেনে নিয়ে চলেছে। কখনও ও নিজের জীবনের কথা ভুলে যায় নি। ভুলে যায় নি পিতা-মাতার প্রতি, ভাইবোনের প্রতি কর্তব্যের কথা।