==> 'অনলাইন নীতিমালার খসড়া অনলাইনবান্ধব নয়’

অনলাইন সংবাদপত্রের সম্পাদকরা মনে করছেন, অনলাইন গণমাধ্যম সম্পর্কে প্রস্তাবিত খসড়া নীতিমালা পড়লেই বোঝা যায় এটি অনলাইনবান্ধব নয়। এতে যেসব বিষয় আছে, তা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পথে বাধা সৃষ্টি করবে।
শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে
অনলাইন সংবাদমাধ্যমের জন্য প্রণীত খসড়া নীতি নিয়ে শীর্ষস্থানীয় অনলাইন সংবাদপত্রের সম্পাদক ও সাংবাদিকদের আলোচনায় এ বক্তব্য উঠে আসে।
আলোচকরা নীতিমালার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে মর্মে অভিমত প্রকাশ করে দাবি করেন, অনলাইন  নীতিমালা যেন নিয়ন্ত্রণের নীতি না হয়ে সহযোগিতার নীতি হয়।
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে দেশের শতাধিক অনলাইন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা এই আলোচনা সভায় অংশ নেন।
আলমগীর হোসেন বলেন, “প্রস্তাবিত খসড়া নীতিমালাটি পড়লেই বোঝা যায়, এটি অনলাইনবান্ধব নয়। অনলাইন গণমাধ্যমের জন্য তড়িঘড়ি করে নীতিমালা প্রণয়ন কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”
তিনি বলেন, “অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের বিকাশের স্বার্থেই প্রস্তাবিত নীতিমালার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে।”
“প্রস্তাবিত নীতিমালায় যেসব বিষয় আছে তা ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে বাধা” এই অভিমতকে যুক্তিসহ তুলে ধরেন বাংলাদেশে অনলাইন সংবাদমাধ্যমের পথিকৃৎ আলমগীর হোসেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “প্রিন্ট মিডিয়া মনিটর করার জন্য কোনো কমিটি নেই, তাহলে অনলাইন মিডিয়া মনিটর করার জন্য কমিটি থাকাও যুক্তি ও ন্যায়সঙ্গত নয়।“
আলমগীর হোসেন বলেন, ““সরকারের পক্ষ থেকে অনলাইন মিডিয়াকে কোনো ধরনের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় না। যদি নীতিমালা করা হয়, তাহলে নীতিমালায় কীভাবে সরকারি বিজ্ঞাপন আসবে তাও উল্লেখ থাকতে হবে।”
অনলাইন গণমাধ্যমের রেজিস্ট্রেশন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ““নীতিমালায় রেজিস্ট্রেশন করার কথা বলা হয়েছে। অথচ রেজিস্ট্রেশন ছাড়া ডোমেইন হয় না।”
বার্তা২৪ডটনেট- এর সম্পাদক সরদার ফরিদ আহমদ বলেন, ““অনলাইন মিডিয়া দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। খসড়া নীতিমালা বাস্তবায়ন করা হলে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সরকারের যে ভিশন, এটি তার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।”
