তাজরিনের অগ্নিকাণ্ড পরিকল্পিত নাশকতা : বিজিএমইএ

আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তৈরি পোশাক কারখানা তাজরিন ফ্যাশনে শনিবারের অগ্নিকাণ্ড ঘটনাকে পরিকল্পিত নাশকতা বলে মনে করছে তৈরি পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। তাদের ধারণা, এই নাশকতার পেছনে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক শক্তি কাজ করেছে। আজ সোমবার সন্ধ্যায়
বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন এমন মনোভাবের কথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে বিকেএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি মো. হাতেমসহ বিজিএমইএর সহ-সভাপতি, পরিচালক ও ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, আমরা মনে করছি এটি একটি পরিকল্পিত নাশকতা। এই নাশকতার পেছনে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক শক্তি কাজ করছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। তিনি বলেন, ১৯৯০ সাল থেকে এ শিল্পে সংঘটিত মোট ২১৪টি অগ্নি দূর্ঘটনায় ২৫টি কারখানার ৩৮৮ জন শ্রমিক কর্মচারী নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে তাজরিন ফাশন্স লিঃ কারখানায় ১১৩ জন শ্রমিক মারা যান। অগ্নি দূর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত বেশিরভাগ গার্মেন্টকেই অত্যাধুনিক বড় কমপ্লায়েন্ট কারখানা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কেন এসব কারখানাতেই বড় বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটছে, তা আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলছে। দেবোনিয়া ফ্যাশন লিঃ কারখানায় আগুন দিতে গিয়ে জাকির হোসেন এবং সুমী বেগম নামে দুই জন পুলিশের কাছে ধরা পড়েছে। এছাড়া আজ (গতকাল) আবার সকালবেলায় দণিখানের মোল্লারটেকে সোয়ান গার্মেন্টস লিঃ এর গোডাউনে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। একই ভবনে ম্যাকয় নীট লিঃ ও স্যার ডেনিম লিঃ কারখানা ছিলো। এগুলোর পেছনে কোন নাশকতা আছে কি না, অথবা আমাদেরই কোনো দুর্বলতা আছে কি না তা আমরা বুঝতে চাই।
তিনি বলেন, বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিবেচনায় তৈরি পোশাক উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই সেরা। বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পখাতের প্রধান রপ্তানিকারক দেশ চীনের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বড় বড় আন্তর্জাতিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কাছে বাংলাদেশই এখন পছন্দ।  আপনারা দেখেছেন এ ব্যাপারে অল্প দিন অ্যামচেম হংকং এর একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। একটি চীনা প্রতিনিধিদলও বর্তমানে বাংলাদেশ সফর করছেন। আবার আগামী ১২ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী বাটেক্সপো মেলা। সেই মেলায় প্রায় ৪০টি ব্র্যান্ড অংশগ্রহণ করবে। এই অবস্থায় পোশাক শিল্পকে নিয়ে আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় পর্যায়ে ষড়যন্ত্র হওয়া অসম্ভব কিছু নয়। শিল্পকে অস্থিতিশীল করার জন্য শিল্পে পরিকল্পিতভাবে নাশকতামূলক কর্মকান্ড ঘটানো সম্ভব। এ বিষয়গুলো তলিয়ে দেখতে হবে। এ শিল্পের সাথে দেশের অর্থনীতির অস্তিত্ব জড়িত। স্বার্থান্বেষী মহল এ শিল্পকে তিগ্রস্ত করতে পারলে দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়া সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় বিকেএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি মো. হাতেম জানান, নাশকতার আশঙ্কায় সব কারখানায় বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। এদিকে অপরিকল্পিতভাবে যেসব কারখানা চালু হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে আলাদা শিল্পাঞ্চলের দাবি জানান তিনি। সংঘটিত অগ্নিকান্ডের ঘটনা তদন্তে বিজিএমইএ থেকে সহ-সভাপতি (অর্থ) এসএম মান্নান কচিকে আহবায়ক করে ৪ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

Powered by Blogger.