‘হামলা মামলায় উৎসাহী’ পুলিশের তালিকা করছে জামায়াত

মিছিল-সমাবেশে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলা ও গ্রেপ্তারে ‘অতিউৎসাহী’ পুলিশ কর্মকর্তা এবং সদস্যদের তালিকা করছে জামায়াত-শিবির। উদ্দেশ্য রাজনৈতিকভাবে চিহ্নিত করে এসব পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেয়া। এজন্য তালিকাভুক্তদের নামে প্রাথমিকভাবে মামলা
দেয়া হবে। এতে ব্যর্থ হলে এসব তালিকা সংরক্ষণ করা হবে। যাতে পরিস্থিতির পরিবর্তনে প্রতিকার পাওয়া যায়। জামায়াতের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে কৌশলগত কারণে মন্তব্য করতে রাজি নয় কেউ। তালিকাভুক্তদের মধ্যে রাজধানীর বাইরের পুলিশ সদস্যরাও রয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে বলা হয়েছে, সম্প্রতি রাজধানীর মতিঝিল, যাত্রাবাড়ী, আগারগাঁও, পল্টন, প্রেস ক্লাব, মিরপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এসব সংঘর্ষ চলাকালে এবং সংঘর্ষের পরে বেশ ক’জন পুলিশ সদস্যের আচরণ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয় দলের তৃণমূল কর্মীরা।  বিশেষ করে ১৮ই নভেম্বর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষ চলাকালে অন্তত ৩ জন গুলিবিদ্ধ হন। মিছিলের ওপর সরাসরি গুলির ঘটনায় এরা গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জামায়াতের নিজস্ব অনুসন্ধানে জানা যায়। এছাড়া, ৫ই নভেম্বর জয়পুররহাটে পুলিশের গুলিতে আহত শিবির কর্মী বদিউজ্জামানের মৃত্যুর পর নেতাকর্মীদের আতঙ্কিত করে তোলে। তারা মিছিলের ওপর গুলি বর্ষণকারী পুলিশ সদস্যের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করেছে। এছাড়া, বিভিন্ন মিছিল- সমাবেশে সংঘর্ষের উস্কানি এবং আটক নেতাকর্মীদের ‘নির্দয় নির্যাতন’কারী পুলিশ কর্মকর্তাদের তালিকা করছে। এজন্য গুলিবিদ্ধদের ডাক্তারি সনদ, ঘটনার দিনের পেপার কাটিংসহ যাবতীয় প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে। তালিকাভুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের নামে প্রচলিত আইনে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। থানায় এবং আদালতে মামলা দায়েরে সফল না হলে ভবিষ্যতের জন্য এই তালিকা রেখে দেয়া হবে বলে সূত্র জানায়। জামায়াত সূত্রের দাবি যাত্রাবাড়ীতে গুলির ঘটনায় দলের মহানগর নেতা নুরুল ইসলাম বুলবুল অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন। তার পাশের কর্মী শামসুর রহমান ও হেলাল উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সেদিন জামায়াতের মিছিলের ওপর যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশের নায়েক জয়নাল আবেদীন ৭টি টিয়ার শেল, নায়েক সোহেল ৮টি টিয়ার শেল, নায়েক জহুরুল হক ২ রাউন্ড গুলি ও নায়েক মাহবুবুর রহমান তার শটগান থেকে ৩ রাউন্ড গুলি করেন বলে দলীয় অনুসন্ধানে জানা যায়। এ দিনের ঘটনায় মাহবুবুর রহমানকে প্রধান আসামি করে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত। এই মামলায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এএসআই এমরানুল ইসলাম, আসলাম উদ্দিন মোল্লা, এসআই বাবুল ও রঞ্জিতের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে সূত্র জানায়। এছাড়া, রাজধানী ও রাজধানীর বাইরের তালিকাভুক্ত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে আছেন এএসআই মিজানুর রহমান, এসআই মকবুল হোসেন, মনোয়ার, হাবিবুর রহমান, রফিকুল, সালাম, রেজা, রেজাউল, এএসপি শহীদুল, পিএসআই মহিবুল, নুরুল ইসলাম, বগুড়া সদর থানার সেকেন্ড অফিসার আনোয়ার, একই থানার টিএসআই মঞ্জু, এসআই রেজা, নবীউল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মকবুল, ওসি তদন্ত অকুল চন্দ্র বিশ্বাস, কুড়িগ্রাম থানার ওসি মোজাম্মেল হক, এসআই আবদুর রাজ্জাকসহ বেশ ক’জন পুলিশ কর্মকর্তা। দেশের সব জেলা-উপজেলা পর্যায়ে এভাবে ‘চিহ্নিত’ পুলিশ কর্মকর্তাদের নামের তালিকা করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর দলের নীতি নির্ধারণী ফোরাম সিদ্ধান্ত নেবে বলে দলীয় সূত্র জানায়।    

source: mzamin

Powered by Blogger.