“খসড়া নীতিমালাটি অনেকটা কমিউনিটি রেডিওর নীতিমালার আলোকে করা হয়েছে” দাবি করে তিনি বলেন, “এ কারণে এতে অনেক অসঙ্গতি রয়ে গেছে।“
সরদার ফরিদ আহমদ আরও বলেন, ““অনলাইনবান্ধব নীতিমালা করা হলে আমরা তা মেনে নেবো।”
নতুন তথ্যমন্ত্রীকে প্রযুক্তিবান্ধব বলে উল্লেখ করে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ““নতুন মন্ত্রী হয়তো অনলাইন গণমাধ্যমের ক্ষতি হয় এমন কোনো নীতিমালা করবেন না।”
আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলানিউজের হেড অব নিউজ মাহমুদ মেনন বলেন, ““নীতিমালাকে অবশ্যই অনলাইনবান্ধব হতে হবে। অনলাইনকে নিয়ন্ত্রণের জন্য নয়, বরং আধুনিক সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই মাধ্যমকে বিকশিত হওয়ার সুযোগ দিতে নীতিমালা করা প্রয়োজন।”
বাংলানিউজের চিফ অব করেসপন্ডেন্টস আহমেদ রাজু বলেন, “নীতিমালায় দৈনিক পত্রিকার অনলাইন নিয়ে কোনো কথা নেই। অথচ দৈনিক পত্রিকাগুলো টোটাল অনলাইন ভার্সন চালাচ্ছে, সেখান থেকে তারা আয়ও করছে।”
তিনি বলেন, “দৈনিক পত্রিকার অনলাইন ভার্সনের জন্য যদি কোনো নীতিমালার প্রয়োজন না হয়,  তবে অনলাইন নিউজপোর্টালের জন্য আলাদা নীতিমালার প্রয়োজন পড়লো কেন?“
নিউজপোর্টালগুলোর জন্য আলাদা নীতিমালার প্রয়োজন নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সবার জন্য নীতিমালা এক হওয়া উচিত। সরকার যদি অনলাইন নিউজপোর্টালের জন্য আলাদা নীতিমালা করতে চায়, তবে সেই নীতিমালার আওতায় অবশ্যই দৈনিক পত্রিকার অনলাইন ভার্সনকে আনতে হবে।
দি এডিটরের বার্তা সম্পাদক মাহমুদুর রহমান মনা বলেন, ““শীর্ষ অনলাইন নিউজপোর্টালগুলো জয়েন স্টক থেকে রেজিস্ট্রেশন নিয়েছে। তাদের ট্রেড লাইসেন্সও আছে। এরপর আবার পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজন নেই।”
এএনবি নিউজ টোয়েন্টিফোরের হেড অব নিউজ রহমান মুস্তাফিজ বলেন, ““সরকারের একটি মহলের উস্কানিতে ফেসবুক-ইউটিউব বন্ধ করা হয়েছে। এসব সিদ্ধান্ত ডিজিটাল সরকারকে স্যাবোটাজ করার জন্য করা হচ্ছে কি-না তা দেখতে হবে।”
তিনি জানান, নতুন তথ্যমন্ত্রী তাকে বাংলানিউজের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেনসহ অনলাইনে অভিজ্ঞদের নিয়ে বিকল্প অনলাইন নীতিমালার খসড়া দিতে বলেছেন।
উপস্থিত যারা:
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পিটিবি নিউজের সম্পাদক আশীষ কুমার দে, রেডটাইমসবিডি ডটকমের সৌমিত্র দেব, শেয়ারনিউজ২৪ ডটকমের নির্বাহী সম্পাদক আমিরুল ইসলাম নয়ন, এএনবি২৪ ডটকমের রহমান মুস্তাফিজ, বিজনেসটাইমসটোয়েন্টিফোরের সম্পাদক পবন আহমেদ মনির, এনিউজ২৪ ডটনেটের মোহাম্মদ মাসুদ, সংবাদ২৪ডটনেটের মশিউর রহমান রুবেল, বিডিটাইমসডটনেট’র নাজির আহম্মেদ, গ্রিনবাংলা২৪ডটকমের ফজলে রাব্বী, এসবিটিভি ডটকমের আতিকুর রহমান আতিক, সময়নিউজ২৪ডটকমের সি. ডি. এম রেজা চৌধুরী, একুশেসংবাদডটকমের জিয়াদুর রহমান, বাংলা-নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের আলতাফ মাহমুদ, বিসিজেএ’র অধ্যক্ষ মো: আশরাফুল ইসলাম, নিউজমিডিয়াডটকমের আদম মালেক, নিউজ মিডিয়াবিডি ডটকমের প্রফেসর মো: শফিকুল ইসলাম, ঢাকানিউজ২৪ ডটকমের কুদরত-ই-মাওলা, এসবিটিভি ডটকমের বিপ্লব হোসেন, যমুনানিউজ২৪ ডটকমের জাহাঙ্গীর আলম জনি, বাংলাপোস্ট২৪ ডটকমের জাহাঙ্গীর খান বাবু, প্রথমনিউজ ডটকমের রাজু আহমেদ, ভয়েসঅফবাংলাডটকমের মিজানুর রহমান হেলাল, বাংলাখবর২৪ডটনেটের বিএম শফিকুল ইসলাম টিটু, সবুজবাংলাটিভি.কমের আবদুর রহিম রাজু, সময়নিউজ২৪ডটকমের মো: নজরুল ইসলাম ও ফিরোজ আহমেদ, বাংলা-নিউজডটকমের ‍এস এম সালেম আহমেদ, টাইমনিউজবিডিডটকমের মাইনুল ইসলাম, বাংলাপোস্ট২৪ডটকমের শামসুজ্জামান পনির, নিউজ২১বিডিডটকমের শরিফুল ইসলাম খান, সিলেটরিপোর্টডটকমের রুহুল আমিন, জালালাবাদনিউজবিডিডটকমের সৈয়দ আহসান আহমেদ, রংপুরঅনলাইনডটকমের আরিফুল ইসলাম, বিডিসংবাদ২৪ডটকমের বিজয় ঘোষ, ক্রাইম ফাইল২৪ডটকমের এস এম রবিউল আউয়াল, ঢাকানিউজডটকমের মোস্তাক বশির, দেশেরখবর২৪ডটকমের নাসির উদ্দিন শোয়েব, সংবাদপ্রতিদিন২৪বিডিডটকমের সরকার মো: হাসান, ডেইলিএডুকেশনডটনেটের সিদ্দিকুর রহমান খান, ঢাকানিউজডটকমের নুরুল মোমেন খান, আরটিএনএনডটনেটের মো: বেলায়েত হোসেন, বিজনেসটাইমস২৪ডটকমের শাহরিয়ার জামান (দিপ), ইউএনসবিডিডটকমের রফিকুল ইসলাম সবুজ, বাংলাটিভিডটকমের আহমেদ ফখরুদ্দিন, এসবিনিউজডটকমের মো: ওয়াজেদ, ইউনাইটেডনিউজ২৪ডটকমের আ. হ. ম. ফয়সল, সংবাদপ্রতিদিন২৪বিডিডটকমের গাজী শফিউল ইসলাম, কুমিল্লাওয়েবডটকমের আক্তার হোসেইন, ঢাকাটাইমডটকমের জিয়াউদ্দিন সাইমুম, বাংলা-নিউজ২৪ডটকমের মোহাম্মদ ইসলাম রুবেল, ঢাকানিউজ২৪ডটকমের এম জে ইসলাম, ‍স্কাইনিউজ২৪ডটনেট’র ইদ্রিস মাদ্রাজি, ডিজিটাল২৪ডটকমের আল-আমিন গাজী, নিউজমিডিয়া২৪ডটকমের কামরুল হাসান রনি, বাংলাখবর২৪ডননেটের মো: জাহাঙ্গীর আলম, দিএডিটরডটনেটের মাহমুদুর রহমান মনা, নিউজবিডি৭১ডটকমের তারিফ মোহাম্মদ খান, এসএসএন-এসএসবিসিএলডটকমের ড. উৎপল কুমার সরকার, এসএনএনবিডিডটকমের এম. এ. হালিম, ঢাকারিপোর্ট২৪ডটকমের রাজু আহমেদ মামুন প্রমুখ।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলা থেকেও তৃণমূল পর্যায়ের অনলাইন নিউজপোর্টালের সম্পাদক ও বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালার ওপর onlineeditorbd@gmail.com এ মতামত দেওয়ার জন্য সবার প্রতি আহবান জানানো হয়।

Powered by Blogger.