আবারো ইনজুরির কারণে দল থেকে বাদ পড়লেন তামিম ইকবাল। শনিবার
হাম্বানটোটায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ফিল্ডিং করার সময় ডান
হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলিতে চোট পান তিনি। ফলে সিরিজের বাকি দুই ওয়ানডে ও
টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে পারবেন না তামিম।বাঁ হাতে চোটের কারণে প্রথম
টেস্ট খেলতে পারেননি ওপেনার
তামিম ইকবাল। পরে হাম্বানটোটায় প্রথম ওয়ানডেতে
তামিম ইকবাল। পরে হাম্বানটোটায় প্রথম ওয়ানডেতে
রোববার বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের ২৫ তম জন্মদিন। ১৯৮৭ সালের
২৪ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন দেশ সেরা এই ক্রিকেটার। বাংলাদেশের বগুড়ায় জেলায়
জন্ম নেন সাকিব। তার বাবার নাম মাশরুর রেজা।ছোট
বেলায় ফুটবল খেলার প্রতি আগ্রহ থাকলেও ধীর ধীরে ক্রিকেট খেলা রপ্ত করে
ছেলেটি। তাই বাবা তাকে ভর্তি করিয়ে দেন বিকেএসপিতে। এরপর, অনূর্ধ-১৯ দলের
হয়ে সাকিবের প্রতিভা দেখে ক্রিকেট বিশ্ব।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘আর চোখের পানি ফেলবো না,
এবার প্রতিরোধ গড়ে তুলবো। সারাদেশ অচল করে দেবো। আগামীকাল ঘোষণা আসবে
কর্মসূচির। আগে বলতাম নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই, আজ বলছি পদত্যাগ করতে হবে।
বগুড়ার মাটিঢালায় আজ রবিবার এক শোক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।খালেদা
জিয়া বলেন, ‘জেলখানায় জায়গা নেই
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়
হজ পালনের জন্য এবার সর্বনিম্ন ২ লাখ ৭৮ হাজার ৭শ’ বিয়াল্লিশ টাকা ব্যয়
হবে বলে জানিয়েছে হজ এজেন্সিস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ–হাব। এছাড়া কাবা
শরীফের কাছে অবস্থানের জন্য বেশি বাড়ি ভাড়াসহ দ্বিতীয় প্যাকেজে খরচ
পড়বে ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।
রোববার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে হাব সভাপতি মো ইব্রাহিম বাহার দুটি প্যাকেজসহ বিভিন্ন নিয়ম ঘোষণা করেন।
রোববার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে হাব সভাপতি মো ইব্রাহিম বাহার দুটি প্যাকেজসহ বিভিন্ন নিয়ম ঘোষণা করেন।
সমস্যাটা শুরু হল গত শনিবার থেকে। কোথাও কিছু নেই, ঝকঝকে সকাল। বেলা
সাড়ে বারোটা মতো হবে। এলআইসি-র প্রিমিয়াম জমা দিয়ে ফিরছিলাম। বেশি দূর নয়।
বাড়ি থেকে মিনিট চার-পাঁচের হাঁটা পথ। একটু অন্যমনস্ক ছিলাম। হঠাৎ খুব কাছে
কেউ যেন খিলখিল করে হেসে উঠল। চমকে উঠলাম। মাথা নিচু করে হাঁটছিলাম। চোখ
তুলে দেখি আশপাশে কেউ নেই। শুধু ফুটপাথের বাইরের কিনারা ঘেঁষে যে
ল্যাম্পপোস্টটা ছিল, তার গায়ে হাসি মিলিয়ে যাওয়ার রেশ স্পষ্ট। এইটুকু পড়েই
যদি আমার মস্তিষ্কর সুস্থতা সম্বন্ধে সন্দেহ জাগে, আমি একটুও প্রতিবাদ করব
না। পাতা উল্টে (বা স্ক্রল করে) অন্য কিছু পড়তে শুরু করার জন্য আপনি
ওয়েলকাম। কিন্তু ল্যাম্পপোস্টের হাসিটা নিয়ে আমার একটুও সন্দেহ নেই। হ্যাঁ
মহামান্য পাঠক। ল্যাম্পপোস্টটাই হেসেছিল এবং তার সেই উচ্চকিত খিলখিল এখন
আমার কানে লেগে আছে। সেই ছিল ঘটনার শুরু।
