শেষ ঠিকানা সাজাতে পারলেন না মনু মিয়া

মনু মিয়া (৬০), শেষ ঠিকানার কারিগর। কারো মৃত্যু সংবাদ পেলেই খুন্তি, কোদাল, ছুরি, করাত, দা, ছেনাসহ সহায়ক সব যন্ত্রপাতি নিয়ে ছুটেন কবরস্থানে। অকৃত্রিম আবেগ আর আন্তরিকতায় কোন ধরনের পারিশ্রমিক না নিয়ে মনু মিয়া এ পর্যন্ত খনন করেছেন ২ হাজার ২৪০টি কবর। জেলার হাওর উপজেলা ইটনার সুদক্ষ গোরখোদক মনু মিয়া বৃহস্পতিবার কোদাল-খুন্তিসহ আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি নিয়ে ছুটে গিয়েছিলেন
ঢাকায়। বুকভরা আশা ছিল, নিজ জেলার সন্তান প্রিয় প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানের কবরটি তিনি নিজ হাতে তৈরি করবেন। মনের গহিনে পরম দরদ আর আবেগ থাকলেও মনু মিয়ার জানা ছিল না রাষ্ট্রীয় নিয়মকানুন। ফলে পূরণ হলো না তার এই স্বপ্ন আর আবদার।
ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের কৃষক পরিবারের সন্তান মনু মিয়া। মুসলিম সম্প্রদায়ের শেষ ঠিকানা, কবর খননের কাজ করে তিনি পার করে দিয়েছেন তার ষাট বছরের জীবনের সুদীর্ঘ ৩৭টি বছর। ব্যতিক্রমী পন্থায় মানুষের প্রতি নিঃস্বার্থ সেবাপরায়ণতার এক অনন্য প্রতীক হয়ে ওঠা মানুষটি বৃহস্পতিবার বাড়ি থেকে রওনা দিয়ে ঢাকায় পৌঁছেন বিকালে। এক আত্মীয়ের বাসায় রাত কাটিয়ে গতকাল শুক্রবার ভোরে জীবনের সবচেয়ে বড় আশা প্রিয় প্রেসিডেন্টের শেষ ঠিকানা সাজানোর আশায় ছুটে যান বনানী কবরস্থানে। কিন্তু সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, প্রেসিডেন্টের কবর যে কেউ তৈরি করতে পারেন না। সরকারি তত্ত্বাবধানে কবরটি খনন করা হবে। এতদূর ছুটে গিয়ে আশাহত হওয়ার বেদনার কথ এ প্রতিনিধিকে জানান।

Powered by Blogger.