মন্ত্রীকে প্রশ্ন, অতঃপর গ্রেফতার

মহেশতলার অগ্নিকাণ্ডের পর কেন মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাস্থলে এলেন না, এই প্রশ্ন তোলায় এক স্থানীয় বাসিন্দাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এই ঘটনায় একদিকে বর্তমান সরকারের পুলিশের অসহিষ্ণুতা প্রকট হয়ে উঠেছে। সেইসঙ্গে বেলপাহাড়ীর জনসভায় মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি অস্বস্তিকর প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়ায় কৃষক পরিবারের ছেলে শিলাদিত্য
 চৌধুরির পরিণতি মনে করিয়ে দিচ্ছে

সেদিন কেন সারের দাম কমছে না, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছিলেন শিলাদিত্য সেই ‘অপরাধে’ প্রকাশ্য সভাতেই স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে মাওবাদী বলে চিহ্নিত করেছিলেন শিলাদিত্যকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ কয়েক মাসের ব্যবধানে প্রায় একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি হল মহেশতলায়। গতকাল সেখানে ১৬ বিঘা বস্তিতে বিধ্বংসী আগুন লেগে ৭০০ ঝুপড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। মাথার ওপর আশ্রয় হারান অসংখ্য মানুষ আজ সেখানে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যান পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এমনিতেই সেখানকার ঘরপোড়া মানুষজন আগুন লাগার পিছনে প্রোমোটিং-রাজের চক্রান্তের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। আগুন লাগার পিছনে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে তাঁরা কাঠগড়ায় তুলেছেন মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্যান দুলাল দাশকে দুলালবাবু সমেত ১১ জনের নামে এফআইআর দায়ের করেছেন বাসিন্দারা। মহেশতলার ১৬ বিঘা বস্তিতে চার মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার আগুন লাগায় কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে দুলালবাবুকে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তাঁর নেতৃত্বেই চক্রান্ত করে আগুন লাগানো হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, উচ্ছেদ করতেই এই ষড়যন্ত্র। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দুলালবাবু, সম্পর্কে যিনি কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের শ্বশুর। দুলালবাবুর দাবি, ১৬ বিঘা বস্তিতে বছরে দু’-তিনবার আগুন লাগে। সব মিলিয়ে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ বস্তিবাসীরা ফিরহাদকে হাতের কাছে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দেন। তাঁদেরই একজন জানতে চান, আমরা সর্বস্ব হারালাম আমাদের যন্ত্রণার সমব্যাথী হতে কেন এলেন না মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অবশ্য ধৃত ব্যক্তি ১৬ বিঘা বস্তির নন, মোল্লার গেটের বাসিন্দা বলে জানিয়ে দাবি করেছে, উস্কানিমূলক কথা বলছিলেন বলেই তাঁকে আটক করা হয়েছে। তবে তা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী কেন গতকালের আগুনকে ছোট ঘটনা বলেছেন, সেই কৈফিয়তও চান স্থানীয় লোকজন। চক্রান্ত করে আগুন লাগানো হয়েছে বলে ফিরহাদের কাছেও ক্ষোভ উগরে দিয়ে তাঁরা এজন্য আঙুল তোলেন দুলালবাবুর দিকে। পুরমন্ত্রী তাঁদের বলেন, মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্বাস করুন। আইন নিজের কাজ করবে। প্রতিশ্রুতি দেন, ক্ষতিগ্রস্তদের সবরকমের সাহায্য করবে সরকার।
তবে গোটা ঘটনাটি শাসক দলকে অস্বস্তিতে ফেলতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আজ মহেশতলার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দীপা দাশমুন্সিও। এদিন তিনি সেখানে পৌঁছে গাড়ি থেকে নামার পরই এলাকার জনাকয়েক তৃণমূল সমর্থক মুখ্যমন্ত্রীর নামে স্লোগান দিতে শুরু করেন। ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে গেলে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদেরও বাধা দেওয়া হয়।

Powered by Blogger.