আমি কলেজ স্ট্রিটে একটা মাঝারি গোছের পাঠ্যবই প্রকাশনী সংস্থায় প্রুফ দেখি। দ্বিতীয়বার সেই খিলখিল শুনতে পেয়েছিলাম, আমি যেখানে কাজ করি, সেই ঘরটায়। দেওয়ালে ঝোলানো একটা ক্যালেন্ডার থেকে। ক্যালেন্ডারে একটা সিনারি ছিল। লন্ডনের বিগ বেন। দেওয়ালের পিছনে মালিকের ঘর। তিনি তখন অনুপস্থিত ছিলেন। হাসি শোনার পর আমি মানুষের সহজাত প্রবৃত্তিবশেই উঠে গিয়ে মালিকের ঘরটা দেখে এসেছিলাম। তালা বন্ধ। অস্বাভাবিক কিছু নয়। তিনি তখন পুরী গিয়েছিলেন। মোট কথা, দ্বিতীয়বারের সেই খিলখিল হাসি শুনেছিলাম ক্যালেন্ডার থেকেই, কারণ ক্যালেন্ডারের দেওয়ালের পিছনে তখন কেউ ছিল না। এরপর ঘটনার ফ্রিকোয়েন্সি বাড়তে থাকে, পাঠকগণ। টেবিলের চাপা দেওয়া গেলাস, দেওয়াল ঘড়ি, রাস্তার ধারে কেতরে থাকা চালকবিহীন টানা রিকশা, ডাস্টবিন এবং এবং আরও অনেকে ... ‘অনেকে’ না বলে ‘অনেক কিছু’ বলাই কি ঠিক হত। আসলে যারা এরকম স্পষ্ট উচ্চকিত শব্দে খিলখিল করে হাসতে পারে, তাদের জন্য অপ্রাণিবাচক অভিধা ব্যবহার করতে মন সায় দিচ্ছে না। অপছন্দ হলে, মহামান্য পাঠক, অধমকে ক্ষমা করবেন।যেদিন এই খিলখলে হাসিটাকে আমি নির্ভুলভাবে আইডেন্টিফাই করতে পারলাম, সেই দিনটা ছিল রবিবার। এক ফোটোগ্রাফি – পাগল বন্ধুর সঙ্গে কথা হচ্ছিল। নিজের ভাবনাচিন্তার কথাই শেয়ার করছিলাম। আসলে ফোটোগ্রাফিটাকে আমার ঠিক ক্রিয়েটিভিটি বলতে ইচ্ছে করে না। যন্ত্রসর্বস্ব কোনও কাজই কি ক্রিয়েটিভ হতে পারে? ফোটোশপে কি মোনালিসা আঁকা যায়? যিনি লেখেন, যিনি আঁকেন, তাঁদের প্রয়োজনমাফিক একটু কাগজ, কলম, রং তুলি হলেই চলে। সামান্য আয়োজন। তা ব্যবহার করে তাঁরা লক্ষ-কোটি টাকার বা ক্ষেত্রবিশেষে অমূল্য সৃজনশীল কাজ করেন। কিন্তু যে কাজের উৎকর্ষের অন্যতম শর্তই হল দেড়-দু’লাখি ক্যামেরা, তা কি ক্রিয়েটিভ হতে পারে? তা তো একটা যন্ত্রনির্ভর অনুশীলন এবং অভ্যেসের বহিঃপ্রকাশ, আর কিছুই না। এইটুকুই বলছিলাম। কিন্তু বন্ধু তা মানতে রাজি নয়। অনেকক্ষণ গা জোয়ারির শেষে আমাকে বলল, ‘না হয় বইপাড়ায় একটু যোগসাজস আছে, প্রকাশক, সম্পাদকদের ধরে-করে না হয় দু-চারখানা রদ্দি গল্পই ছাপিয়েছ, তা বলে কি তোমায় সব কিছুই জানতে হবে। যা বোঝো না, তা নিয়ে কথা বলতে এসো না’। বইপাড়ায় যোগাযোগটা কাজের সূত্রেই আছে। ‘যোগাযোগ’ আর ‘যোগসাজস’ এক কথা নয়। দু’টোর তফাৎ বন্ধুকে বোঝানোর ইচ্ছে ছিল। কিন্তু কথা শেষ করেই বন্ধুটি রেগে-মেগে উঠে পাশের ঘরে চলে গেল। তার দারুণ দামি ক্যামেরাটা টেবিলের উপর আকার দিকে তাক করা ছিল। কাকতালীয়ভাবেই ছিল। বন্ধু চলে যেতেই ক্যামেরাটা খিলখিলিয়ে হেসে উঠল। স্পষ্ট দেখলাম লেন্স ক্যাপ না-পরানো ক্যামেরাটার পাতলা মহার্ঘ্য লেন্সের ময়ূরকণ্ঠী রংয়ে হাসির রেশ! জনশূন্য ঘরে এত কাছে আচমকা ওরকমভাবে হাসির আওয়াজ হলে আমি চমকে চেয়ার থেকে পড়েও যেতে পারতাম। নেহাত গত মাসখানেকে ওরকম আচমকা হাসি শোনা আমার অভ্যেসে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল, তাই তেমন কিছু হল না। তবে এবার যেটা হল, সেটা অন্যরকম। আগে হয়নি। বিদ্যুচ্চমকের মতো মনে পড়ে গেল, হাসিটা অনুষ্কার। মানে, আর একটু খুলে বললে দাঁড়ায়, অনুষ্কা ঠিক ওরকমভাবেই হাসত। হুবহু! অবিকল।
এতদিন ভাবনা হয়নি। এবার হল। শুধু ভাবনা নয়, ভয়ও। আমি কি পাগল হয়ে যাচ্ছি? আশ্চর্য ঘটনা দেখুন পাঠকগণ! এতদিন হাসি শুনছি, পাত্তা দিইনি। কিছু মনে হয়নি। যেই চিনতে পারলাম যে, হাসিটা অনুষ্কার, তখনই কেমন একটা ভয় এসে বাসা বাঁধল বুকে। এতদিন পর অনুষ্কার হাসি কেন শুনতে হবে এভাবে! প্রায় আট বছর আগের সেই দিনটা মনে পড়ে গেল স্পষ্টভাবে...
