==> শিক্ষার জন্য যৌনব্যবসা!

ব্রিটেনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বড় অঙ্কের টিউশন ফি। পড়ালেখার খরচ জোগাড় হবে কী করে? পড়ালেখার ব্যয় নির্বাহ করতে গিয়ে কতজন কত রকম পথই না বেছে নেন। বিস্ময়কর হলেও
সত্য, দেহব্যবসার মতো পথও বেছে নেন অনেক নারী শিক্ষার্থী।
ব্রিটিশ দৈনিক ‘দ্য সান’ জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখার ব্যয় নির্বাহ করতে গিয়ে কত নারী শিক্ষার্থী দেহব্যবসার মতো পথ বেছে নেন—এ নিয়ে গবেষণায় নেমেছেন ব্রিটেনের এক দল গবেষক। তথ্য পেতে গতকাল মঙ্গলবার একটি ওয়েবসাইটও তৈরি করেছেন তাঁরা। যেসব শিক্ষার্থী এ পথে অর্থ আয় করেন, তাঁদের নিজেদের কথা অকপটে বলতে আহ্বান জানিয়েছেন গবেষকেরা। তিন বছর ধরে এভাবে তথ্য সংগ্রহ চলবে।
সোয়ানজি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দলের প্রধান ট্রেইসি স্যাগার বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো পড়ালেখার খরচ জোগাতে গিয়ে দেহব্যবসায় জড়িতদের সংখ্যা নির্ণয় করা। ওয়েব ক্যাম সেক্স, ফোন চ্যাট সেক্স, পারলারে ম্যাসেজ করানোর মতো কাজও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। তবে আমরা শুধু নারীদের ওপরই জোর দিচ্ছি না, পুরুষ ও হিজড়াদের দিকেও দৃষ্টি থাকবে।’
পড়ালেখার খরচ জোগানোর জন্য নিজের শরীরকে ব্যবহার করেন, এমন কয়েকজন নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে এরই মধ্যে কথা বলেছেন গবেষকেরা। তাঁদের মধ্যে তিনজনের কথাবার্তা তুলে ধরা হয় ‘দ্য সান’-এর প্রতিবেদনে।
রেবেকা থালবোর্ন পড়েন সালফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২৩ বছর বয়সী এই নারীর স্বপ্ন মনোরোগ চিকিত্সক হওয়া। টিউশন ফি বাবদ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়কে দিতে হয় তিন হাজার পাউন্ড। অর্থ আয় সম্পর্কে রেবেকা বলেন, ‘লোকে হয়তো অনেক কিছু মনে করে। তবে আমি মূলত ওয়েব ক্যামের সামনে বসি। পানশালায় কাজ করার চেয়েও এভাবে বেশি অর্থ আয় হয়। পড়ালেখার সময় তেমন পাই না। আমি শুধু অর্ধনগ্ন (টপলেস) হই। আমার পরিবার এটা জানে। তবে এ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই তাঁদের।’
রচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ক্রিয়েটিভ আর্টস’ বিষয়ে পড়াশোনা করেন লিয়া স্টেপ। ২২ বছর বয়সী এই নারীর স্বপ্ন ফ্যাশন ডিজাইনার হওয়া। বছরে বিশ্ববিদ্যালয়কে দিতে হয় পাঁচ হাজার পাউন্ড। এ অর্থ জোগাতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। ৪৩ বছর বয়সী এক কোটিপতির কল্যাণে এখন আর ভাবনা নেই তাঁর। অর্থ আয় সম্পর্কে লিয়া বলেন, ‘অতিরিক্ত অর্থ আয় করতে অনেক কিছু করারই চেষ্টা করেছি। একপর্যায়ে বুঝতে পারি, আমাকে দেখাশোনার জন্য একজন কোটিপতি দরকার। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে একজনকে পেয়েও যাই। ওকে আমার অবস্থা খুলে বলি। ও আমাকে সাহায্য করতে রাজি হয়।’
লিয়া বলেন, ‘এটা শুনতে খারাপ লাগতে পারে। কিন্তু এখন ও আমার বয়ফ্রেন্ড। আমরা আমাদের সম্পর্কের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমি ফ্যাশন ডিজাইনার হতে চাই। কিন্তু ওর সহায়তা ছাড়া এটা সম্ভব নয়। না হলে আবারও ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ব। শুনেছি, অনেকেই পতিতাবৃত্তির দিকে ঝুঁকছে। এটা আমার কাছে ভয়ংকর মনে হয়।’
রোহ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বিজনেস ম্যানেজমেন্ট’ বিষয়ে পড়েছেন মিশেল সায়ার্স। প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয়কে দিতে হয় সাড়ে আট হাজার পাউন্ড। এত অর্থ জোগাড় করতে গিয়ে ল্যাপ ডান্সিং (নগ্ন বা অর্ধনগ্ন হয়ে নৃত্য) পেশায় নেমেছেন তিনি। এখন প্রতি রাতে ৮০০ পাউন্ড পর্যন্ত আয় হয় তাঁর। মিশেল বলেন, ‘আমি এক বয়ফ্রেন্ডের কাছ থেকে শুনে ল্যাপ ডান্সিং শুরু করি। অডিশনে অংশ নিই। ভাবতেই পারিনি, কাজটা এত সহজ। প্রথমে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। পরে ওরা বলল, আমি ভালো করেছি। এভাবেই চাকরিটা পেলাম।’ সুত্রঃ প্রথম আলো

Powered by Blogger.