মরা মানুষের মাংস খাওয়া দুই ভাইয়ের নেশা

পাকিস্তানের দুই ভাই, মোহাম্মদ ফরমান আলী ও মোহাম্মদ আরিফ আলী। দুই ভাইয়ের নেশা হলো মরা মানুষের মাংস খাওয়া। কবর থেকে লাশ তুলে মৃত ব্যক্তির মাংস খাওয়ার অভিযোগে তাদের দুই ভাইয়ের দুই বছরের সাজাও হয়েছিল। কিন্তু কারাগার থেকে বেরিয়ে এসে আবার কবর থেকে লাশ চুরি করতে গিয়ে জনতার ধাওয়ায় তারা পালিয়ে যান। এখন দুই ভাই লাপাত্তা।
রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে পাঞ্জাব প্রদেশের দারায়াখান এলাকার একটি প্রত্যন্ত খামারবাড়িতে থাকেন ওই দুই ভাই। মৃত মানুষের
মাংশ খাওয়ার অপরাধে ২০১১ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার পর কেবল দুই বছরের সাজা ভোগ করেই পার পেয়ে যান। গত জুনে তারা মুক্তির পর ফরমান ও আরিফকে গভীর রাতে আবারও একটি কবরস্থানে ঘোরঘুড়ি করতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের ধাওয়া করে। তবে তাদের ধরা যায়নি। দুই ভাই পালিয়ে যান।
ক্ষুব্ধ লোকজন দুইভাই আটক করার জন্য বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেন। কিন্তু নরখাদক ফরমান ও আরিফের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। পুলিশ একাধিক বার তাদের বাসায় অভিযান চালিয়েও দুই ভাইয়ের সন্ধান পায় নি।
পাকিস্তানের দারায়াখান এলাকায় সায়রা পারভিন নামের এক তরুণী (২৪) গলার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন। সেই থেকেই ঘটনার শুরু। আত্মীয়স্বজনেরা সায়রাকে দাফন করার পরদিন অবাক হয়ে দেখেন, কে বা কারা কবর খুঁড়ে লাশ তুলে নিয়ে গেছে। পুলিশ তদন্ত করে এ ঘটনায় ফরমান ও আরিফের জড়িত থাকার প্রমাণ পায়।
সংশ্লিষ্ট পুলিশ পরিদর্শক ফখর ভাট্টি বলেন, ওই দুই ভাইয়ের বাড়ি তল্লাশি করা হয়। ফরমান বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর ঘরের তালা ভেঙে পাওয়া যায় অন্য রকম মাংসের গন্ধ। একটি পাত্রে ছিল রান্না করা নরমাংস। পাশেই ছিল মাংস কাটার ছুরি। এক সারি পিঁপড়ের চলার পথ অনুসরণ করে খাটের নিচে সারের বস্তার পেছনে পাওয়া যায় সায়রার লাশ।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ফরমান ও আরিফ স্বীকার করেন, তাঁরা স্থানীয় কবর থেকে আরও লাশ তুলে একইভাবে রান্না করে খেয়েছেন। বহুদিন ধরেই ব্যাপারটি চলে আসছিল। দুই ভাইয়েরই স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। কিন্তু তাঁরা ফরমান ও আরিফকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। পুলিশ ওই দুই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁরা জানান, দুই ভাই কোনো কাজ করতেন না। তাঁরা প্রায়ই রাত-বিরাতে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যেতেন।
আদালত তাদের নরমাংশ খাওয়ার অপরাধে দুই বছরের সাজা দিয়েছিল। কারামুক্তির পর দুই ভাইকে আবার মৃত মানুষের মাংশ খাওয়ার নেশায় পেয়ে বসে বলে এলাকাবাসী দাবি।

, ,
Powered by Blogger.