কলেজের ফার্স্ট ইয়ারেই প্রেমে পড়েছিলাম অনুষ্কার। ওরকম ভাল, সোজাসাপটা, হাসিখুশি মেয়ে আমি কখনও দেখিনি। বছরখানেক চলেছিল প্রেমটা। কিন্তু সেকেন্ড ইয়ারের মাঝামাঝি থেকেই আমার কাছে অনুষ্কা কেমন একঘেয়ে লাগতে শুরু করেছিল। ভাল লাগতে শুরু করেছিল সোহিনী বলে অন্য আর একটা মেয়েকে। আসলে অনুষ্কা মেয়েটা বড্ড সাদাসিধে, সিম্পল। সোহিনীর মধ্যে একটা মাল্টি-লেয়ার, রহস্য-রহস্য টাইপ ব্যাপার আছে, ওর আউটফিটও বেশ আধুনিক, বেশ ইয়ে-ইয়ে আর কী। আসলে আমাদের কলেজ জীবনে ‘সেক্সি’ শব্দটা আজকের মতো সহজ-উচ্চার্য ছিল না, তো তাই একটু দ্বিধা রয়ে গেছে শব্দটা নিয়ে। এখনও। সে যা-ই হোক, সোজা কথায়, সোহিনীকে দেখার পর থেকে আমার অনুষ্কাকে কেমন যেন ঘরেলু, পানসে আর বহেনজি টাইপ মনে হতে শুরু করল। খুব ধৈর্যের সঙ্গে সোহিনীকে খেলিয়ে ছিপে তুললাম এবং অনুভব করলাম অনুষ্কাকে আর ঝুলিয়ে রেখে লাভ নেই। একদিন অনুষ্কাকে ডেকে বলেছিলাম সব কথা। বলেছিলাম, ওকে নয়, সোহিনীকে ভালবাসি। বলেছিলাম, ব্রেক আপ চাই। আর মনে মনে তৈরি ছিলাম প্রচণ্ড সিনক্রিয়েট, চেঁচামেচি এবং কান্নাকাটির জন্য। কিন্তু বললে বিশ্বাস করবেন না পাঠকগণ, অনুষ্কার মতো মেয়ে, আমার বাধ্য, অনুগত, আমি-অন্ত-প্রাণ সেই প্রেমিকা সেইসব প্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়াগুলোর কোনওটাই দেখাল না। আমার চোখের দিকে চেয়ে একটুক্ষণ চুপ করে রইল, তারপর খিলখিল করে হেসে উঠেছিল, তারপর একটাও কথা না বলে ধীরে ধীরে চলে গেছিল আমার সামনে থেকে। সেই অপ্রত্যাশিত খিলখিল হাসিটা আমি কোনওদিন। অনুষ্কাকে যতদূর চিনেছিলাম, ওর গভীর কষ্ট পাওয়ার কথা ছিল। তবে সে-সব পেটি ব্যাপার খেয়াল করার মতো মানসিকতা তখন আমার ছিল না।
আজ আমার ফোটোগ্রাফি-পাগল বন্ধুর বাড়িতে ক্যামেরার হাসি শুনে আমার মনে পড়ে গেল অনুষ্কার কথা। শিরশিরে ভয় আর তীব্র একটা অস্বস্তি নিয়ে বন্ধুকে কিছু না বলেই বেরিয়ে এলাম আমি। মেয়েদের খুব সিরিয়াসলি নিইনি কখনও। সোহিনীর সঙ্গে মাসতিনেক ঘোরার পর, সোহিনী ওর বাড়ি থেকে দেখে-দেওয়া এক ঘ্যামা এনআরআই পাত্র আঁকড়ে আমাকে টা-টা করে দিয়েছিল। তখনও কিন্তু অনুষ্কার জন্য মন খারাপ হয়নি। মোটামুটি গ্র্যাজুয়েট হওয়ার পর নানা জায়গায় চেষ্টাচরিত্র করার পর এক বন্ধুর এই পাবলিশিং হাউসটায় কাজ পেয়েছি। সায়েন্স ছিল, তাই সায়েন্সের টিচারদের পাঠানো ম্যাটার কম্পোজ বা এডিট করার কাজটা ঠিকমতো সামলে নিতে পারি। তিনতলা পৈতৃক বাড়ি। আমরা তিনতলায় থাকি। বাড়ির একতলা ও দোতলায় দু’ঘর ভাড়াটে আছে। একরকম চলে যায়। বছরদুয়েক বিয়ে হয়েছে। ঘরোয়া স্ত্রী। আমাকে ভালই রেখেছে। সেদিকে অভিযোগ নেই। তবে পাঠকগণ, আপনাদের কাছে স্বীকার করতে বাধা নেই, এক দূর সম্পর্কের শালীর সঙ্গেও আমার সম্পর্ক আছে। বউ জানে না। প্ল্যান আছে, একটু টাকাপয়সা জমিয়ে নিয়ে একটা ফ্ল্যাট কিনব। শালীকে নিয়ে সেই ফ্ল্যাটে ওঠার ইচ্ছে আছে। বউ প্রবলেম করলে, আউট অব কোর্ট সেপারেশন ব্যবস্থা করতে হবে। শান্তিপূর্ণ ডিভোর্সের আইনকানুন এবং খোরপোষের নিয়মকানুন নিয়ে একটা চটি বই কিনেছি। অবসর সময়ে পড়ি। দিনকাল খারাপ। কখন কী ঝামেলা হয়, কে জানে। একটু পড়াশোনা করে রাখা ভাল। আমার সাদাসিধে ভালমানুষ স্ত্রী সন্দেহ পর্যন্ত করে না। আমি জানি। শিয়োর।
কিন্তু সমস্যা বাড়ল সেই রবিবার দিন থেকে, ফোটোগ্রাফার-বন্ধুর বাড়ি থেকে বেরনোর পর। সেই খিলখিলে হাসি ক্রমশই সহ্যের সীমা ছাড়াচ্ছে। দুপুরে বইয়ের প্রুফ দেখতে দেখতে একটু মিঠে ঝিমুনি আমার অনেকদিনের অভ্যেস। সেটাও মাথায় উঠল। একটু চোখ লেগে এলেও কে যেন হেসে ওঠে। ঠিক কানের পাশে। চমকে ঘুম ভেঙে উঠে পড়ি। কোনও কোনওদিন মাথার যন্ত্রণা শুরু হয় তীব্রভাবে। যখন বাড়ি ফিরি তখন বেশ জ্বর-জ্বর লাগে, চোখ লাল হয়ে থাকে। একদিন স্ত্রীও জিজ্ঞেস করল, ‘কী গো। খুব কাজের চাপ যাচ্ছে বুঝি? শরীর ঠিক আছে তো’? জোর করে একটু হেসে পাশ কাটিয়ে গিয়েছিলাম। গত কয়েকদিন হল রাত্তিরেও শুরু হয়েছে এই কাণ্ড। যতবার ঘুম আসে, হাসির আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায়। কখনও দূর থেকে, কখনও খুব কাছ থেকে। যেন ঘরের মধ্যেই হেসে উঠল কেউ। বেশ কয়েকদিন সহ্য করলাম। কানে বালিশ চেপে ধরে ঘুমনো শুরু করলাম। প্রথম প্রথম বালিশ সরে যেত, হাসির আওয়াজে ঘুম ভেঙে যেত। তারপর একরকম অভ্যেস করে নিলাম। কিন্তু সেই অভ্যেসও আর স্থায়ী হল না। হাসিটা কেমন যেন আমার মাথার মধ্যে ঢুকে পড়ল। আমায় কি পাগল ভাবছেন, পাঠকগণ? বিশ্বাস করুন, এরকমই হল। একদিন আর থাকতে পারলাম না। ঘুমন্ত স্ত্রীকে ঠেলে তুললাম। উদ্ভ্রান্তর মতো বললাম, ‘শুনতে পাচ্ছ? একটা হাসির আওয়াজ? শুনতে পাচ্ছ’?
