অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে…..

অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী লাকী আক্তার (১৪)। চল্লিশোর্ধ্ব বিবাহিত কথিত চাচাতো ভাইর দৃষ্টি পড়ে লাকীর উপর। তার মা আমিনা বেগমও বিয়ে দিতে চান সেই চাচাতো ভাইর হাতে। গোপনে সব আয়োজনও করেন। কিন্তু শুরু থেকে অমত করা লাকী পালিয়ে এখন আশ্রয় নিয়েছে এক গ্রাম পুলিশের বাড়ি। ঘটনাটি মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গিয়াসনগর মাঝপাড়ার। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গিয়াসনগর
মাঝপাড়া গ্রামের মৃত সোনা মিয়ার মেয়ে সাকী ও লাকী। লাকী পড়েন এলাকার ইউছুপ উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণীতে আর সাকী দশম শ্রেণীতে। দুই মাস পূর্বে মারা যান তাদের পিতা সোনা মিয়া। লাকী জানান তার পিতার মৃত্যুর পরের দিন বাড়ীতে হাজির হন সম্পর্কীয় চাচাতো ভাই বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক হেলাল আহমদ। তার মা আমিনা বেগমের প্রশ্রয়ে থাকা হেলালের দৃষ্টি পড়ে দুই বোনের মধ্যে অপেক্ষাকৃত সুন্দরী লাকী বেগমের দিকে। এক পর্যায়ে লাকী বেগমকে বিয়ে করার বিনিময়ে সংসারের দায়িত্ব নিতে চায় হেলাল। কিন্তু অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী লাকি ও তার বড় ভাই মোহন মিয়া (১৮) এর বিরোধিতা করে। লাকী জানায় এতে তার মা দমে না গিয়ে ভিতরে ভিতরে নানা ফন্দি করেন। সম্প্রতি মোহন স্থানীয় এক মামলায় আসামী হয়ে জেলে যায়। আমিনা বেগম লাকীকে জানান তার ভাইকে ছাড়িয়ে আনতে হলে তাকে কোর্টে যেতে হবে। গত ২৫ মার্চ লাকীকে নিয়ে যান আমিনা বেগম ও হেলাল কোর্টে। সেখানে তাকে না বুঝতে দিয়ে কিছু কাগজে সই নেন তার মা। লাকী জানায় এক পর্যায় ম্যাজিষ্ট্রেট কোটে প্রবেশের সময় তাকে কানে কানে বলেন ম্যাজিষ্ট্রেট জিজ্ঞাসা করলে যেন বলে তার বয়স ১৮। তখন লাকী তার মা ও কথিত চাচাতো ভাইয়ের আসল উদ্যেশ্য বুঝতে পারে। লাকী জানায় ম্যাজিস্ট্রেট দেখেই বলেন না ওর বয়স ১৮ হয়নি। ফলে সেখানে আর কোর্ট ম্যারেজ হয়নি। কিন্তুৃ বাড়ি এসে তার মা প্রতিবেশিদের নিকট প্রচার করে তার মেয়ে লাকির বিয়ে হয়েগেছে। লাকীকে ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় তার মা বলেন কোর্টম্যারেজ হয়ে গেছে এখন স্থানীয় কাজিকে দিয়ে বিয়ে পড়ানো হবে সন্ধ্যায়। লাকী তার প্রতিবাদ করলে তাকে ঘরে আটকিয়ে রাখেন তার মা। রাতে জানালা দিয়ে পালিয়ে আসে লাকী গাড়ির নিচে পড়ে আত্মহত্যার পণ করে। এই সময় গিয়াসনগর ইউপির সদস্য আমান আলীর কন্যার জামাই জনৈক করিম তাকে দেখে থামায় এবং তার বাড়িয়ে নিয়ে রাখে। পরের দিন ইউপি মেম্বারের মধ্যস্থতায় লাকীর পিতার মামাতো ভাই একই ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ করম উল্লার বাড়িতে রাখা হয়। সেখান থেকে নিয়ে আসার জন্য লাকীর মা ও কথিত চাচাতো ভাই হেলাল কয়েকবার চেষ্টা করেছে এবং তার সাথে দুর্ব্যবহারও করেছে। করম উল্লা জানান জীবনের ঝুকি নিয়ে আমি আমার দায়িত্ব পালন করছি। মেয়েটিকে রক্ষা করার চেষ্টা করছি। তিনি জানান গ্রামের অনেক তরুণ যুবক এমনকি লাকী সহপাঠিরাও তার মার কাছে অনুরোধ জানিয়েছে তাকে এই বয়সে বিয়ে না দিতে। কিন্তু সে তার সিদ্ধান্তে অনড়। গতকাল এই প্রতিবেদক গ্রামে গেলে লাকীর মা কে পাওয়া যায়নি। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন তিনি সিলেট শহরে গেছেন হেলালকে নিয়ে। কথা হয় একই গ্রামের লাকীর সহপাঠি কলি আক্তার,লাকীর বড়বোন সাকীসহ কয়েকজনের সাথে। তারা বলেন জানার পর তারা নানা ভাবে বুঝিয়েছেন লাকীর মাকে। তিনি তাদের কথা শুনতে চাননা। তার এক কথা লাকীকে বিয়ে দিলে হেলাল সংসারের হাল ধরবে। লাকীর সহপাঠি কলির বাবা মো: রাজু জানান জানারপর থেকেই আমরা নানা ভাবে তার মাকে এই পথ থেকে সরাতে চেষ্টা করেছি। বলেছি বিয়ের বয়সহলে আমরা চাঁদা তুলে মেয়েকে বিয়ে দিব। কিন্তু তিনি আমাদের কথা শুনতে চাননা। এ দিকে গ্রাম পুলিশ করম উল্লার বাড়িতে বসে গতকাল লাকী জানায় তার মা সিদ্ধান্ত না পাল্টালে সে মরে যাবে তবুও এই বিবাহিত ৪০ বছরের হেলাল কে বিয়ে করবে না।

,
Powered by Blogger.