জাদুঘরে মিশরীয় মূর্তির ভৌতিক আচরণ

ব্রিটিশ জাদুঘরে ভৌতিক আচরণ একটি মিশরীয় মূর্তির। কাচের বাক্সে রাখা মূর্তিটি নাকি আপনাআপনি ঘুরে যাচ্ছে। চার হাজার বছরের পুরনো এই মূর্তির ভৌতিক ভাবে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যাওয়াতে
চক্ষু চড়কগাছ Manchester museum-এর কর্মীদের।

জাদুঘর সূত্রে জানা গিয়েছে ১০ ইঞ্চি লম্বা এই মূর্তিটি খ্রিষ্টের জন্মের ১৮০০ বছর আগের। কোনও একটি পিরামিডে মামির পাশ থেকে পাওয়া মূর্তিটি জাদুঘরে আছে গত ৮০ বছর ধরে।

কয়েক সপ্তাহ ধরে জাদুঘরের কিউরেটররা দেখছেন মূর্তিটি নিজের থেকেই অভিমুখ বদল করছে। হাতে করে ঘুরিয়ে রাখলেও ফের পাল্টে যাচ্ছে। শেষে ফিট করা হল ভিডিও ক্যামেরা। সেখানেই ধরা পড়ল। ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেল মূর্তি। অথচ তার কাচের বাক্সের ধারেকাছে তখন কোনও জনমানুষ নেই!

এই মূর্তিটি কোনও দেবতার নয়। একজন মানুষের। হায়রোগ্লিফিক অনুযায়ী তার নাম নেব-সেনু। বলা হয়,যে পুরাবিদরা ১৯২০ তে সমাধিক্ষেত্র থেকে মূর্তিটি উদ্ধার করেন,তাঁরা সবাই নাকি অভিশাপ ভোগ করেছেন।

ফলে Oxford Road-এ এই জাদুঘরে ঘুরন্ত মূর্তি নিয়ে সবার ঘুম ছুটে গেছে। কিউরেটর Campbell Price জানাচ্ছেন, মূর্তির কাচের বাক্সের চাবি থাকে তাঁর কাছে। তাই অন্যকেউ হাত দেবে এটা হতেই পারে না। এবং রেকর্ডিং-এর সময় বলছে নেব-সেনুর মূর্তি রাতের বেলা স্থির থাকে। তার ঘোরা শুরু হয় দিনে।

প্রাচীন মিশরে সমাধিতে মামির সঙ্গে দেওয়া হত মূর্তিও। প্রচলিত বিশ্বাস ছিল,যদি কোনও কারণে মামি ধ্বংস হয়ে যায় তাহলে মূর্তিটি আত্মার ধারক ও বাহক হবে।

কিন্তু একবিংশ শতাব্দী অত সহজে মূর্তির অলৌকিক মহিমায় বিশ্বাস করবে কেন?পদার্থবিদরা মনে করছেন,জাদুঘরে দর্শনার্থীরা হাঁটার ফলে যে ভাইব্রেশন হয়,তার ফলেই মূর্তিটি ঘুরে যায়। রাতে সেটা হয় না। ফলে নেব-সেনুও দাঁড়িয়ে থাকে নিজের জায়গায়।

কিন্তু এসব differential friction-এর তত্ত্ব মানতে নারাজ কিউরেটর প্রাইস। তাঁর প্রশ্ন,এতদিন ধরে কিছু হয়নি। হঠাৎ এখন মূর্তিটা কম্পনে ঘুরতে লাগল কেন? আর তাই যদি হয়,তাহলে নিঁখুত বৃত্তে ঠিক ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যায় কী করে?

প্রাইস চান,এই রহস্য উন্মোচিত হোক।

হয়তো আসল কারণ জানা গেলে সামনে আসবে বিজ্ঞানের নতুন কোনও দিক। যেটা জানা ছিল নীল নদের পাড়ের অধিবাসীদের। কিন্তু কোনও কারণে চাপা পড়ে গেছে বাইরের সভ্যতার কাছে।

রানি ক্লিওপেত্রার দেশের এটা কোন নতুন রহস্য? শেয়াল দেবতা রহস্য ভেদ করা ফেলুদাই বোধহয় একমাত্র পারবে এর সমাধান বের করতে।

Powered by Blogger.