ঘুমচোখে ভারী অবাক হল আমার স্ত্রী। বলল, ‘হাসি! কই না তো। কে হাসছে? কোথায় হাসছে’?
অধৈর্য হয়ে দু’হাতে ধরে ওকে ঝাঁপিয়ে বললাম, ‘কালা হয়ে গেলে না কি? আমার কান ফেটে যাচ্ছে... ঘুমোতে পারছি না। আর তুমি বলছ কোথায় হাসি’! নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললাম, কী বলছি, কেন বলছি তার কিছুই আর মাথায় রইল না, উন্মাদের মতো বলে চললাম, ‘অপদার্থ কোথাকার। দাঁড়াও না। ডিভোর্স দিয়ে দূর দূর করে যেদিন তাড়িয়ে দেব, সেদিন বুঝবে কত ধানে কত চাল। ননসেন্স একটা। আমি ঘুমোতে পারছি না, আর উনি নাক ডাকাচ্ছেন। গলা ধাক্কা দিয়ে তাড়াতে হয়...’ অনেক দিনের তীব্র মানসিক ক্লান্তি যেন আগ্নেয়গিরির লাভার মতো উঠে এল আমার মধ্য থেকে। কত কী যে বলে চললাম... নিজেরই খেয়াল রইল না।
তবে সেন্স ছিল। একটু হলেও ছিল। যা মুখে আসে বলে যেতে-যেতে লক্ষ্য করলাম, আমার স্ত্রী বেশ মন দিয়ে আমার বিষোদ্গার শুনছে এবং ক্রমশ ওর মুখের ভাব বদলে যাচ্ছে। ওর চিরকালীন শান্ত, সরল, ঠাণ্ডা, তরঙ্গহীন অভিব্যক্তির জায়গায় স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠছে একটা চাপা কৌতুক। মজা পাচ্ছে নাকি ও। স্পর্ধাটা একবার বুঝে দেখুন পাঠকগণ। রাগে আমার পা থেকে মাথা অবধি জ্বলে যাচ্ছে, আর ও মজা পাচ্ছে।
গলা ফাটিয়ে চেঁচিয়ে উঠলাম, ‘হাসছ কেন? আমি শালা জোকার নাকি? মাঝরাত্তিরে ভাঁড়ামি করছি তোমার সঙ্গে’?
‘হাসির কথাই তো বলছিলে...’ আমার স্ত্রীর মুখে তখন হাসি চাপার চিহ্ন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, সে বলল, ‘কী একটা হাসি শুনতে পাচ্ছ বলছিলে, সে তো একটা হাসির কথাই বটে...’ বলেই আর হাসি চেপে রাখতে না পেরে খিলখিল করে হেসে উঠল ও। আর... সঙ্গে সঙ্গে...
আমার হাড় হিম হয়ে গেল। মেরুদণ্ডে প্রবহমান স্পষ্ট এক হিমস্রোতে অনুভব করলাম আমি।
পাঠকগণ! বললে বিশ্বাস করবেন না, একেবারে সেই হাসি। হুবহু। অবিকল। পিছোতে পিছোতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেল আমার। দু’হাতে মাথার চুল খামচে ধরে মাটিতে বসে পড়লাম আমি। ও হেসেই চলেছে, মাথার ভিতরটা ছিঁড়ে যাচ্ছে আমার... সারা শরীরে জ্বলন্ত আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ছে ওর হাসি... ক্রমশ দ্রুততর হচ্ছে আমার হৃৎস্পন্দন... বিশ্বচরাচরের সমস্ত শব্দ চাপা পড়ে যাচ্ছে ওই হাসির আওয়াজে... শুনতে পাচ্ছেন না? পাঠকগণ, শুনতে পাচ্ছেন না আপনারা? সত্যিই শুনতে পাচ্ছেন না?
