ব্যাগভর্তি টাকা পাওয়ার পর আমার শরীর থরথর করে কাঁপছিল

ব্যাগভর্তি ৭০ হাজার টাকা পেয়েও স্টেশনমাস্টারের কাছে তা ফেরত দিয়ে সততার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মিনা বেগম (৪৫)। বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার রেলওয়ে জংশনে দুই সন্তান নিয়ে ভিক্ষা করেন তিনি। গত ২৪ জুলাই ভোররাতে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রেনের কামরা থেকে ৭০ হাজার টাকার এই ব্যাগ পান মিনা। তাঁর সাক্ষাৎকারটি বেঙ্গলিনিউজ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:
আপনি ভিক্ষা করে দুই সন্তান নিয়ে অনেক কষ্টে সংসার চালান, তারপরও এতগুলো টাকা
পেয়ে তা ফেরত দিলেন কী মনে করে?
ভাগ্যদোষে আমাকে ভিক্ষা করতে হয়। কিন্তু আমি কখনো অন্যায় কাজ করিনি। এই টাকা আমি কষ্ট করে কামাই করিনি, তাই এই টাকার মালিক আমি নই। সে জন্য যার টাকা তাকে ফেরত দিয়েছি।
টাকা পাওয়ার পর আপনি কী ভেবেছিলেন?
টাকা পাওয়ার পর আমার সারা শরীর থরথর করে কাঁপছিল। ভয় হচ্ছিল, কেউ যদি টাকাগুলো কেড়ে নেয় কিংবা আমাকে মেরে ফেলে!
তারপর কী করলেন?
তখন আমার সঙ্গে আরেকজন ভিখারি ছিল। সে টাকাগুলো লুকিয়ে রাখতে বলল। কিন্তু আমি তার কথা না শুনে স্টেশনের কুলিদের সঙ্গে নিয়ে স্টেশনমাস্টারের কাছে টাকাসহ ব্যাগ ফেরত দিতে যাই।
কেউ সাহায্য করতে চাইলে আপনি কি তাঁর সাহায্য গ্রহণ করবেন?
যে মেয়েটির টাকা পেয়েছিলাম, তিনি খুশি হয়ে আমাকে দুই হাজার টাকা দিয়েছেন। এ রকম কেউ যদি আমাকে সাহায্য করতে চান, তাহলে তাঁরা যেন আমার দুই সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য সাহায্য করেন। তাঁদের সাহায্য নিতে আমার আপত্তি নেই।
যদি সত্যিই কেউ আপনার সাহায্যে এগিয়ে আসে, আপনি কি ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দেবেন?
কেউ কি সহজে ভিক্ষা করতে চায়? আমার স্বামী আমাকে ছেড়ে আরেকটি বিয়ে করে অন্য জায়গায় চলে গেছে। তার পর থেকে ছোট ছোট দুটি বাচ্চাকে নিয়ে ভীষণ বিপদে পড়ে যাই আমি। শেষমেশ পেটের দায়ে এই অপমানের পেশা বেছে নিই। ভালো কোনো কাজ পেলে কিংবা কেউ আমার বাচ্চাদের দেখাশোনার দায়িত্ব নিলে ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দেব।

, ,
Powered by Blogger.