দেশি মুখ নিয়ে ৮৪টি পর্নো ওয়েবসাইট!

পর্নো ওয়েবসাইটগুলোয় এখন দেশীয় মুখের ছড়াছড়ি। কিশোরী তরুণী থেকে শুরু করে মধ্যবয়সী নারীদের গোপন ক্রিয়াকলাপের ছবি এসব সাইটে ব্যবহার করা হয়েছে। এর মধ্যে জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী, মডেল কন্যা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ছবিও রয়েছে। নানা কৌশলে গোপনে সংগ্রহ করা এই
ছবিগুলো ব্যবহার করে সংশ্লিষ্টদের ব্ল্যাকমেইলের ঘটনাও ঘটছে। সম্প্রতি এ রকম ৮৪টি ওয়েবসাইট শনাক্ত করেছে পুলিশ সদর দফতর। এগুলো বন্ধের জন্য শিগগিরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ‘বাংলাদেশি হট গার্ল, ভার্সিটি গার্ল, সেলিব্রেটি উইমেন’-এ জাতীয় শব্দ ব্যবহার করে বিভিন্ন পর্নো ওয়েবসাইটে চটকদার বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। নির্দিষ্ট লিংকে ঢুকলে দেখা মিলছে পরিচিত নানা মুখের। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের অজান্তে লুকানো ক্যামেরায় তোলা হয়েছে এসব ছবি। কখনও কখনও সাধারণ ভিডিওচিত্রকে সম্পাদনা করে পর্নো বানানো হয়েছে। নিখুঁত কারিগরি কাজের জন্য ছবিটি আসল না সুপার ইম্পোজ তা বোঝাও যাচ্ছে না। আর এ ধরনের প্রতারণার ফলে অনেকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন।
পুলিশ জানায়, চিহ্নিত ওয়েবসাইটগুলোয় শোবিজের অনেক জনপ্রিয় মুখ ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন-’ই’ আদ্যাক্ষরের এক কণ্ঠশিল্পীর সঙ্গে এক পুরুষের অন্তরঙ্গতার দৃশ্য খুবই সহজলভ্য। বেশ কয়েকটি সাইটে ওই ফুটেজ দেওয়া রয়েছে। এছাড়া আলোচিত ঘটনাগুলোর মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর সঙ্গে তার প্রেমিকের মেলামেশার দৃশ্য। প্রতারক প্রেমিক এ দৃশ্য গোপনে ধারণ করে তা ছড়িয়ে দিয়েছে ইন্টারনেটে। এতে ওই ছাত্রীকে চেনা গেলেও তার প্রেমিককে চেনা যায় না। এ নিয়ে পত্রিকায় খবরও বেরিয়েছিল।
পুলিশ জানায়, নানাভাবে এসব ছবি সংগ্রহ করা হচ্ছে। মোবাইল ফোন ক্যামেরা এক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে বেশি। কোনো কোনো সময় বাথরুমের ভেন্টিলেশন স্পেসে লুকিয়ে রাখা হয় ছোট্ট ক্যামেরা। সম্প্রতি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী এ রকম ঘটনার মুখোমুখি হন। তবে তিনি আগেই ক্যামেরাটি দেখতে পাওয়ায় প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পান।
বেশ কিছুদিন ধরে বিষয়টি পর্যবেক্ষণের পর পুলিশ এ রকম ৮৪টি ওয়েবসাইট শনাক্ত করেছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, এ সাইটগুলো পরিচালিত হচ্ছে দেশের বাইরে থেকে। তাই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হচ্ছে না। এদিকে এ সংক্রান্ত সময়োপযোগী কোনো আইন না থাকায় দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা যাচ্ছে না। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও র‌্যাবের সাইবার ক্রাইম ইউনিট এ ব্যাপারে কাজ করছে। পুলিশ সদর দফতরের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আপত্তিকর ওয়েবসাইটগুলোর তালিকা তৈরি হয়েছে। এখন সেগুলো বন্ধের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনকে (বিটিআরসি) জানানো হবে।

Powered by Blogger.