অলঙ্করণ : সৌরভ মুখোপাধ্যায়
আমি কলেজ স্ট্রিটে একটা মাঝারি গোছের পাঠ্যবই প্রকাশনী সংস্থায় প্রুফ দেখি। দ্বিতীয়বার সেই খিলখিল শুনতে পেয়েছিলাম, আমি যেখানে কাজ করি, সেই ঘরটায়। দেওয়ালে ঝোলানো একটা ক্যালেন্ডার থেকে। ক্যালেন্ডারে একটা সিনারি ছিল। লন্ডনের বিগ বেন। দেওয়ালের পিছনে মালিকের ঘর। তিনি তখন অনুপস্থিত ছিলেন। হাসি শোনার পর আমি মানুষের সহজাত প্রবৃত্তিবশেই উঠে গিয়ে মালিকের ঘরটা দেখে এসেছিলাম। তালা বন্ধ। অস্বাভাবিক কিছু নয়। তিনি তখন পুরী গিয়েছিলেন। মোট কথা, দ্বিতীয়বারের সেই খিলখিল হাসি শুনেছিলাম ক্যালেন্ডার থেকেই, কারণ ক্যালেন্ডারের দেওয়ালের পিছনে তখন কেউ ছিল না। এরপর ঘটনার ফ্রিকোয়েন্সি বাড়তে থাকে, পাঠকগণ। টেবিলের চাপা দেওয়া গেলাস, দেওয়াল ঘড়ি, রাস্তার ধারে কেতরে থাকা চালকবিহীন টানা রিকশা, ডাস্টবিন এবং এবং আরও অনেকে ... ‘অনেকে’ না বলে ‘অনেক কিছু’ বলাই কি ঠিক হত। আসলে যারা এরকম স্পষ্ট উচ্চকিত শব্দে খিলখিল করে হাসতে পারে, তাদের জন্য অপ্রাণিবাচক অভিধা ব্যবহার করতে মন সায় দিচ্ছে না। অপছন্দ হলে, মহামান্য পাঠক, অধমকে ক্ষমা করবেন।যেদিন এই খিলখলে হাসিটাকে আমি নির্ভুলভাবে আইডেন্টিফাই করতে পারলাম, সেই দিনটা ছিল রবিবার। এক ফোটোগ্রাফি – পাগল বন্ধুর সঙ্গে কথা হচ্ছিল। নিজের ভাবনাচিন্তার কথাই শেয়ার করছিলাম। আসলে ফোটোগ্রাফিটাকে আমার ঠিক ক্রিয়েটিভিটি বলতে ইচ্ছে করে না। যন্ত্রসর্বস্ব কোনও কাজই কি ক্রিয়েটিভ হতে পারে? ফোটোশপে কি মোনালিসা আঁকা যায়? যিনি লেখেন, যিনি আঁকেন, তাঁদের প্রয়োজনমাফিক একটু কাগজ, কলম, রং তুলি হলেই চলে। সামান্য আয়োজন। তা ব্যবহার করে তাঁরা লক্ষ-কোটি টাকার বা ক্ষেত্রবিশেষে অমূল্য সৃজনশীল কাজ করেন। কিন্তু যে কাজের উৎকর্ষের অন্যতম শর্তই হল দেড়-দু’লাখি ক্যামেরা, তা কি ক্রিয়েটিভ হতে পারে? তা তো একটা যন্ত্রনির্ভর অনুশীলন এবং অভ্যেসের বহিঃপ্রকাশ, আর কিছুই না। এইটুকুই বলছিলাম। কিন্তু বন্ধু তা মানতে রাজি নয়। অনেকক্ষণ গা জোয়ারির শেষে আমাকে বলল, ‘না হয় বইপাড়ায় একটু যোগসাজস আছে, প্রকাশক, সম্পাদকদের ধরে-করে না হয় দু-চারখানা রদ্দি গল্পই ছাপিয়েছ, তা বলে কি তোমায় সব কিছুই জানতে হবে। যা বোঝো না, তা নিয়ে কথা বলতে এসো না’। বইপাড়ায় যোগাযোগটা কাজের সূত্রেই আছে। ‘যোগাযোগ’ আর ‘যোগসাজস’ এক কথা নয়। দু’টোর তফাৎ বন্ধুকে বোঝানোর ইচ্ছে ছিল। কিন্তু কথা শেষ করেই বন্ধুটি রেগে-মেগে উঠে পাশের ঘরে চলে গেল। তার দারুণ দামি ক্যামেরাটা টেবিলের উপর আকার দিকে তাক করা ছিল। কাকতালীয়ভাবেই ছিল। বন্ধু চলে যেতেই ক্যামেরাটা খিলখিলিয়ে হেসে উঠল। স্পষ্ট দেখলাম লেন্স ক্যাপ না-পরানো ক্যামেরাটার পাতলা মহার্ঘ্য লেন্সের ময়ূরকণ্ঠী রংয়ে হাসির রেশ! জনশূন্য ঘরে এত কাছে আচমকা ওরকমভাবে হাসির আওয়াজ হলে আমি চমকে চেয়ার থেকে পড়েও যেতে পারতাম। নেহাত গত মাসখানেকে ওরকম আচমকা হাসি শোনা আমার অভ্যেসে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল, তাই তেমন কিছু হল না। তবে এবার যেটা হল, সেটা অন্যরকম। আগে হয়নি। বিদ্যুচ্চমকের মতো মনে পড়ে গেল, হাসিটা অনুষ্কার। মানে, আর একটু খুলে বললে দাঁড়ায়, অনুষ্কা ঠিক ওরকমভাবেই হাসত। হুবহু! অবিকল।
এতদিন ভাবনা হয়নি। এবার হল। শুধু ভাবনা নয়, ভয়ও। আমি কি পাগল হয়ে যাচ্ছি? আশ্চর্য ঘটনা দেখুন পাঠকগণ! এতদিন হাসি শুনছি, পাত্তা দিইনি। কিছু মনে হয়নি। যেই চিনতে পারলাম যে, হাসিটা অনুষ্কার, তখনই কেমন একটা ভয় এসে বাসা বাঁধল বুকে। এতদিন পর অনুষ্কার হাসি কেন শুনতে হবে এভাবে! প্রায় আট বছর আগের সেই দিনটা মনে পড়ে গেল স্পষ্টভাবে...
