হাজিরা এবার জমজমের পানি আনতে পারবেন না

এবারের হজযাত্রীরা বিমানে পবিত্র জমজম কূপের পানি বহন করতে পারবেন না। এছাড়া সৌদি সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে কোনো যাত্রী বিমানে কোনো ধরনের খাদ্যসামগ্রী সঙ্গে নিতে পারবেন না। এছাড়া বিমানে ওজুর পরিবর্তে তায়াম্মুম করতে হবে। বিমান ঢাকার মতিঝিল শাখার বিপণন বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার ড. শফিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে রোববার এ
তথ্য জানা যায়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ হজযাত্রীরা ঢাকায় আসার পর তাদের ১০ লিটার জমজমের পানি দেয়া হবে। ১০ এম এলের বেশি কোনো তরল পদার্থ হ্যান্ডব্যাগে বহন করা যাবে না। এদিকে চলতি হজ মৌসুমের বিমানের টিকিট বিক্রি রোববার থেকে শুরু হয়েছে। সকালে কুর্মিটোলার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের হজ প্রস্তুতি বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন সচিব মো. আতাহারুল ইসলাম সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান। তিনি বলেন, টিকিটের সঙ্গে ভিসার একটি সম্পর্ক থাকে। গতকাল ভিসা দেয়া শুরু হওয়ায় বিকাল থেকেই হজের টিকিট বিক্রি শুরু হয়। মন্ত্রণালয়ের ঘোষিত ফ্লাইটসূচি অনুসারে বিমান আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর ভোর ৫টায় ৫৮২ জন যাত্রী নিয়ে প্রথম হজ ফ্লাইট চালাবে, শেষ হবে ২০ অক্টোবর। একইদিন সকাল সাড়ে ৯টায় যাত্রা করবে ন্যাশনাল এয়ার সার্ভিসের (নাস এয়ার) আরেকটি ফ্লাইট। আর ২১ সেপ্টেম্বর বেলা ১টা থেকে হজযাত্রী পরিবহন শুরু করবে সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স। বিমান ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ১ নভেম্বর, শেষ হবে আগামী ২৯ নভেম্বর। নাস এয়ারের ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ৩০ অক্টোবর, শেষ হবে ২৮ নভেম্বর। সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স হজ পরবর্তী ফিরতি ফ্লাইট শুরু করবে ৩০ অক্টোবর এবং শেষ হবে ৩০ নভেম্বর। সৌদি আরব সরকার এবং বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত হজযাত্রী পরিবহন সংক্রান্ত চুক্তি অনুসারে এ বছর কোনো তৃতীয় বিমান সংস্থা বা থার্ড ক্যারিয়ারকে হজযাত্রী পরিবহনের দায়িত্ব দেয়া হয়নি। থার্ড ক্যারিয়ার না থাকায় হজযাত্রী পরিবহনে বিশৃঙ্খলা হতে পারে, এ দাবি করে আসছে হজ এজেন্সিগুলো। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিমান সচিব আতাহারুল বলেন, থার্ড ক্যারিয়ার তারা তখনই নিতেন যখন তাদের পক্ষে যাত্রী বহন করা সম্ভব হতো না। তারা এ বছর প্রস্তুত, কোনো অবস্থাতেই হজযাত্রী পরিবহনে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা নেই। আর বিমান হজযাত্রীদের পরিবহন করলে বিমানের অর্থনৈতিক অবস্থাও মজবুত হবে। দেশের স্বার্থে, বিমানকে বাঁচাতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিমান কর্তৃপক্ষ অবশ্য স্বীকার করেছে, হজ ফ্লাইটের কারণে তাদের নিয়মিত কিছু ফ্লাইট কাটছাঁট করতে হচ্ছে। আতাহারুল ইসলাম বলেন, বিমানে যে রুটগুলোতে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছিল, সেগুলোই শুধু তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এর চেয়ে ভালো বিকল্প আর ছিল না। এক প্রশ্নের জবাবে বিমান সচিব বলেন, তাদের প্রস্তুতি যথেষ্ট ভালো তারপরও যদি কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে, তাই বিকল্প হিসেবে একটি ডিসি ১০ বিমান রাখা হয়েছে। এ বছর মোট ১ লাখ ১২ হাজার ৫৬৮ জন হজ করতে যাওয়ার অনুমোদন পেয়েছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ২ হাজার ৯৬৫ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ১ লাখ ৯ হাজার ৬০৩ জন। এর মধ্যে বিমান পরিবহন করবে ৫৬ হাজার ২৮৪ জন। হজযাত্রী পরিবহনের জন্য বিমান এ বছর ভাড়ায় আনা একটি বোয়িং ৭৪৭-৪০০ এর পাশাপাশি নিজস্ব দুটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ এবং দুটি ডিসি ১০-৩০ মডেলের উড়োজাহাজ ব্যবহার করবে। সংবাদ সম্মেলনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসাদ্দেক আহমেদ জানান, হজযাত্রীদের প্রথমে আশকোনা হজ ক্যাম্পে রিপোর্ট করতে হবে। গমন সংক্রান্ত চেক ইন, ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমসসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা হজ ক্যাম্পেই সম্পন্ন হবে। শিডিউল ফ্লাইটের যাত্রীরা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে রিপোর্ট করবেন এবং সেখানেই তাদের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।

Powered by Blogger.