কলেজের ফার্স্ট ইয়ারেই প্রেমে পড়েছিলাম অনুষ্কার। ওরকম ভাল, সোজাসাপটা, হাসিখুশি মেয়ে আমি কখনও দেখিনি। বছরখানেক চলেছিল প্রেমটা। কিন্তু সেকেন্ড ইয়ারের মাঝামাঝি থেকেই আমার কাছে অনুষ্কা কেমন একঘেয়ে লাগতে শুরু করেছিল। ভাল লাগতে শুরু করেছিল সোহিনী বলে অন্য আর একটা মেয়েকে। আসলে অনুষ্কা মেয়েটা বড্ড সাদাসিধে, সিম্পল। সোহিনীর মধ্যে একটা মাল্টি-লেয়ার, রহস্য-রহস্য টাইপ ব্যাপার আছে, ওর আউটফিটও বেশ আধুনিক, বেশ ইয়ে-ইয়ে আর কী। আসলে আমাদের কলেজ জীবনে ‘সেক্সি’ শব্দটা আজকের মতো সহজ-উচ্চার্য ছিল না, তো তাই একটু দ্বিধা রয়ে গেছে শব্দটা নিয়ে। এখনও। সে যা-ই হোক, সোজা কথায়, সোহিনীকে দেখার পর থেকে আমার অনুষ্কাকে কেমন যেন ঘরেলু, পানসে আর বহেনজি টাইপ মনে হতে শুরু করল। খুব ধৈর্যের সঙ্গে সোহিনীকে খেলিয়ে ছিপে তুললাম এবং অনুভব করলাম অনুষ্কাকে আর ঝুলিয়ে রেখে লাভ নেই। একদিন অনুষ্কাকে ডেকে বলেছিলাম সব কথা। বলেছিলাম, ওকে নয়, সোহিনীকে ভালবাসি। বলেছিলাম, ব্রেক আপ চাই। আর মনে মনে তৈরি ছিলাম প্রচণ্ড সিনক্রিয়েট, চেঁচামেচি এবং কান্নাকাটির জন্য। কিন্তু বললে বিশ্বাস করবেন না পাঠকগণ, অনুষ্কার মতো মেয়ে, আমার বাধ্য, অনুগত, আমি-অন্ত-প্রাণ সেই প্রেমিকা সেইসব প্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়াগুলোর কোনওটাই দেখাল না। আমার চোখের দিকে চেয়ে একটুক্ষণ চুপ করে রইল, তারপর খিলখিল করে হেসে উঠেছিল, তারপর একটাও কথা না বলে ধীরে ধীরে চলে গেছিল আমার সামনে থেকে। সেই অপ্রত্যাশিত খিলখিল হাসিটা আমি কোনওদিন। অনুষ্কাকে যতদূর চিনেছিলাম, ওর গভীর কষ্ট পাওয়ার কথা ছিল। তবে সে-সব পেটি ব্যাপার খেয়াল করার মতো মানসিকতা তখন আমার ছিল না।
আজ আমার ফোটোগ্রাফি-পাগল বন্ধুর বাড়িতে ক্যামেরার হাসি শুনে আমার মনে পড়ে গেল অনুষ্কার কথা। শিরশিরে ভয় আর তীব্র একটা অস্বস্তি নিয়ে বন্ধুকে কিছু না বলেই বেরিয়ে এলাম আমি। মেয়েদের খুব সিরিয়াসলি নিইনি কখনও। সোহিনীর সঙ্গে মাসতিনেক ঘোরার পর, সোহিনী ওর বাড়ি থেকে দেখে-দেওয়া এক ঘ্যামা এনআরআই পাত্র আঁকড়ে আমাকে টা-টা করে দিয়েছিল। তখনও কিন্তু অনুষ্কার জন্য মন খারাপ হয়নি। মোটামুটি গ্র্যাজুয়েট হওয়ার পর নানা জায়গায় চেষ্টাচরিত্র করার পর এক বন্ধুর এই পাবলিশিং হাউসটায় কাজ পেয়েছি। সায়েন্স ছিল, তাই সায়েন্সের টিচারদের পাঠানো ম্যাটার কম্পোজ বা এডিট করার কাজটা ঠিকমতো সামলে নিতে পারি। তিনতলা পৈতৃক বাড়ি। আমরা তিনতলায় থাকি। বাড়ির একতলা ও দোতলায় দু’ঘর ভাড়াটে আছে। একরকম চলে যায়। বছরদুয়েক বিয়ে হয়েছে। ঘরোয়া স্ত্রী। আমাকে ভালই রেখেছে। সেদিকে অভিযোগ নেই। তবে পাঠকগণ, আপনাদের কাছে স্বীকার করতে বাধা নেই, এক দূর সম্পর্কের শালীর সঙ্গেও আমার সম্পর্ক আছে। বউ জানে না। প্ল্যান আছে, একটু টাকাপয়সা জমিয়ে নিয়ে একটা ফ্ল্যাট কিনব। শালীকে নিয়ে সেই ফ্ল্যাটে ওঠার ইচ্ছে আছে। বউ প্রবলেম করলে, আউট অব কোর্ট সেপারেশন ব্যবস্থা করতে হবে। শান্তিপূর্ণ ডিভোর্সের আইনকানুন এবং খোরপোষের নিয়মকানুন নিয়ে একটা চটি বই কিনেছি। অবসর সময়ে পড়ি। দিনকাল খারাপ। কখন কী ঝামেলা হয়, কে জানে। একটু পড়াশোনা করে রাখা ভাল। আমার সাদাসিধে ভালমানুষ স্ত্রী সন্দেহ পর্যন্ত করে না। আমি জানি। শিয়োর।
কিন্তু সমস্যা বাড়ল সেই রবিবার দিন থেকে, ফোটোগ্রাফার-বন্ধুর বাড়ি থেকে বেরনোর পর। সেই খিলখিলে হাসি ক্রমশই সহ্যের সীমা ছাড়াচ্ছে। দুপুরে বইয়ের প্রুফ দেখতে দেখতে একটু মিঠে ঝিমুনি আমার অনেকদিনের অভ্যেস। সেটাও মাথায় উঠল। একটু চোখ লেগে এলেও কে যেন হেসে ওঠে। ঠিক কানের পাশে। চমকে ঘুম ভেঙে উঠে পড়ি। কোনও কোনওদিন মাথার যন্ত্রণা শুরু হয় তীব্রভাবে। যখন বাড়ি ফিরি তখন বেশ জ্বর-জ্বর লাগে, চোখ লাল হয়ে থাকে। একদিন স্ত্রীও জিজ্ঞেস করল, ‘কী গো। খুব কাজের চাপ যাচ্ছে বুঝি? শরীর ঠিক আছে তো’? জোর করে একটু হেসে পাশ কাটিয়ে গিয়েছিলাম। গত কয়েকদিন হল রাত্তিরেও শুরু হয়েছে এই কাণ্ড। যতবার ঘুম আসে, হাসির আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায়। কখনও দূর থেকে, কখনও খুব কাছ থেকে। যেন ঘরের মধ্যেই হেসে উঠল কেউ। বেশ কয়েকদিন সহ্য করলাম। কানে বালিশ চেপে ধরে ঘুমনো শুরু করলাম। প্রথম প্রথম বালিশ সরে যেত, হাসির আওয়াজে ঘুম ভেঙে যেত। তারপর একরকম অভ্যেস করে নিলাম। কিন্তু সেই অভ্যেসও আর স্থায়ী হল না। হাসিটা কেমন যেন আমার মাথার মধ্যে ঢুকে পড়ল। আমায় কি পাগল ভাবছেন, পাঠকগণ? বিশ্বাস করুন, এরকমই হল। একদিন আর থাকতে পারলাম না। ঘুমন্ত স্ত্রীকে ঠেলে তুললাম। উদ্ভ্রান্তর মতো বললাম, ‘শুনতে পাচ্ছ? একটা হাসির আওয়াজ? শুনতে পাচ্ছ’?
ঘুমচোখে ভারী অবাক হল আমার স্ত্রী। বলল, ‘হাসি! কই না তো। কে হাসছে? কোথায় হাসছে’?
অধৈর্য হয়ে দু’হাতে ধরে ওকে ঝাঁপিয়ে বললাম, ‘কালা হয়ে গেলে না কি? আমার কান ফেটে যাচ্ছে... ঘুমোতে পারছি না। আর তুমি বলছ কোথায় হাসি’! নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললাম, কী বলছি, কেন বলছি তার কিছুই আর মাথায় রইল না, উন্মাদের মতো বলে চললাম, ‘অপদার্থ কোথাকার। দাঁড়াও না। ডিভোর্স দিয়ে দূর দূর করে যেদিন তাড়িয়ে দেব, সেদিন বুঝবে কত ধানে কত চাল। ননসেন্স একটা। আমি ঘুমোতে পারছি না, আর উনি নাক ডাকাচ্ছেন। গলা ধাক্কা দিয়ে তাড়াতে হয়...’ অনেক দিনের তীব্র মানসিক ক্লান্তি যেন আগ্নেয়গিরির লাভার মতো উঠে এল আমার মধ্য থেকে। কত কী যে বলে চললাম... নিজেরই খেয়াল রইল না।
তবে সেন্স ছিল। একটু হলেও ছিল। যা মুখে আসে বলে যেতে-যেতে লক্ষ্য করলাম, আমার স্ত্রী বেশ মন দিয়ে আমার বিষোদ্গার শুনছে এবং ক্রমশ ওর মুখের ভাব বদলে যাচ্ছে। ওর চিরকালীন শান্ত, সরল, ঠাণ্ডা, তরঙ্গহীন অভিব্যক্তির জায়গায় স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠছে একটা চাপা কৌতুক। মজা পাচ্ছে নাকি ও। স্পর্ধাটা একবার বুঝে দেখুন পাঠকগণ। রাগে আমার পা থেকে মাথা অবধি জ্বলে যাচ্ছে, আর ও মজা পাচ্ছে।
গলা ফাটিয়ে চেঁচিয়ে উঠলাম, ‘হাসছ কেন? আমি শালা জোকার নাকি? মাঝরাত্তিরে ভাঁড়ামি করছি তোমার সঙ্গে’?
‘হাসির কথাই তো বলছিলে...’ আমার স্ত্রীর মুখে তখন হাসি চাপার চিহ্ন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, সে বলল, ‘কী একটা হাসি শুনতে পাচ্ছ বলছিলে, সে তো একটা হাসির কথাই বটে...’ বলেই আর হাসি চেপে রাখতে না পেরে খিলখিল করে হেসে উঠল ও। আর... সঙ্গে সঙ্গে...
আমার হাড় হিম হয়ে গেল। মেরুদণ্ডে প্রবহমান স্পষ্ট এক হিমস্রোতে অনুভব করলাম আমি।
পাঠকগণ! বললে বিশ্বাস করবেন না, একেবারে সেই হাসি। হুবহু। অবিকল। পিছোতে পিছোতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেল আমার। দু’হাতে মাথার চুল খামচে ধরে মাটিতে বসে পড়লাম আমি। ও হেসেই চলেছে, মাথার ভিতরটা ছিঁড়ে যাচ্ছে আমার... সারা শরীরে জ্বলন্ত আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ছে ওর হাসি... ক্রমশ দ্রুততর হচ্ছে আমার হৃৎস্পন্দন... বিশ্বচরাচরের সমস্ত শব্দ চাপা পড়ে যাচ্ছে ওই হাসির আওয়াজে... শুনতে পাচ্ছেন না? পাঠকগণ, শুনতে পাচ্ছেন না আপনারা? সত্যিই শুনতে পাচ্ছেন না?
অলঙ্করণ : সৌরভ মুখোপাধ্যায়
সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশের গুলিতে নিহত মানুষের স্বজনদের সমবেদনা জানাতে
উত্তরাঞ্চল সফরে রয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল রাত ৯টায়
তিনি বগুড়া পৌঁছেন। আজ তিনি বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলার কয়েকটি উপজেলা সফর
করবেন। তিনটি শোক সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন। গতকাল বিকালে গুলশানের কার্যালয়
থেকে বগুড়ার পথে রওনা হন। রাতে পৌঁছান বগুড়া সার্কিট হাউসে। সেখানে রাত
কাটান। যাত্রাপথে নেতাকর্মীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিরোধী নেতাকে স্বাগত জানান।
মহাসড়কের প্রতিটি পয়েন্টে
মিথ্যা অপবাদ নিয়ে ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী মিমকে প্রাণ দিতে হলো। তার অপরাধ সে
সরল ভাবে মন দিয়েছিল তার এক প্রতারক প্রেমিককে। প্রেমের ফাঁদে ফেলে
প্রেমিক নগ্ন ছবি তুলে বিক্রি করেছে অন্যদের মোবাইলে। টাকা না দেয়ায়
ইন্টারনেটে ছেড়ে দিয়েছে নগ্ন ছবি। সারা দুনিয়ার মানুষ জানবে তাদের যৌন
সম্পর্কের কথা। শেষে লজ্জা, ক্ষোভ আর অভিমান আতঙ্কেই রাতে গলায় দড়ি দিয়ে
আত্মহত্যার পথ বেছে
আত্মহত্যা করেছেন লাক্স তারকা রাহা। গতকাল সকাল ৭টায় মোহাম্মদপুরস্থ নিজ
বাসায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। নিজ রুম থেকে তার পিতামাতা
লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় নিচে নামিয়ে আনেন। দুপুরের আগেই তাকে আজিমপুর কবরস্থানে
দাফন করা হয়। লাক্স তারকা হওয়ার পর একজন অভিনেত্রী হিসেবে রাহা বেশি সাড়া
পেয়েছিলেন ‘উচ্চতর শারীরিক বিজ্ঞান’ নামের একটি নাটকে কাজ
দীদার চৌধুরী, শিক্ষক (প্রা.), আইডিয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঢাকা | তারিখ: ২৪-০৩-২০১৩
হাতি আর শেয়ালের গল্প
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, অনেক শুভেচ্ছাসহ আজকের পড়াশোনায় তোমাদের স্বাগত জানাচ্ছি। বাংলা বিষয়ের ওপর আলোচনায় আজ তোমাদের জন্য রয়েছে ‘হাতি আর শেয়ালের গল্প’
হাতি আর শেয়ালের গল্প
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, অনেক শুভেচ্ছাসহ আজকের পড়াশোনায় তোমাদের স্বাগত জানাচ্ছি। বাংলা বিষয়ের ওপর আলোচনায় আজ তোমাদের জন্য রয়েছে ‘হাতি আর শেয়ালের গল্প’
মনোয়ারুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক, ঢাকা স্টেট কলেজ, ঢাকা | তারিখ: ২৪-০৩-২০১৩
ইংরেজি ১ম পত্রের একটি মডেল টেস্ট দেওয়া হলো।PART-A : Seen Comprehension (40 Marks)
# Read the following passage and answer the questions 1-4:
In recent years, there have been many alarming reports that the world’s climate is undergoing a significant change. All these reports provide strong evidence that world temperatures are increasing day by day. This increase in global warming is caused by increased amounts of carbon dioxide around the earth. Most climatologists believe that the greenhouse effect is the likely cause
ইংরেজি ১ম পত্রের একটি মডেল টেস্ট দেওয়া হলো।PART-A : Seen Comprehension (40 Marks)
# Read the following passage and answer the questions 1-4:
In recent years, there have been many alarming reports that the world’s climate is undergoing a significant change. All these reports provide strong evidence that world temperatures are increasing day by day. This increase in global warming is caused by increased amounts of carbon dioxide around the earth. Most climatologists believe that the greenhouse effect is the likely cause
মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, সহকারী শিক্ষক, পিরোজপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় | তারিখ: ২৪-০৩-২০১৩
অধ্যায়-৩
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ তোমাদের জন্য বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের অধ্যায়-৩ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো।
#নিচের উদ্দীপকটি দেখে সংশ্লিষ্ট প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
অধরা ও জান্নাতুল ফেরদৌস ঢকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন ইতিহাস নিয়ে লেখা বিভিন্ন বই খোঁজাখুঁজি করতে লাগলেন। হঠাৎ অধরার চোখে একটি বইয়ে কিছু অপরিচিত বাক্য দেখতে পেলেন। জান্নাতুল ফেরদৌস বললেন, ‘রাখ রাখ, এটাই তো প্রাচীন বাংলা সাহিত্যের নমুনা।’ এই লেখাটাই “কা আ তরুবর পাঞ্চ বি ডাল চঞ্চল চী পইঠা কাল” স্যার আমাদের এক দিন
অধ্যায়-৩
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ তোমাদের জন্য বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের অধ্যায়-৩ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো।
#নিচের উদ্দীপকটি দেখে সংশ্লিষ্ট প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
অধরা ও জান্নাতুল ফেরদৌস ঢকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন ইতিহাস নিয়ে লেখা বিভিন্ন বই খোঁজাখুঁজি করতে লাগলেন। হঠাৎ অধরার চোখে একটি বইয়ে কিছু অপরিচিত বাক্য দেখতে পেলেন। জান্নাতুল ফেরদৌস বললেন, ‘রাখ রাখ, এটাই তো প্রাচীন বাংলা সাহিত্যের নমুনা।’ এই লেখাটাই “কা আ তরুবর পাঞ্চ বি ডাল চঞ্চল চী পইঠা কাল” স্যার আমাদের এক দিন
মো. মনিরুল ইসলাম চৌধুরী, প্রভাষক, রূপনগর মডেল কলেজ, ঢাকা | তারিখ: ২৪-০৩-২০১৩
বহুনির্বাচনী প্রশ্নোত্তর (পদ্য)
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, তোমাদের জন্য বাংলা ১ম পত্রের কবিতা অংশ থেকে ধারাবাহিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনী প্রশ্নোত্তর আলোচনা করা হলো।
বঙ্গভাষা
১. আধুনিক বাংলা কাব্যের জনক কে?
ক. মাইকেল মধুসূদন দত্ত খ. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
গ. জীবনানন্দ দাশ ঘ.
বহুনির্বাচনী প্রশ্নোত্তর (পদ্য)
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, তোমাদের জন্য বাংলা ১ম পত্রের কবিতা অংশ থেকে ধারাবাহিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনী প্রশ্নোত্তর আলোচনা করা হলো।
বঙ্গভাষা
১. আধুনিক বাংলা কাব্যের জনক কে?
ক. মাইকেল মধুসূদন দত্ত খ. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
গ. জীবনানন্দ দাশ ঘ.